শিশুর রক্তশূন্যতা

কোনো কারণ ছাড়াই আপনার বাচ্চাটি দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। বাচ্চাটি দূর্বল হয়ে পড়ছে, নানা রোগ জেঁকে বসছে তার শরীরে। তাই চিন্তার কোনো শেষ নেই। ডাক্তারের কাছে গিয়ে জানতে পারলেন শিশুটি রক্তশূন্যতায় ভুগছে। নবজাতক শিশুর ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটতে পারে।

নবজাতকসহ পাঁচ বচরের নিচে শিশুদের রক্তশূন্যতার মূল কারণ হিসেবে ধরা হয় ঠিকমতো বুকের দুধ না খাওয়ানোকে। তাছাড়া সঠিক বয়সে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার না দেয়া হলেও রক্তশূন্যতা হতে পারে। এ ছাড়া নানা ধরনের রোগ ও অপুষ্টির জন্য শিশুদের রক্তশূন্যতা হয়। অথচ সামান্য সচেতন হলে আপনিই পারেন শিশুকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করতে।

জন্মের পর শালদুধসহ প্রথম ছয় মাস শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। মায়ের বুকের দুধে যে পরিমাণ লৌহ ও অন্যান্য খনিজ আছে, তা শিশুর রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে যথেষ্ট। এ সময় তাই অন্য কিছুরই দরকার হয় না। গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে মায়েদের অতিরিক্ত পুষ্টিকর খাবার, বিশেষ করে লৌহসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। কচুশাক, ডাটাশাক, লালশাক, ফুলকপির ডাটা, শিমের বিচি, কলিজা, মাংস, ডিমের কুসুম খাওয়াতে পারেন। ঝোলা গুড় ও খেজুরেও প্রচুর পরিমাণ লৌহ রয়েছে।

কেবল লৌহ বা আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেলেই চলবে না। পরিপাকতন্ত্রে লৌহ শোষণের জন্য দরকার পর্যাপ্ত ভিটামিন সি। তাই এর সঙ্গে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার হলো পেয়ারা, আমলকি, লেবু, টমেটো ইত্যাদি। গর্ভকালীন অবস্থায় ও স্তন্যদানকালে প্রয়োজনে আয়রন বড়িও খাওয়া যায়।

শিশুর বয়স ছয় মাস হওয়ার পর কেবল বুকের দুধে আর পুষ্টিচাহিদা মিটবে না। তাই বুকের দুধের পাশাপাশি তাকে চাল-ডাল মিশ্রিত খিচুড়ি দিতে পারেন। এ সময় সুষম খাদ্য না খেলে অপুষ্টির আশঙ্কা খুব বেশি। শিশুদের রক্তশূন্যতার একটি বড় কারণ হলো কৃমি সংক্রমণ। তাই শিশুকে খাওয়ানোর আগে-পরে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। শিশুর মল পরিষ্কার করার পর, ডায়াপার পরিবর্তনের পর পরিচর্যাকারীর সাবান দিয়ে হাত ধুবেন, শিশু ও পরিচর্যাকারীর স্যান্ডেল ব্যবহার করা, নিয়মিত নখ কেটে দেওয়া ইত্যাদি নিশ্চিত করতে হবে। তিন মাস অন্তর দুই বছরের অধিক বয়সী শিশুকে কৃমিনাশক বড়ি খাওয়ানো উচিৎ।



মন্তব্য চালু নেই