রানা প্লাজার শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের টাকা ঈদের আগেই

বাংলাদেশের সাভারে রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের টাকা এ মাসের শেষে ঈদের আগে দেওয়া শুরু হচ্ছে। এজন্য সাতশ জন ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি জানিয়েছে, ভবনটির ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক যারা আগে ক্ষতিপূরণের জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছেন, সেই ক্রমানুসারে প্রথম ধাপে তাদেরকে বাছাই করা হয়েছে। তবে পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত সকল শ্রমিককেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। গত বছরের ২৪শে এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে এগারোশরও বেশি শ্রমিক নিহত এবং আহত হন আরো অনেকে। রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে আড়াই হাজার শ্রমিক ক্ষতিপূরণ দাবি করে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত হয়েছেন।

এখনও এক হাজারের বেশি শ্রমিক তালিকাভুক্ত হননি। তাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করার জন্য আবারও সময় দেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর নেতৃত্বে সরকার, শ্রমিক এবং গার্মেন্টস মালিক প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি এই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে কাজ করছে। সেই কমিটির সদস্য এবং শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করে এরকম একটি প্রতিষ্ঠান বিলস এর সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তালিকাভুক্ত শ্রমিকদের মধ্যে ক্রমানুসারে ৭০০ জনকে বাছাই করা হয়েছে। প্রথম ধাপে এ মাসের শেষে তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি সকলকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। প্রথম ধাপে এই সাতশ জন কতো ক্ষতিপূরণ পাবে, সেটা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন আগামী সপ্তাহে আইএলওর দুজন বিশেষজ্ঞ আসছেন। তাদের সাথে বৈঠক করে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ চূড়ান্ত করা হবে।

আইএলওর সূত্রগুলোও এ মাসের শেষ দিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনার পর এক বছরেরও বেশি সময় ধরে শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণ দাবি করে আসছেন। কবে নাগাদ ক্ষতিপূরণের পুরো টাকা তারা পেতে পারেন, সে ব্যাপারেও তারা সন্দেহ প্রকাশ করে আসছেন। নিহত শ্রমিকদের পরিবার এবং আহতদের প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে যে অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে, সেটাকে ক্ষতিপূরণের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা না করার প্রশ্নে বিতর্ক রয়েছে। তবে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার বলেছেন, সেই অর্থ সহায়তাকে ক্ষতিপূরণের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে। এ ব্যাপারে আইএলওর নেতৃত্বাধীন কমিটি এবং সরকার একমত হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।

পোশাক শিল্পের মালিকরা শুরু থেকেই এর পক্ষে ছিলেন। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলো এখনও সহায়তা বা অনুদানকে ক্ষতিপূরণের অংশ হিসেবে দেখানোর বিরোধিতা করছে। এছাড়া আইএলওর নেতৃত্বাধীন কমিটি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য বিদেশি ক্রেতাদের সহায়তা নিয়ে ৪০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠনের যে উদ্যোগ নিয়েছিল। সেই তহবিলে এখনও ১৭মিলিয়ন ডলারের মতো পাওয়া গেছে। সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিদেশী ক্রেতারা যাতে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসে, সেজন্য চাপ অব্যাহত রাখা হয়েছে। গত এপ্রিলে রানা প্লাজা ধসের ঘটনার যখন একবছর পুরো হয়, সে সময় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের প্রত্যেককে প্রতীকী ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই