শীতের মৌসুমে নাকের ভেতরে শুষ্ক হয়ে যায়? জেনে নিন ঘরোয়া প্রতিকার

শরীরের যেকোন স্থানেই সংক্রামক রোগ হতে পারে। সংক্রমণ সৃষ্টিকারী জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রথম সারিতে থাকে নাক। নাকের ভিতরের পাতলা ত্বক স্থূল জীবাণুকে শরীরের ভিতরে প্রবেশে বাধা প্রদান করে। কিন্তু যদি নাকের ভিতরের এই ত্বক শুষ্ক থাকে তাহলে এই কাজটি করা সম্ভব হয় না। বেশিরভাগ সৌভাগ্যবান মানুষেরই নাকের ভেতরে মিউকাস উৎপন্ন হয় যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও বিপদজনক কণাকে ধরে ফেলে যাতে ফুসফুসে প্রবেশ করতে না পারে। নাকের ছিদ্রের ভিতরের ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে চুলকানি, ক্ষত এমনকি রক্তপাত ও হতে পারে এবং এটা খুব অস্বস্তি সৃষ্টি করে।

বিভিন্ন কারণে নাক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার সমস্যাটি হয়ে থাকে যেমন- শীতের শুষ্ক বাতাস যা আদ্রতা শোষণ করে নেয়, কিছু ঔষধ সেবনের ফলে শুষ্কতা বেড়ে যায়, ফ্লু বা ঠান্ডার কারণে অনেক বেশিবার নাক ঝাড়লে। এই অবস্থায় নাকে আঙ্গুল দিয়ে খনন না করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কিছু ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে এই সমস্যাটি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এবার সেগুলোই জানবো আমরা।

১। গরম ভাপ নেয়া

নাকের মিউকাস মেমব্রেনকে আদ্র করতে পারে গরম বাষ্প। নাকের ভিতরের ত্বকের ছিদ্র গুলোকে খুলে দিতে পারে গরম ভাপ। ৩ কাপ পানি ফুটিয়ে একটি বোলে নিন। তারপর আপনার মুখ বোলের উপরে এনে শ্বাস নিন, এভাবে ৫ থেকে ১০ মিনিট করুন। আপনার মাথার উপরে একটি মোটা তোয়ালে দিয়ে নিতে পারেন, এতে গরম ভাপ সরাসরি মুখে ও নাকে লাগবে। এই পদ্ধতিটি ব্যবহারে সতর্ক থাকবেন যাতে ত্বক না পুড়ে যায়।

২। নারিকেল তেল

নারিকেল তেল প্রাকৃতিক, সহজলভ্য ও কার্যকরী একটি উপাদান যার গন্ধটাও ভালো। একটি ছোট ওভেন প্রুফ বাটিতে আধা চামচ নারিকেল তেল নিয়ে ১০ সেকেন্ড গরম করে নিন। এবার কটন বাডের মাথায় এই উষ্ণ নারিকেল তেল লাগিয়ে নাকের ছিদ্রের ভিতরের দেয়ালে লাগান। এভাবে দিনে ৩ বার লাগান এবং ঘুমানোর আগে অবশ্যই লাগাবেন।

৩। স্যালাইন স্প্রে

এক কাপ গরম পানিতে এ টেবিল চামচ লবণ মিশিয়ে ড্রপারের মাধ্যমে নাকে দিন। দিনে কয়েকবার এই স্যালাইন নাকে দিন। আপনি চাইলে স্যালাইন স্প্রে কিনেও নিতে পারেন।

৪। আমন্ড অয়েল ও অ্যালোভেরা জেলের পেস্ট

যদি নাকের শুষ্কতা বেশি হয় এবং রক্ত আসে তাহলে যত্ন নেয়া প্রয়োজন। প্রথমে গরম পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করে নিন। তারপর আধা চামচ আমন্ড তেলের সাথে এক চামচের চার ভাগের এক ভাগ অ্যালোভেরা জেল ভালোভাবে মিশিয়ে নাকের ছিদ্রের ভিতরের ত্বকে লাগান। আমন্ড তেল নাকের ত্বক আদ্র করবে এবং অ্যালোভেরা জেলের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ক্ষত নিরাময় করবে।

৫। পেট্রোলিয়াম জেলি

আঙ্গুলে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নাকের ভিতরের ত্বকে লাগান। এটা ত্বকে আদ্রতা ফিরিয়ে দিবে এবং অল্প পরিমাণ পেট্রোলিয়াম জেলি পাকস্থলীর জন্য ও নিরাপদ।

এই পদ্ধতি গুলো অনুসরণের পাশাপাশি আপনার দেহকে আভ্যন্তরীণ ভাবেও সিক্ত রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ও তরল খাবার এবং গরম চা পান করুন।



মন্তব্য চালু নেই