শিগগিরই আসছে ‘বেশি বন্ধুত্বের’ বার্তা
বিজয় দিবসের আগেই বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকারকে ‘আরো বেশি বন্ধুত্বের’ বার্তা দিতে চায় ভারতের মোদি সরকার। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যেই ছিটমহল বিনিময় সম্পর্কিত সংবিধান সংশোধন বিল পাস করাতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদি। সোমবার ভারতের লোকসভায় বিদেশ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির তৈরি করা এ সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করা হবে।
রোববার ভারতের বাংলা পত্রিকা দৈনিক বর্তমানের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বিজেপি বিরোধী দলে থাকার সময় মনমোহনের সরকারকে এই সংবিধান (ওয়ান হানড্রেড নাইনটিনথ) সংশোধন বিল ২০১৩ পাস করতে বাধা দিয়েছিল। কিন্তু এবার ক্ষমতায় এসে সেই মোদিই অবস্থান বদলে ফেলেছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতেই তার এ উদ্যোগ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গত ২৬ নভ্ম্বের সার্ক সম্মেলন উপলক্ষে নেপালে সফরকালে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকেও নরেন্দ্র মোদি স্থল সীমান্ত চুক্তি ও তিস্তা ইস্যুর দ্রুত সমাধানে জোরালো প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান। এর আগের দিন ২৫ নভেম্বর এক বৈঠকে ছিটমহল নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেন বিদেশ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। আগামী শীতকালীন অধিবেশনেই দেশটির ল্যান্ড বর্ডার এগ্রিমেন্ট সংক্রান্ত সংবিধান সংশোন বিল পাস হতে পারে।
তিস্তা চুক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের আপত্তি থাকলেও ছিটমহল বিনিময়ে ইতিমধ্যেই মত পেয়েছে কেন্দ্র। সে অনুযায়ী বিদেশ বিষয়ক সংসদীয় কমিটি রিপোর্ট তৈরি করেছে। আগামীকাল সোমবার কমিটির রিপোর্ট পেশ করবেন কংগ্রেসের এমপি শশী থারুর এবং সিপিএমের মহম্মদ সেলিম। শশী থারুর বিদেশ ব্ষিয়ক কমিটির চেয়ারম্যান। কমিটিতে তৃণমূলের এমপি অধ্যাপক সুগত বসু এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ এমপি সংঘমিতা সদস্য হিসেবে রয়েছেন। গান্ধী পরিবারের দুই সদস্য কমিটিতে থাকলেও সংবিধান সংশোধন বিল সংক্রান্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।
ছিটমহল বিনিময়ের লক্ষ্যে সংবিধানে সংশোধনী আনতে সংসদীয় কমিটি যে রিপোর্ট জমা দিতে চলেছে, সেখানে রাজ্যের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে বলে গেছে বলে দৈনিক বর্তমানের প্রতিবেদন জানা গেছ। রাজ্যকে যাতে অন্ধাকারে রেখে আইন বাস্তবায়ন করা না হয় সে কথা বারবার বলা হয়েছে রিপোর্টে। একই সঙ্গে ছিটমহলের বাসিন্দাদের স্বার্থ যাতে কোনোভাবেই ক্ষুণ্ণ না হয় সে বিষয়টিও দেখার সুপারিশ করা হয়।
সংবিধান অনুযায়ী জমি যেহেতু রাজ্যের বিষয় তাই রাজ্যকে চটিয়ে কোনোভাবেই এই আইন কার্যকর সম্ভব নয়। কারণ আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হলে এর জন্য পরোক্ষভাবে কেন্দ্র দায়ী হয়ে যাবে। তাই ছিটমহলের বাসিন্দাদের পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণের বিষয়টি রাজ্যের মত নিয়েই করা উচিত বলে রিপোর্টে উল্লেখ করেছে কমিটি।
এ বিল পাস হলে দু’দেশের ছিটমহল বিনিময়ের দ্বার উন্মোচন হবে। এতে করে র্যাডক্লিফের মানচিত্রের কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের ছিটমহলবাসী, যারা নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত অবস্থায় বসবাস করছেন তাদের মানবেতর জীবনযাপনের অবসান হবে।
মন্তব্য চালু নেই