শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ
১৬ই ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। দেশের সূর্য সন্তানদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানাতে জাতি অপেক্ষা করছে বিজয়ের শুভলগ্নে। তাই বিজয়ের এই ৪৪ বছরে জাতির শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হতে পুরোপুরি প্রস্তুত সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
জাতির গৌরব আর অহংকারের এ-দিনটিতে সৌধ প্রাঙ্গণে ঢল নামবে লাখো মানুষের। তাদের হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ফুলে ফুলে ভরে যাবে শহীদ বেদি।
গণপূর্ত বিভাগের কর্মীদের টানা ১৫ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে এক নতুন রুপ ধারন করেছে সৌধ প্রাঙ্গণ। নানা রঙ্গের বাহারী ফুলের চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে স্মৃতিসৌধের সবুজ চত্বর। চত্বরের সিড়ি ও নানা স্থাপনায় পড়েছে রং-তুলির আচড়।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমান আওয়ার নিউজকে জানান, দিনটিকে সামনে রেখে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা হয়েছে। এছাড়া ১১ই ডিসেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর প্রথম প্রহর পর্যন্ত জাতীয় স্মৃতিসৌধে সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, এই দিনটির প্রথম প্রহরেই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী শহীদ বেধীতে ফুল দিয়ে বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। তাই সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে যাবতীয় গার্ড অব অনার এর মহড়া শেষ করা হয়েছে।
এছাড়া অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সৌধ এলাকায় নিরাপত্তা চৌকি, পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ বদরুল আলম জানান, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও এর আশপাশের এলাকা জুড়ে ৩ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলা হয়েছে।
এছাড়া সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারী বাড়নোসহ নিরাপত্তার স্বার্থে সৌধ প্রাঙ্গনের বিভিন্ন পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে বলেও পুলিশের এই কর্মকর্তা।
১৬ ডিসেম্বর সকালে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেত্রী জাতীর বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন জানানোর পর জনসাধারনের জন্য খুলে দেওয়া হবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
আর তাই ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রস্তুত।
বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ ও কুটনীতিকসহ বিভিন্ন স্তরের অতিথিদের স্বাগত জানাতে ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।
পুরো জাতীয় স্মৃতিসৌধটিকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। শেষ হয়েছে ধোয়া-মোছার কাজ। সৌন্দর্যবর্ধনে আকিয়েরা রং তুলির আঁচড়ে রাঙ্গিয়ে তুলছেন বিভিন্ন স্থাপনাসমূহ। পাশাপাশি সাজানো হয়েছে নানা জাতের ফল-ফুল সহ বাহারি গাছগুলোকে। ফোয়ারায় তোলা হয়েছে নতুন পানি।
তিনবাহিনীর চৌকস সদস্যদের কুচকাওয়াজ হবে। তার জন্য প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে। সকল সাউন্ড সিষ্টেম পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারীসহ টহল ব্যবস্থা পাশাপাশি সড়কের দু’পাশে অবস্থিত উঁচু ভবনগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, চলছে শেষ মূহূর্তের তদারকি।
আর কয়েক ঘন্টা পরেই মাঈনুল হাসানের স্মৃতিসৌধ ফুলে ফুলের ভরে উঠবে, সকলে বিনম্র চিত্তে স্মরণ করবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। সাভার স্মৃতিসৌধের বর্ণিল আয়োজনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা যেন সারাটা বছর জাতি লালন করে সেটাই সকলের প্রত্যাশা।
মন্তব্য চালু নেই