মরদেহের সঙ্গে আসছেন যারা

কোকোর লাশ সরাসরি গুলশান কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হবে

আরাফাত রহমান কোকোর লাশ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবে। বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল তার লাশ গ্রহণ করে সরাসরি মা বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে নিয়ে যাবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা জানান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, ‘সেখানে পরিবারের সদস্যরা ছাড়া অন্য কেউ আসতে পারবে না। এরপর কোকোর লাশ বিকেলে ৪টার মধ্যে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নেওয়া হবে। সেখানে বাদ আসর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার পর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য লাশ কিছুক্ষণ সেখানে রাখা হবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানান, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে কোকোর লাশ সরাসরি বনানীর সামরিক কবরস্থানে নেওয়া হবে। সেখানে কোকোকে দাফনের জন্য ইতোমধ্যেই আমাদের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে। কোকো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধানের সন্তান। আশা করি, তার দাফন সেখানে হবে।
কোকোর কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না দাবি করে নজরুল ইসলাম দলমত নির্বিশেষে সবাইকে, বিশেষ করে ঢাকা মহানগরের সর্বস্তরের মানুষকে তার জানাজায় শরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
নজরুল ইসলাম খান বিএনপি ও কোকোর পরিবারের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুতে দেশবাসী, দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও যারা দেশ-বিদেশ থেকে বিভিন্নভাবে সমবেদনা ও শোক জানিয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি জানান, বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকারী বিদেশী কূটনীতিকগণ স্বশরীরে এখানে এসে কোকোর মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। শোক বইয়ে সই করেছেন। অনেকে বিদেশ থেকে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন, বিএনপি ও কোকোর পরিবার সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানাচ্ছে। এ সময় তিনি কোকোর আত্মার মাগফিরাত কামনায় সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।

বিমানবন্দরে কোকোর লাশ গ্রহণের জন্য বিএনপির প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন— দলের স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল্লাহ আল নোমান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী।

এদিকে, আরাফাত রহমান কোকোর প্রতি সন্মান জানাতে সোমবার থেকে বিএনপির তিন দিনের শোক শুরু হয়েছে। দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। নেতাকর্মীরা বুকে কালোব্যাজ ধারণ করেছে।

এ ছাড়া এই তিন দিন সারাদেশের মসজিদে মসজিদে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল হবে।
খালেদা জিয়ার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় মালয়েশিয়া থেকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বিমানে কোকোর কফিন ঢাকায় এসে পৌঁছাবে। এরপর বিএনপির প্রতিনিধি দল তা গ্রহণ করে গুলশানের কার্যালয়ে নিয়ে আসবেন। এখানে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

এরপর কোকোর মরদেহ জানাজার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদে। সেখানে নামাজে জানাজার পর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কিছুক্ষণ রাখা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান, জমির উদ্দিন সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আব্দুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, রুহুল আলম চৌধুরী, জয়নাল আবেদিন, সম্পাদক জিয়াউর রহমান খানসহ অন্য নেতারা।

 

কোকোর মরদেহের সঙ্গে আসছেন যারা
আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহের সঙ্গে কুয়ালালামপুর থেকে তার স্ত্রী, দুই কন্যা, আত্নীয় স্বজনসহ আরো ২০/২৫ বিএনপি নেতা আসছেন।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে মালয়েশীয় এয়ারলাইনসের একটি বিমানে ঢাকার উদ্দেশে কোকোর মরদেহ নিয়ে তারা রওনা করবেন।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১১ টা ৪০ মিনিটের দিকে কোকোর লাশবাহি বিমানের অবতরণের কথা রয়েছে।

মালেয়েশিয়া বিএনপির প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার বাদলুর রহমান খান  জানিয়েছেন, কোকোর মরদেহের সঙ্গে থাকবেন তার স্ত্রী শর্মিলা রহমান, দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান, মামা শামীম ইস্কান্দার, শামীম ইস্কান্দারের শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালু, কোকোর মামাশ্বশুর এবং মালয়েশিয়া বিএনপির ২০ থেকে ২৫ জন স্থানীয় নেতা।

বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং জানিয়েছে, মঙ্গলবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ গ্রহণ করবেন বিএনপির পাঁচ নেতা। তারা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মইন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসূফ, আব্দুল্লাহ আল নোমান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী।

গত শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরাফাত রহমান কোকো।

তার মৃত্যুতে সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত তিন দিন দেশব্যাপী শোক পালন করছে বিএনপি। এ উপলক্ষে সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে সোমবার থেকেই কালো পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন।



মন্তব্য চালু নেই