রাষ্ট্রপতি যেভাবে চাইবেন সেভাবেই নির্বাচন কমিশন গঠন
মহামান্য রাষ্ট্রপতি সবদলের সঙ্গে আলোচনা করে যেভাবে চাইবেন সেভাবেই নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নিয়েছেন। বিএনপি তাদের পরিকল্পনা-মতামত বঙ্গভবনে পৌঁছে দিয়েছে। রাষ্ট্রপতি আলাপ-আলোচনা করবেন, সবদলের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি যেভাবে চাইবেন সেভাবেই নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নিশ্চয়ই মহামান্য রাষ্ট্রপতি কী করেন সেটা আমরা দেখবো, সেভাবে আমরা মেনে নেবো। নির্বাচনটা অবাধ হোক, সুষ্ঠু হোক, নিরপেক্ষ হোক সবসময় সেটাই চাই।
তিনি বলেন, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন আমরাই করেছি। আমাদের অনেক লোক জীবন দিয়েছে এর জন্য। আমরা চাই এই দেশে একটা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ভোট চুরি নিয়ে কথা বলে। নির্বাচন নিয়ে কথা ওঠে। নির্বাচন কমিশন কীভাবে গঠিত হবে সেটা নিয়েও তারা এখন অনেক শলাপরামর্শ দেয়।
বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, সেই হ্যাঁ/না ভোট, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, ৭৯ এর নির্বাচন থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে যতগুলো নির্বাচন দেখেছি। সেই মাগুরার নির্বাচন, মিরপুরের নির্বাচন এবং তার পরবর্তীতে ঢাকা-১০ আসনের নির্বাচন সবকিছু আমাদের দেখা আছে। সব থেকে বড় কথা ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি যে নির্বাচন করেছিল, সেখানে কয়েকটা দল অংশগ্রহণ করেছিল? কত পার্সেন্ট ভোট পড়েছিল? সমস্ত বাংলাদেশে আর্মি ডেপলয় করে দিয়ে নির্বাচনের একটা প্রহসন করেছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, এভাবে ভোট চুরি করেছিল বলেই খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন করেছিল ৩০ মার্চ জনগণের আন্দোলনের রুদ্ররোষে তাকে পদত্যাগে জনগণ বাধ্য করেছিল এই কথা সে এখন ভুলে গেছে।
মানুষ পোড়ানো মামলার দ্রুত শাস্তি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। এটা তাদের সিদ্ধান্ত ছিল। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে- একটা দলের নেতা যদি ভুল সিদ্ধান্ত নেয় সে খেসারত তাদেরই দিতে হয়। তারা নির্বাচনে আসেনি এটা তাদের ভুল। তার জন্য দেশবাসী কেন খেসারত দেবে?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অথচ তারা কী করলো? নির্বাচন ঠেকানোর নামে ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে জ্বালাও-পোড়াও অগ্নিসন্ত্রাস। জীবন্ত মানুষকে তারা পুড়িয়ে মেরেছে। হাজার হাজার গাড়ি-ট্রাক সব পুড়িয়ে দিয়েছে। লঞ্চ-ইস্টিমার-রেল কোনো কিছু তাদের আক্রমণ থেকে বাদ যায়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে আন্দোলন খেলা সে খেলেছে। এই যে এতগুলো মানুষ তারা পোড়ালো, এতগুলো মানুষের জীবন নিলো। যারা বেঁচে আছে; কী মানবেতর জীবন-যাপন তারা করছে। এ ব্যাপারে জাতির কাছে খালেদা জিয়াকে ক্ষমা চাইতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেন সে এইভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারলো? তিনি হুকুম দিয়েছে। আর ঘরে বসেছিলেন। তাদের লোকগুলো মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমি চাইবো এই মামলাগুলোর দ্রুত যেন শাস্তি হয় যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে।’
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে, যা কখনো আমাদের কাম্য না। আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। হত্যা-ক্যু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধ হয় সেজন্য আমরা সংবিধান সংশোধন করে গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। আমাদের সাধ্য অনুযায়ী ছোট্ট একটা কামরা দিতে পারলে আমরা দেবো। একটি টিনের ঘর হলেও আমরা তাদেরকে দেবো। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
মন্তব্য চালু নেই