লামায় অবৈধভাবে কাঠ ও লাকড়ি পাচার চলছে, বন উজাড় পরিবেশ হুমকির মুখে

বান্দরবান: লামায় গাছ ও লাকড়ী পাচারের মহোৎসব চলছে। সড়ক ও নদী পথে প্রতিদিন হাজার হাজার ফুট গাছ ও লক্ষ লক্ষ মন লাকড়ী পাচার এবং হাজার মন লাকড়ী তামাক চুল্লিতে লাকড়ী পুড়ানো হচ্ছে।

এক শ্রেণীর অসাধু গাছ ও লাকড়ী ব্যবসায়ীরা প্রশাসন এবং সরকার দলীয় নেতাদের ম্যানেজ করে প্রাকৃতিক বনজ সম্পদ উজাড় করে ফেলেছে। বনের গাছ রক্ষার্থে উপজেলা প্রশাসন ও লামা বন বিভাগে একজন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) থাকলেও তারা কেন যেন প্রাকৃতিক বন রক্ষার্থে কোন কাজ করছেন না ? তারা শুধু নিধিরাম সরকারের ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে করে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কোন রকম তদারকি না থাকায় তড়িৎ গতিতে বন মন্ত্রনালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী।

প্রাকৃতিক বনে বসবাসকারী আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতারা সিনপাশ হেডম্যান, রেংপং স্রো, থুই ছাহ্লা, কাইম্পা স্রো, থোয়াইনু মার্মা, অভিযোগ করে বলেন, আমাদের বসবাসের চার পাশে পাহাড়ের প্রাকৃতিক বন এলাকার ও বাহিরের এক শ্রেণীর অসাধু গাছ ও লাকড়ী ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার কাঠুরিয়া দিয়ে ছোট বড় গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে।

২/৩ বছর পূর্বেও এ পাহাড় গুলোতে প্রাকৃতি গাছে ভরপুর ছিল। গাছ পাচারকারীরা জোর পূর্বক ৭৫% গাছ কেটে নিয়ে গেছে। তারা গাছ পরিবহন করে আনতে তৈরী করেছে শত শত কাঁচা রাস্তা। বনের পাহাড় গুলো এখন খালি হয়ে গেছে। জুম চাষিরা এখন অতিরিক্ত গরমের কারণে জুমের কাজ করতে পারছেনা। তার কারণ হিসাবে তারা বলেন, পাহাড়ের গাছ কেটে ফেলায় সূর্যের আলো সরাসরি পড়ছে শরীরে। আশেপাশে কোন গাছ না থাকায় গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে না পারার কারণে কাজ করতে পারছেনা। বনে গাছ যখন ছিল তখন প্রখর রোদে জুম চাষাবাদের কাজ করে গাছের নিচে ছায়ায় বিশ্রাম নেয়া যেত, এখন তা পারা যায়না।

তারা আরো বলেন, শুধু জুম চাষের ক্ষেত্রে নয়, এখন বসবাসরত পাড়ায়ও থাকা যাচ্ছেনা। গাছ ও লাকড়ি পাচারকারীরা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের অভ্যন্তরিন কাঁচা রাস্তা তৈরি করে এই কাঠ ও লাকড়ি পাচার করে যাচ্ছে নিমিশেই। তারা সমতলে বনবিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কাঠ ও লাকড়ি গুলো নিয়ে এসে সড়ক ও মাতামুহুরী নদী দিয়ে হাজার হাজার ফুট গাছ ও লক্ষ লক্ষ মণ লাকড়ি পাচার করে নিযে যাচ্ছে।

এব্যাপারে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম চৌধুরী সর্বত্র গাছ পাচারের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত জনবল না থাকার কারণে গাছ ও লাকড়ি পাচার বন্ধ করা যাচ্ছেনা। অবৈধ গাছ ও লাকড়ি পাচার বন্ধের অভিযান অব্যহত রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই