শিরোপা জয়ে রাজশাহীর প্রয়োজন ১৬০ রান

একের পর এক ক্যাচ মিস। রাজশাহীর ফিল্ডাররা যেভাবে ক্যাচ মিসের মহড়া দিতে শুরু করেছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল ভাগ্য বুঝি আজ ঢাকার সঙ্গেই রয়েছে। ঢাকার ব্যাটসম্যানরা বুঝি রানের বন্যা বইয়ে দেবে। রাজশাহীকে ভাসিযে দেবেন বিশাল রানে।

কিন্তু ভাগ্যের এই সহায়তাকেও কেন যেন কাজে লাগাতে পারলো না সাকিব আল হাসানের দল। রাজশাহীর বোলারদের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং আর রাজশাহী অধিনায়ক ড্যারেন স্যামির তুখোড় নেতৃত্ব ঢাকার ব্যাটসম্যানদের অবারিত রান তোলার সুযোগকে দিলো নষ্ট করে। সুতরাং, জমজমাট ফাইনালে যেমনটা হাই স্কোরিং ম্যাচ হওয়ার আশা ছিল সবার, তেমনটি আর হচ্ছে না। কারণ, রাজশাহীর সামনে ১৬০ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিতে সক্ষম হয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটসের ব্যাটসম্যানরা।

শুরুতে টস ভাগ্যটা পক্ষে যায়নি সাকিব আল হাসানের। ড্যারেন স্যামি টস জিতেই ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন। ব্যাট করতে নেমে ঢাকার দুই ওপেনার মেহেদী মারূফ আর ক্যারিবিয়ান এভিন লুইস মিলে সূচনাটা ভালোই এনে দিয়েছিলেন। যদিও দুই ওপেনারই কয়েকবার ভাগ্যগুণে বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে ২৩ রানের জুটি গড়ার পর মেহেদী হাসান মিরাজের হাতেই উইকেট হারিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মেহেদী মারূফ।

এভিন লুইসের সঙ্গে এসে জুটি বাধেন নাসির হোসেন। পুরো টুর্নামেন্টে যেভাবে পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন, ফাইনালের মত মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এসে নিজেকে আরও মেলে ধরতে পারবেন তিনি; কিন্তু ৭ বলে ৫ রান করার পর নিজের অস্থিরতা আর ধরে রাখতে পারলেন না নাসির। আফিফ হোসেনকে খেলতে চেয়েছিলেন ড্যান্সিং ডাউন দ্য উইকেটে এসে; কিন্তু শেষ মুহূর্তে বুঝতে পারলেন শট খেলতে পারবেন না। সুতরাং, বল ডিফেন্স করতে হবে। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বল তার ব্যাট ফাঁকি দিয়ে চলে গেলো উইকেটরক্ষকের হাতে। সঙ্গে সঙ্গে স্ট্যাম্পিং। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিজের আউট হওয়া দেখলেন শুধু নাসির হোসেন।

মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত মাঠে নামলেন চার নম্বরে। ৪ বল খেলে ৫ রান করে ফাঁদে পড়লেন ড্যারেন স্যামির। তার স্লো বলটি ব্যাটে লাগাতে পারেননি। প্যাডে লাগিয়ে হয়ে গেলেন লেগ বিফোর। ৪২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে শুরু করে ঢাকা।

এ সময় মাঠে নেমে ওপেনার এভিন লুইসের সঙ্গে জুটি বাধেন সাঙ্গাকারা। এ দু’জন মিলে গড়েন ৪১ রানের জুটি। ৩১ বলে ৪৫ রান করে এ সময় আউট হয়ে যান লুইস। ফরহাদ রেজার বলে কেসরিক উইলিয়ামসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। তার ইনিংসটি ছিল ৮টি বাউন্ডারিতে সাজানো।

এরপরের ব্যাটসম্যানরা অবশ্য খুব একটা দাঁড়াতে পারেনি রাজশাহীর বোলারদের সামনে। ডোয়াইন ব্র্যাভো ১০ বলে আউট হন ১৩ রান করে। আন্দ্রে রাসেল ১১ বলে করেন ৮ রান। সাকিব আল হাসান ৭ বল খেলে ১২ রান করে আউট হয়ে যান। শেষ দুই ওভারেই যা কিছু রান তুলতে পেরেছিলেন সাঙ্গাকারা আর সানজামুল ইসলাম। শেষ দুই ওভারে আসে ২৭ রান। ১৯তম ওভারে ১২ এবং শেষ ওভারে ১৫ রান। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান সংগ্রহ করতে সক্ষ হয় ঢাকা।

সাঙ্গাকারা আউট হন ৩৩ বলে ৩৬ রান করে। ৫ বলে ১২ রান নিয়ে অপরাজিত থেকে যান সানজামুল। তার সঙ্গে অপর অপরাজিত ব্যাটসম্যান আবু জায়েদ কোনো বলই মোকাবেলা করতে পারেননি। রাজশাহীর হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন ফরহাদ রেজা। ২৮ রান দিয়ে তিনি নেন ৩ উইকেট। ১ উইকেট করে নেন কেসরিক উইলিয়ামস, মেহেদী মিরাজ, আফিফ হোসেন, ড্যারেন স্যামি এবং সামিত প্যাটেল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস : রাজশাহী কিংস
ঢাকা ডায়নামাইটস : ১৫৯/৯, ২০ ওভার (মেহেদী মারূফ ৮, এভিন লুইস ৪৫, নাসির হোসেন ৫, মোসাদ্দেক হোসেন ৫, সাঙ্গাকারা ৩৬, ডোয়াইন ব্র্যাভো ১৩, আন্দ্রে রাসেল ৮, সাকিব আল হাসান ১২, আলাউদ্দিন বাবু ১, সানজামুল ইসলাম ১২, আবু জায়েদ ০, অতিরিক্ত ১৪; ফরহাদ রেজা ৩/২৮, সামিত প্যাটেল ১/৮, ড্যারেন স্যামি ১/২২, মেহেদী মিরাজ ১/২২, কেসরিক উইলিয়ামস ১/৩৬, আফিফ হোসেন ১/২৩।



মন্তব্য চালু নেই