লালমনিরহাট-বুড়িমারী স্থলবন্দর রুটে ৪৮ পয়েন্টে ৩৮৪ আনসার নিয়োগ, বাড়তি যাত্রীর চাপ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
লালমনিরহাটের তিস্তা রেলওয়ে সেতুর পশ্চিম হতে বুড়িমারী স্থলবন্দর রেলওয়ে রুটে ৭৮ কিলোমিটার পথের ৪৮ পয়েন্টে ৩৮৪ জন আনসার ভিডিপি সদস্যকে নিয়োগ করা হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করার কারণে এ রুটের চার জোড়া ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
জামায়াত-বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ ও হরতালের তেমন কোনো প্রভাব না পড়লেও আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তিন গুন ট্রেনযাত্রী বেড়েছে। এ রুটে কোন ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা না হলেও কাঙ্খিত সময়ে চলাচল করতে কিছুটা বিলম্ব লক্ষ্য করা গেছে। তবে ট্রেনের গতি কমার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে সিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। এতে যাত্রীদের কিছুটা দুর্ভোগ বাড়লেও স্বার্বিক নিরাপত্তার পরিস্থিতির কারণে পাইলট ট্রেন চালানোর কারণে এমনটা হচ্ছে বলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি। ট্রেনের টিকেট বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছে ওই সূত্রটি। ফলে আয়ও বেড়ে ডিসেম্বর মাসের তুলনায় গত জানুয়ারি মাসে। ফেব্রুয়ারি মাসেও আয় বেশি হতে পারে বলে সূত্রটি আভাস দিয়েছে।
লালমনিরহাট জিআরপি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, লালমনিরহাট তিস্তা রেলওয়ে সেতুর পশ্চিম হতে বুড়িমারী স্থলবন্দর রেলওয়ে লাইনের ৪৮ পয়েন্টে তিন শিফটে ৩৮৪ জন আনসার-ভিডিপি নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতি পয়েন্টে ৮জন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা আফজাল আলী, আদিতমারী-কালীগঞ্জ কর্মকর্তা এন্তাজুল হক, হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম হুকুম আলী আনসার-ভিডিপি সদস্যদের দায়িত্ব মনিটরিং করছেন। এছাড়াও চলাচলকারী ট্রেনগুলোর অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা যাত্রী নিরাপত্তা ও ট্রেনের নিরাপত্তার জন্য ২জন করে পুলিশ সদস্য রয়েছে। টলন্ত ট্রেনেও সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
বুড়িমারী স্থলবন্দর রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার নজরুল ইসলাম জানান, গত ডিসেম্বর মাসে বুড়িমারী স্থলবন্দর রেলওয়ে স্টেশন হতে ৯শ ৩৫ জন যাত্রী দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দ্যেশে টিকেট সংগ্রহ করেছে। এসব টিকেট ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ গেল জানুয়ারি মাসে এই স্টেশন হতে ২ হাজার ৭শ জন যাত্রী দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দ্যেশে টিকেট সংগ্রহ করেছে। এসব টিকেট ২ লাখ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। চলতি মাসের গত ১০ দিনে(১লা ফেব্রুয়ারি হতে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) ৮৩৫জন যাত্রী টিকেট সংহগ্র করেছে। এসব টিকেট ১লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। তিনি আরো জানান, সান্তাহারগামী টিকেট সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। এবং এসব যাত্রী বুড়িমারী স্থলবন্দর হতে ঢাকাগামী সরাসরি ট্রেনেরও দাবি করেছেন। এ রুটে চলাচলকারী এক জোড়া বেসরকারি ট্রেনের টিকেট বিক্রি ব্যতীত এই হিসাব পাওয়া গেছে। বেসরকারি ট্রেনের টিকেট বিক্রিতা লালমনিরহাট স্টেশন কমিশন এজেন্ট জিন্নাতুল ইসলাম যাত্রী বৃদ্ধির সত্যতা স্বীকার করলেও প্রতিমাসের হিসাবের তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে দিতে পারেননি।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত লালমনিরহাট বিভাগীয় ম্যানেজার ও ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘নিরাপত্তার জন্য পাইলট ট্রেন চালানোর কারণে রাতে ট্রেন চলাচলে কিছুটা বিঘœ ঘটলেও এ রুটে এক জোড়া করতোয়া এক্সপ্রেস, দুই জোড়া কমিউটার ট্রেন ও বেসরকারিভাবে এক জোড়া কমিউটার ট্রেন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। এসব ট্রেনে প্রচুর যাত্রী নির্বিঘেœই গন্তেব্যে চলাচল করছে। টানা হরতাল-অবরোধের মধ্যেও লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের সার্বিক আয় গত ডিসেম্বর মাসের তুলনায় জানুয়ারি মাসে ১ কোটি টাকার বেশি হয়েছে।’
মন্তব্য চালু নেই