শিক্ষিকা হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা সহ্য করা হবে না

নোয়াখালীতে নারী স্কুলশিক্ষকের হত্যাকাণ্ড এবং ঢাকায় অপর এক নারী শিক্ষক অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তাঁর সরকার এ ধরনের ঘটনা আর সহ্য করবে না। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার সকালে গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। প্রাথমিক স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি), জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মুস্তাফিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী একই অনুষ্ঠান থেকে সারা দেশে পাঠ্যবই বিতরণ কর্মসূচিরও উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের এ ধরনের অপরাধের নিন্দা জানানোর ভাষা আমার নেই। নোয়াখালীতে স্কুলশিক্ষকের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামায়াতই দায়ী।’ তিনি এ ধরনের অপরাধ করা থেকে বিরত থাকতে বিএনপি-জামায়াতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আর সহ্য করব না এবং এ ধরনের অপরাধ বন্ধে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নোয়াখালী ও ঢাকায় যারা এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করেছে, তাদের অবশ্যই খুঁজে বের করা হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা কখনোই চাই না কেউ এ ধরনের অপরাধ করুক, আমরা অবশ্যই অপরাধীদেরকে খুঁজে বের করব এবং এ ধরনের জঘন্য অপরাধ বন্ধে অপরাধীদের বিচার করব ইনশাআল্লাহ।’ তিনি বলেন, দেশের জনগণ যে মুহূর্তে শান্তিতে বসবাস করছে, ঠিক সে সময় এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। তিনি বলেন, ‘সোমবার বিএনপি-জামায়াতের হরতাল ডাকার কী যৌক্তিকতা থাকতে পারে, আমার জানা নেই।’ তিনি হরতাল আহ্বানকারী বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশে বলেন, ‘তারা একজন স্কুল শিক্ষককে হত্যা করে এবং অপর একজন স্কুলশিক্ষককে পুড়িয়ে কী পেয়েছে? তারা একজন স্কুলশিক্ষকের জীবন কেড়ে নেওয়া ছাড়া এবং অপর একজনকে আগুনে পোড়ানো ছাড়া আর কিছু তো পায়নি। গত সোমবারের হরতাল থেকে তারা আর কিছুই পায়নি। তাহলে কেন এই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালানো হলো? মানুষ মারা এবং পোড়ানোই যদি তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়, তাহলে এটি হবে খুবই দুঃখজনক। তারা কেন একজন স্কুলশিক্ষকের ওপর হামলা চালাবে?’

পরে প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সালের শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী আমিনা তসলিম করবীর হাতে এক সেট বই তুলে দিয়ে বই বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী সবার জন্য শিক্ষা কর্মসূচি নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই প্রথমবারের মতো মাল্টিমিডিয়া গ্রন্থের বিতরণ ও উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি শেখ হাসিনা সব শিক্ষার্থীর জন্য উপযোগী মিডিয়া ভার্সনে পূর্ণাঙ্গ অডিও ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া গ্রন্থের একটি পূর্ণাঙ্গ টেক্স উদ্বোধন করেন।

শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব কাজী আখতার হোসেন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবদুস সোবহান সিকদার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই