রাষ্ট্রপতিকে যা বললেন সাকা
আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে এই মামলার প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের কড়া নজর ছিল। তারা সরকারের এই একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করার সমর্থন জানিয়েছিল। কিন্তু পৃথিবী এখন দেখছে যে, কিভাবে কোর্ট তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে এবং নিজ স্বার্থের অপব্যবহার করছে।
শনিবার দুপুরে গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনে রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পক্ষ থেকে এসব তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
এর আগে গত ১৯ নভেম্বর কারাগারে সাকা চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন তার পরিবারের সদস্যরা। তখন সাকা চৌধুরী তার পরিবারের সদস্যদের এ কথা জানান।
সাক্ষাতে সাকা চৌধুরী তার পরিবারের সদস্যদের বলেন, ‘এসব কথা ডকুমেন্ট আকারে আমার পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে দেবে।’
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এই ট্রায়ালের সমালোচনা না করে তার পরিবারকে পরামর্শ দিয়েছেন, তারা যেন আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরে।
ডকুমেন্টে আরো বলা হয়, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন, তিনি যেন এটিকে মিস ট্রায়াল হিসেবে ঘোষণা দেন। যেন তার অ্যালিবি (Aibi) সাক্ষীর উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে কোর্টে যাতে তাদের সাক্ষ্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়।
তিনি এও অনুরোধ করেছেন, যেন তারা প্রামাণিক দলিল গ্রহণ করা হয় এবং স্বচ্ছভাবে সত্যতা যাচাই করা হয়।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী রাষ্ট্রপতিকে স্মরণ করিয়ে দিতে চান যে, তিনি বাংলাদেশের সংবিধাননের অভিভাবক। প্রত্যেক বাংলাদেশি নাগরিকের অধিকার রক্ষার দায়িত্ব তার হাতে। আইনের রক্ষক হিসেবে তিনি অবশ্যই বুঝতে পারবেন যে, এখানে ন্যাক্কারজনকভাবে আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর প্রতি এই অবিচারের প্রতিকার করার জন্য রাষ্ট্রপতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দীর্ঘ তিন দশকের আইন প্রণয়নে সহকর্মী হিসেবে তারা একসাথে কাজ করেছেন বিধায় তার সততা এবং নিষ্ঠার প্রতি তার বিশ্বাস আছে। তাই এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মুখ ফিরিয়ে নেবেন না এবং সুষ্ঠু বিচারের প্রতি সঠিক পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
তবে এ সংবাদ সম্মেলন চলাকালেই কারাগারে নিজের দায় স্বীকার করে নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী। যদিও বিচারকালে তারা বলে আসছিলেন এই প্রসিকিউশনের আনা অভিযোগের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা নেই। একই সঙ্গে অপরাধের দায় স্বীকার করে নিয়েছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদও। তিনিও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধে এরআগে দুই জামায়াত নেতা কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলেও তার আগে তারা কেউ-ই রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ নেননি।
মন্তব্য চালু নেই