বেরোবিতে ভর্তি জালিয়াতি

পার পেয়ে গেলেন কলা অনুষদের ডিন

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে(বেরোবি)২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকারে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এবারের ভর্তি পরীক্ষা। এ অসুদপায় অবলম্বনকারিদের সাথে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জড়িত থাকার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সেই ডিনের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।

এ ইউনিটে ১৮ টি ওএম আর শিট বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ,ওএম আর শিট ছাড়াই মেধা তালিকায় স্থান,পরীক্ষা না দিয়েই মেধা তালিকায় নাম প্রকাশ হওয়ার ঘটনা সুস্পষ্ট হওয়ার পরও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা হয় নি। অথচ গণিত বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষকের বোনের ভর্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত জানা গেছে।এবং সেই সাথে ঔ বিভাগের শিক্ষক ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে আইন লংঘনের অভিযোগ তদন্ত না করেই পরবতী ৫ বছর ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ণ, মডারেশন ,প্রিন্টিং এবং প্যাকেজিং সংক্রান্ত সকল কাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. একে এম নূও উন নবীর সভাপতিত্বে সোমবার বিকেল ৩ টা থেতে ৬ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এক ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আর এম হাফিজুর রহমানকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচিত করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। বাকী ২ জন সদস্য হলেন,বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নিতাই চন্দ্র ঘোষ এবং সদস্য সচিব পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ও সহকারি প্রক্টর মো. সিরাজুদ্দৌলা।

এ দিকে ভর্তি জালিয়াতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার ২৬ মে সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সর্বাত্মক ছাত্রধর্মঘটের ডাক দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।। আজ বিকেলে প্রগতিশীল ছাত্রজোট এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এই ঘোষণা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন বেরোবি শাখার সদস্য সচিব আহমেদ নাসির, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বেরোবি শাখার সভাপতি আহসান হাবিব ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বেরোবি শাখার আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আহমেদ নাসির। সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন জোট নেতারা।

এর আগে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়,এ ইউনিটের সমন্বয়ক ১৮ টি ও এম আর শিটের কোন হদিস দিতে পারেননি। পরবর্তীতে শিক্ষকদের চাপে তিনি সেগুলো ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছেন। উল্লেখ্য যে,ও এম আর শীট ছাড়াই এ ইউনিটের ১১৬০২৪,১১৩৭৬৭ ও ১১৫৯৫০ (যাদের মেধাক্রম যথাক্রমে ২৪,৩০,৫৩) রোল নম্বরের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।এ ইউনিটের সমন্বয়ক এবং কলা অনুষদের ডিন ড.নাজমুল হকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করা হয়।
এছাড়াও ঔ ইউনিটে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থীর ফলাফল প্রকাশ করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। যার মেধা তালিকা নং ১৬১ এবং রোল ১৪৬০২০।এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক বলেন, এটি ‘টেকনিক্যাল প্রবলেম’ এর কারনে হয়েছে।
এছাড়াও ভাইভার দুইদিনে ১৩ জন ভুয়া প্রার্থী ধরা পড়ে।তাদের পেছনে প্রক্সিদাতারা চিহ্নিত হয়নি।

এবার পরীক্ষায় ভর্তি জালিয়াতির সাথে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তা জড়িত আছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ঔ ডিনের বিরুদ্ধে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উথ্থাপিত অভিযোগের ১৮ টি ও এম আর শিটের মধ্যে ১৩ টির রোল পাওয়া গেছে সেগুলো হলো ১১৫০১৮থেকে ২৬ এবং ১১৫০২৮-২৯ এবং ১১৫০৩২ ও ৩৩।এদের মধ্যে ২ জনের ও এম আর শিট ওএমআর মেশিন ছাড়াই পূনর্মূল্যায়নের কথা বললেও তাদের সম্পর্কে সুস্পষ্ঠ জানা যায়নি।প্রগতিশীল ছাত্রজোটের পক্ষ থেকে এসব রোলের ব্যাপারে নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ১৮ মে থেকে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ দিকে আজ ভাইভা জালিয়াতিতে অভিযুক্ত ১৩ শিক্ষার্থীর মামলা শুনানির কথা রয়েছে। কোতয়ালি থানার জুডিমিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তাঁদের ব্যাপারে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম।

উল্লেখ্য যে গত ২১ মে ১ম মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয় এবং আজ ও আগামীকাল এ মেধা তালিকায় উত্তীর্ণদের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই