র‌্যাব-পুলিশের অস্ত্র যেন আ.লীগের টাকায় কেনা

সরকারি কর্মচারীদের বক্তব্যে রাষ্ট্রের নিপীড়ক চরিত্র সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি যে এখন বর্বর, নিপীড়ক, দমন-পীড়ন, হত্যা, গুম, খুন ও যৌথ বাহিনীর নিষ্ঠুর অপারেশনের প্রতিষ্ঠান তা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা যথার্থভাবেই সকলকে টের পাওয়াচ্ছেন। একেকদিন একেকজন কর্মকর্তার বক্তব্য শুনলে মনে হয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্র যেন আওয়ামী লীগের তহবিল থেকে কেনা। সুতরাং এই অস্ত্র ব্যবহারে কোনো জবাবদিহিতার দরকার নেই বলে তারা মনে করে। কারণ আওয়ামী লীগপন্থি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানরা ছাড়পত্র দিয়েছেন তাদের জোয়ানদের।’

র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজির আহমেদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘অস্ত্র গোলাবারুদ কেনো অকেজো করে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে উষ্মা প্রকাশ করেছেন র‌্যাবের ডিজি। কেন অস্ত্রশস্ত্র খেলার উপকরণ হিসেবে ফেলে রাখা হয়েছে। কেন যথাযথ ব্যবহার করা হচ্ছে না। র‌্যাবের মহাপরিচালক আরো বলেছেন বিচার বহির্ভুত হত্যা বলে নাকি কিছু নাই।’

সোমবার এক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রিজভী। গতকাল রোববার র‌্যাবের ডিজি খুলনায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘পুলিশকে কেন অস্ত্র দেয়া হয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কেন অস্ত্র দেয়া হয়েছে? অনিরাপদ কোনো ঘটনা ঘটলে তারা ব্যবহার করবেন। ওই অস্ত্র কি তাদের হা-ডু-ডু খেলার জন্য দেয়া হয়েছে?’ বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড বলে কিছু নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘তাহলে খিলগাঁও ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনিকে কোন বিচারের আওতায় প্রাণদণ্ড দেয়া হয়েছে? কোন আদালতের রায়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর স্বামীকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়? সপ্তাহখানেক আগে দলের চারজন কর্মীকে ধরে নিয়ে গিয়ে টার্গেট হত্যা করা হয় কোন বিচারে?’

রিজভী আহমেদ প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এগুলো যদি বিচার বহির্ভুত হত্যা না হয় তাহলে এগুলো কোন বিচারের অন্তর্ভুক্ত হত্যা? এসব দেশবাসী জানতে চায়।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘পেট্রোলবোমা মেরে মানুষকে দগ্ধ করার বিরামহীন দৃশ্য দেখানো হচ্ছে টেলিভিশনে। বার্ন ইউনিটের অমানবিক দৃশ্যকে কেন্দ্র করে হাইপার প্রচারাভিযান চালানো হচ্ছে বিরোধী দলের আন্দোলনের বিরুদ্ধে। কয়েকদিন ধরেই জনশ্রুতি ছিল, সরকার নিজেই একটা বড় ধরনের নাশকতা করবে। যেটির বিদেশ থেকে পরিচালিত একটি পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যাতে পুরো দায়টা বিরোধী দলের ওপর চাপানো যায়। ২৩ তারিখ রাতেই ডেমরায় ঘটানো হলো বাসে আগুন দিয়ে ৩৫ জন বাস আরোহীকে অগ্নিদগ্ধের ঘটনা। আর তার পরের দিন শোকে কাতর সন্তানহারা মা বেগম খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে মামলা দেয়া হলো। সমগ্র ঘটনাটাই একটা মাস্টারপ্ল্যানের অংশ বলে সর্বসাধারণ বিশ্বাস করে।’

তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে গুম আর গুপ্তহত্যা যাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি, পেট্রোলবোমা ছুঁড়ে নাশকতার মতো বন্য ও আদিম হিংস্র বর্বরতার মানবতাবিরোধী কাজ তারাই সংঘটিত করছে যারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।



মন্তব্য চালু নেই