লো-কার্ব ডায়েটের ৬ টি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে সতর্ক হোন
যে ডায়েটে উচ্চমাত্রার ফ্যাট (৬০-৯০%), পর্যাপ্ত প্রোটিন (৬-৩০%) এবং খুবই কম কার্বোহাইড্রেট (৪-১০%) থাকে তাকে কিটোজেনিক ডায়েট বা লো-কার্বডায়েট বলে। প্রধানত মৃগীরোগে আক্রান্ত শিশুদের এ ধরণের ডায়েটের পরামর্শ দেয়া হয়। যারা ওজন কমাতে চান তাদের কাছে লো-কার্ব ডায়েট বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে গত কয়েক বছরে। কিটোজেনিক ডায়েটের উপকারিতা অবশ্যই আছে বিশেষ করে মৃগীরোগীদের জন্য। তবে পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে লো-কার্ব ডায়েটের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়। লো-কার্ব ডায়েটের ৬ টি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে জানবো এই ফিচারে।
১। গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল জটিলতা
কিটোজেনিক ডায়েটের সবচেয়ে সাধারণ সাইড ইফেক্ট হচ্ছে অন্ত্রের জটিলতা দেখা দেয়া। কিটোজেনিক ডায়েট করেছেন এমন ১২-৫০% মানুষই পাকস্থলীর বিভিন্ন রকম জটিলতার যেমন- ডায়রিয়া, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেটে ব্যথার অভিযোগ করে থাকেন।
২। কিডনি পাথর
বিশ্বাস করুন আর নাই করুন লো-কার্বোহাইড্রেট ডায়েটের ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, কিটোজেনিক ডায়েট অনুসরণ করছে এমন ২০ জনের মধ্যে ১ জন শিশু কিডনি পাথরের সমস্যায় ভোগে। যারা ওজন কমানোর জন্য এই ধরণের ডায়েট অনুসরণ করে তাদের ও একই ধরণের ঝুঁকি থাকে।
৩। যকৃতের অকার্যকারিতা
কিটোজেনিক বা লো-কার্ব ডায়েটের ফলে শুধু কিডনি পাথরের সমস্যাই তৈরি হয়না বরং দীর্ঘমেয়াদে এটি নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ ও সৃষ্টি করতে পারে। এর কারণ ফ্যাট ও প্রোটিনকে ভেঙ্গে গ্লুকোজ উৎপাদনের জন্য যকৃতের উপর প্রচুর চাপ পড়ে এবং এর ফলে উচ্চমাত্রার অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হয়।
৪। ইলেক্ট্রোলাইটের ব্যঘাত ঘটে
লো-কার্ব ডায়েট ইলেক্ট্রোলাইটের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যার ফলে পেশীর ব্যথা ও ক্লান্তিতে ভুগতে দেখা যায়। যদি আপনার লো-কার্ব ডায়েট অনুসরণ করার পরিকল্পনা থাকে তাহলে অভিজ্ঞ ডায়েটেশিয়ান বা নিউট্রিশনিস্ট এর তত্ত্বাবধানে এই ডায়েট অনুসরণ করুন, যাতে এই ধরণের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে যেতে পারেন।
৫। ভিটামিন ও পুষ্টির ঘাটতি
যারা লো-কার্ব ডায়েট মেনে চলেন তাদের শরীরে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যামাইনো এসিডের মাত্রা কম থাকে। এছাড়াও ভিটামিন বি ১২ ও ভিটামিন ডি এর ঘাটতিতেও ভুগতে দেখা যায় তাদের। মোম্বাই এর পিডি হিন্দুজা হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নিউট্রিশন থেরাপিস্ট ডা. পূর্ণিমা এস প্রভু বলেন, তার কাছে আসা রোগীদের মধ্যে যারা কিটোজেনিক ডায়েট ফলো করেন তাদের মধ্যে ২-৫% এরই ভিটামিনের ঘাটতিতে ভুগতে দেখা যায়।
৬। কার্ডিওমায়োপ্যাথি
কিটোজেনিক ডায়েটের কারণে কার্ডিওমায়োপ্যাথি হওয়া খুবই বিরল হলেও সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হয় একে। এই রোগে হৃদপিণ্ডের পেশী আক্রান্ত হয় এবং সারা শরীরে রক্ত পাম্প করার ক্ষমতার উপর ও প্রভাব পড়ে। দীর্ঘ দিন কিটোজেনিক ডায়েট ফলো করলে এই ধরণের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।
মন্তব্য চালু নেই