শিক্ষককে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করলেন ম্যাজিস্ট্রেট

ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন কর্তব্যরত প্রধান পর্যবেক্ষক ও শিক্ষা ক্যাডারের সদস্য মোনতাজ উদ্দিন এর সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল ইসলামের পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্ব নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট কোনো কারণ ছাড়াই পরীক্ষার্থীদের সামনে প্রধান প্রত্যবেক্ষককে দায়িত্ব নিয়ে ভর্ৎসনা করেন ও উচ্চস্বরে কথা বলেন।

এই শিক্ষক পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা বিবেচনা করে তাকে কক্ষের বাইরে গিয়ে কথা বলতে বলেন। এতে ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ডেকে পাঠান। পরীক্ষা শেষে উপজেলা কর্মকর্তা কলেজে পুলিশ ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে এসে তার বিরুদ্ধে মামলা ও সামারি ট্রায়াল করে হাতকড়া পরিযে জেল পাঠানোর হুমকি দেন। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষককে ম্যাজিস্ট্রেট এর পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন।

এদিকে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পা ধরিয়ে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় আল্টিমেটাম দিয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতি।

২৩ এপ্রিল পরীক্ষার পূর্বে ওই ম্যাজিস্ট্রেট এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ওই কলেজের অধ্যক্ষকে অপসারণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালেয়ে লিখিত আল্টিমেটাম দিয়েছেন। অবিলম্বে ওই ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তাৎক্ষনিক প্রত্যাহার দাবিতে গত বৃস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা সচিব এবং রবিবার জনপ্রশাসন সচিব ও মাউশির মহাপরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সমিতি।

এর আগে গত শনিবার রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজায় সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সভা ডাকা হয়। সভায় ভান্ডারিয়ার ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজের অপসারণের দাবিতে সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দেয়া সমিতি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত না করা হলে আগামী ২৬ এপ্রিল সব সরকারি কলেজ, টিটার্চ ট্রেনিং কলেজ, আলিয়া মাদ্রাসা, মাউশি, সব শিক্ষা বোর্ড, নয়েম, এনসিটিবিসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সব অফিস ও প্রকল্পে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও মানববন্ধন পালনের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

এরপরও যদি শাস্তি নিশ্চিত না করা হয় তাহলে আগামী ১ মে পাবলিক থেকে শুরু করে সব ধরণের পরীক্ষা বর্জনের মতো কঠোর কর্মসূচির ডাক দেয়া হবে বলে সংগঠনের একাধিক শিক্ষক নেতারা জানান।

এর আগে গত রোববার পরীক্ষা শেষে দুপুর দেড়টার দিকে ভাণ্ডারিয়া সরকারি কলেজের সম্মুখ সড়কে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ভাণ্ডারিয়া সরকারি কলেজ এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনরত ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মোনতাজ উদ্দিনকে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ভূমি মো. আশ্রাফুল ইসলাম লাঞ্ছিত ও পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানানো হয়।



মন্তব্য চালু নেই