শরীরের ব্যথা নিয়ে প্রচলিত ৭টি মিথ যা আসলে সত্যি নয়

বেশিরভাগ মানুষই জীবনে কোন না কোন সময় কম বা তীব্র ব্যথার শিকার হয়ে থাকেন। শরীরের ব্যথা অপ্রীতিকর একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। যার ফলে একজন মানুষ প্রচন্ড ব্যথা ও অস্বস্তি অনুভব করেন। যখন কেউ শরীরের ব্যথায় ভোগেন তখন তার কাছে প্রাত্যহিক সামান্য কাজ করাও অনেক বেশি কঠিন হয়ে পরে। এমনকি উঠা বসা করতেও সমস্যা হয়।

বিভিন্ন কারণে শরীরে ব্যথা হতে পারে যেমন – আঘাত, ইনফেকশন, হাড়ের ঘনত্ব কম, হঠাৎ অনেক বেশি ব্যায়াম করা, সাধারণ দুর্বলতা ইত্যাদি। সাধারণত আক্রান্ত স্থানের পেশী বা টেন্ডন উদ্দীপ্ত বা সংক্রমিত হলে এবং ঐ স্থানের রক্ত সংবহন কমে গেলে ব্যথার সৃষ্টি হয়। চলুন জেনে নিই শরীরের ব্যথা নিয়ে প্রচলিত কিছু কথা যা আসলে বিশ্বাস করা ঠিক নয়।

১। আবহাওয়ার সাথে ব্যথার সম্পর্ক আছে

বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন যে, বর্ষায় ও শীতের মৌসুমে শরীরের ব্যথা বৃদ্ধি পায়। কোন গবেষণায় এই তথ্যকে সমর্থন করা হয়নি এবং গ্রীষ্মকালে শরীরের ব্যথা কমে যায়না।

২। সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকলে ব্যথা ভালো হয়

বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের ব্যথায় আক্রান্ত মানুষ হালকা ব্যায়াম ও নড়াচড়া করলে পেশীকে ঢিলা হতে সাহায্য করে এবং শরীরের ব্যথা কমায়।

৩। এটি আসলে মনের ব্যাপার

অনেকেই পরামর্শ দিয়ে থাকেন যে, ইচ্ছা শক্তির দ্বারা ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মানসিক ভাবে শক্ত হলেই ব্যথা চলে যায়। কিন্তু শরীরের ব্যথা একটি শারীরিক সমস্যা বিধায় এর চিকিৎসা প্রয়োজন।

৪। ব্যথানাশক ঔষধেই সমাধান

যাদের শরীরের ব্যথা দীর্ঘমেয়াদী হয় তারা ক্রমশ পেইনকিলারের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকেন। পেইনকিলার অস্থায়ীভাবে ব্যথা কমতে সাহায্য করে। ব্যথা কমানোর অন্যান্য পদ্ধতিগুলো যেমন- ফিজিওথেরাপি, আকুপাংচার, ম্যাসাজ ইত্যাদির বিষয়েও বিবেচনা করতে হবে।

৫। বয়স্ক মানুষের জন্য ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক

জনপ্রিয় এই বিশ্বাসটির বিপক্ষের সত্যি কথাটি হল, বয়স বৃদ্ধি পেলেই শরীরে ব্যথা হবে, এটি ঠিক নয়। তাই বয়স্ক ব্যক্তি ব্যথায় আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। কারণ এটি মারাত্মক কোন স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

৬। ছোটখাট ব্যথার চিকিৎসার প্রয়োজন নেই

যখন কোন মানুষ ছোটখাট শরীর ব্যথার কথা বলে তখন তাকে বলা হয় যে, চিন্তা করার কিছু নেই। যেকোন ধরণের শারীরিক ব্যথাই যদি বার বার হতে থাকে তাহলে প্রাথমিক অবস্থায় চেক করা উচিৎ। না হলে সেটা বড় ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

৭। পেইন কিলার আশক্তি সৃষ্টি করে

সাধারণত চিকিৎসকের নির্দেশিত অল্প পরিমাণের পেইন কিলার সেবন করা নিরাপদ। পেইন কিলারের মাত্রা সম্পর্কে চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করে জেনে নিন।

যদি সময় মত ব্যথা নিরাময়ের চেষ্টা করা না হয় তাহলে তা থেকে যায় এবং কখোনোই সঠিকভাবে ভালো হয়না। এর ফলে বড় ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হয় এবং তা চলাফেরার উপরও প্রভাব ফেলে। তাই শরীরের ব্যথাকে অবহেলা না করে এর সঠিক কারণ সম্পর্কে জেনে চিকিৎসা নেয়া উচিৎ।



মন্তব্য চালু নেই