শতভাগ পেনশন তুলে নেয়া চাকরিজীবীরাও পাচ্ছেন বৈশাখী ভাতা

এবারই প্রথম বৈশাখী ভাতার আওতায় আসছেন পেনশনের শতভাগ টাকা তুলে নেয়া সরকারি চাকরিজীবীরা (শতভাগ সমর্পণকারী পেনশনার্স)। দু-একদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করবে অর্থ বিভাগ। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, শতভাগ সমর্পণকারী পেনশনার্সের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৯৫ হাজার। ফলে বছরে অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। আগামীতে এ সংখ্যা আর বাড়বে না বরং কমবে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা দ্বিগুণ ও পেনশনভোগীদের বিভিন্ন প্রকার ভাতা পুনর্নির্ধারণ করা হলেও শতভাগ পেনশনভোগীরা এ সুবিধার বাইরে ছিলেন। চলতি বছর থেকে অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পেনশনের পুরো টাকা একবারে উত্তোলন করতে পারবেন না। তবে অর্ধেক তুলতে পারবেন। বাকি অর্ধেক নিতে হবে মাসে মাসে।

সূত্র আরও জানায়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাশাপাশি বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্যও বৈশাখী বোনাস বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছে সরকার। ফলে অসাম্প্রদায়িক বৈশাখী উৎসবের ‘নববর্ষ ভাতা’ সর্বজনীন রূপ পাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে অষ্টম বেতন কাঠামোয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘নববর্ষ ভাতা’ চালু করা হয়। যার পরিমাণ মূল বেতনের ২০ শতাংশ, যা শুধু সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

তবে বৈশাখী বোনাসকে সর্বজনীন করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এ বিষয়ে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী জানান, অষ্টম বেতন কাঠামোতে বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানেও বৈশাখী বোনাস দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। কারণ, পহেলা বৈশাখ শুধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নয়, এটি সর্বজনীন। এতদিন বছরে দুটি বোনাস (ধর্মীয় উৎসবে) দেয়া হলেও নতুন বোনাসকে অসাম্প্রদায়িক বোনাস হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। তাই পহেলা বৈশাখ সবার জন্য আনন্দময় করতে সবক্ষেত্রে এ বোনাস চালুর বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।

সূত্র জানায়, সরকারি চাকরিজীবীরা পেনশনে যাওয়ার পর প্রতি মাসে পেনশনের টাকা পান। তাদের অবর্তমানে উত্তরসূরিরা তা পান। তবে ১৯৮০ সাল থেকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কেউ ইচ্ছা করলে পেনশনের পুরো টাকা একবারে তুলতে পারেন। অনেক চাকরিজীবীই পরিবারের নানা প্রয়োজন মেটাতে পেনশনের পুরো টাকা একবারে তুলে নেন।

পেনশনধারীদের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের স্বার্থে বিধানটি চালু করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন বিধান কার্যকর হবে। অর্থাৎ এ বছরের ৩০ জুন বা তারপর যাদের অবসরোত্তর ছুটি শেষ হবে, তারাই নতুন নিয়মের আওতায় আসবেন। তবে পেনশনার বা পারিবারিক পেনশনাররা মাসিক পেনশনের ওপর ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট পাবেন। এটাও কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই থেকে।

বর্তমানে কেউ চাইলে পুরো টাকা তুলে নিয়ে যেতে পারেন, আবার মাসে মাসেও নিতে পারেন। অর্থাৎ দুটি বিকল্পই খোলা ছিল। নতুন বিধানের মাধ্যমে পেনশনের ৫০ শতাংশ মাসিক ভিত্তিতে নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন বেতন কমিশনের প্রতিবেদনে সরকারি কর্মচারীদের শতভাগ পেনশনের টাকা তুলে নেয়ার পরিবর্তে ৫০ শতাংশেরই সুপারিশ করা হয়েছিল।



মন্তব্য চালু নেই