রাবিতে ছাত্রলীগের ২ নেতা-কর্মী নৃশংসতার শিকার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মাসুদ হাসান নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে তার একটি পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার সঙ্গে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ছাত্রবৃত্তিবিষয়ক সম্পাদক টগর মোহাম্মদ সালেহীর হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। টগরের মাথায়ও কোপ লাগে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হল মাঠসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পরই পুলিশ ১০ জনকে আটক করেছে।

এদিকে নৃশংস এই হামলা ছাত্রশিবির পরিকল্পিতভাবে চালিয়েছে বলে ছাত্রলীগ দাবি করেছে।

আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকেই ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর আগে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক বি কে দাম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘মাসুদ হাসানের ডান পা টি বিচ্ছিন্ন ছিল। আর তার বাম পায়ের গোড়ালি ঝুলন্ত অবস্থায় পেয়েছি। প্রাথমিক অস্ত্রোপচার শেষে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে পঙ্গুতে পাঠানো হয়েছে।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, টগর মোহাম্মদ সালেহীর হাত-পায়ের রগ কর্তন ছাড়াও তার মাথায় কোপের জখম রয়েছে। বিস্ফোরিত ককটেলের স্প্লিন্টারের আঘাতও রয়েছে তার পিঠে।

অধ্যাপক বি কে দাম বলেন, দুজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আহত মাসুদ হাসান ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি আয়াতুল্লাহ বেহেস্তির ছোট ভাই। টগর মোহাম্মদ সালেহী ফোকলোর বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্‌শ হল থেকে ক্লাসে যাওয়ার জন্য বের হন মাসুদ ও টগর। তারা হল থেকে হেঁটে শহীদ জিয়াউর রহমান হল পার হয়ে শহীদ হবিবুর রহমান হল মাঠ দিয়ে বিভাগের দিকে আসছিলেন। এ সময় পেছন থেকে চার-পাঁচজন দুর্বৃত্ত এসে তাদেরকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে মাসুদ হাসানের শরীর থেকে পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অন্য পা টিও ঝুলে পড়ে।

মাসুদ ও টগরের চিৎকারে পাশের দোকানদাররা এগিয়ে এলে দুটি ককটেল ফাটিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদেরকে প্রথমে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে জরুরি চিকিৎসা সেবা দিয়ে তাদেরকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা বলেছেন, শিবির ক্যাডাররাই পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়েছে।

এ দিকে এ হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ। ছাত্রশিবিরকে দায়ী করে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে তারা।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের নেতা হান্নান, ওয়ালিউল্লাহ ও মাহমুদকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মারধরের সময় মাসুদ সঙ্গে ছিলেন। এর জের ধরেই শিবির তাদের ওপর হামলা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই