শহুরে শিশুর মানসিক বিকাশে বাবা-মায়ের করণীয়

মৌলিক অধিকার রক্ষা আর সামাজিক ব্যবস্থায় বড়রা নিজেদের অবস্থান বেশ পাকাপোক্ত করছে। অপরদিকে শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় সকল চাওয়া-পাওয়া থেকে। অপরিকল্পিত রাজধানীর অব্যবস্থাপনার মাঝে বেড়ে ‍উঠছে তারা। গ্রামের তুলনায় শহরের শিশুরা বেশি বদ্ধ জীবন যাপন করে থাকে। মুক্ত আকাশের নীচে ছড়ানো আলো বাতাস থেকে এসব শিশুদেরকে সবসময় আলাদা রাখা হয়। শিশুকে ভালো রাখার চেষ্টায় ঘরের চার দেয়ালকে বাবা-মা উপযুক্ত ভেবে মেনে নেয়। শিশুর সকল প্রাপ্তির গণ্ডি হয়ে ওঠে ঘরের চার দেয়াল। তবে এর মাঝেও শিশু বই-পুস্তকের জ্ঞান নিয়ে বেড়ে উঠছে। কিন্তু বই-পুস্তকের বাইরেও জীবনের অসংখ্য অভিজ্ঞতা আর সামাজিক প্রাপ্তি তাদের অধরাই থেকে যায়।

শিশুর সর্বোত্তম অবিভাবক তার বাবা-মা। বাবা-মা’কে শিশুর শারিরীক প্রবৃদ্ধির কথা চিন্তা না করে তার মানসিক দিকটাকেও প্রাধান্য দিতে হয়। শিশুর শারিরীক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক বৃদ্ধি প্রয়োজন। শহুরে শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য প্রত্যেক বাবা-মা’কে তাদের সন্তানদের কথা ভেবে অন্তত সপ্তাহে একদিন কোনো খোলা মাঠে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া, আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় ও লেকের পাড়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা।

শুধু তাই নয়, পারলে তাদের নিয়ে ছুটোছুটি করে যেখানে মাঠ আছে সেখানে বাচ্ছাদের সঙ্গে নিজেরা একটু খেলতে হবে। শিশুকে যে বাসায় বাচ্ছা আছে তাদের সাথে লুটুপুটু খেলতে দিতে হবে।

এছাড়াও তাদের খেলার ব্যবস্থা করার জন্য প্রত্যেক ফ্লাটে যারা অ্যাপার্টমেন্ট মালিক তাদের কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেখানে একটা ইনডোর খেলাধুলার জন্য জায়গা থাকবে। সেই ফ্লাটটির মালিক সবাই হবেন। সেখানে টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টনসহ সব খেলার ব্যবস্থা থাকবে।

প্রত্যেক ভবনের মধ্যে বাধ্যতামুলক একটি খেলার জায়গা রাখতে হবে রাজউক যদি বিল্ডিং নীতিমালার মধ্যে বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। ফাঁকা ফ্লাটের সেসব জায়গায় লাইব্রেরী থাকবে। যেখানে শিশুরা সুন্দর সুন্দর বই পড়বে। খেলার ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতি মাসে অন্তত ছয় মাসে একটি করে প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে তারা জয় পরাজয়ের ধারণা পাবে। তাদের মননশীলতার বিকাশগুলো আমরা শানিত করতে পারবো। বাচ্চাদের উপযোগী এমন পরিবেশ দিতে পারলেই সে ঘাটতি কিছুটা হলেও পূরণ হবে। মানসিক বৃদ্ধির দূর্যোগ থেকে কিছুটা মোকাবেলা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন অনেকে।



মন্তব্য চালু নেই