চেয়ারম্যানদের গড়িমসি

রাণীনগরে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ২০ দিনেও পূর্নাঙ্গ তালিকা হয়নি ॥ ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষোভ

নওগাঁর রাণীনগরে সম্প্রতি কয়েক দফা বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঘড়বাড়ি, মাদ্রাসাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জনসাধারণের ক্ষতির তালিকা ২০দিন অতিবাহিত হলেও ইউপি চেয়ারম্যানদের গড়িমসি’র কারণে পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারি সাহায্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জানা গেছে, চলতি মাসের ৪ তারিখ থেকে কয়েক দফা কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ঘড়বাড়ি, গাছ-পালা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা সহ ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। তাৎক্ষনিক ভাবে নওগাঁ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে জিআর তহবিল থেকে ২০ মেঃটন চাল এবং পরে আংশিক তালিকার ভিত্তিতে দুঃস্থ্য অসহায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ে ৭ হাজার ৪’শ ৫০কেজি চাল ও আহতদের মাঝে ১৫হাজার টাকা বিতরণ করা হয়।

ইউপি চেয়ারম্যানরা আংশিক ও পুরো ক্ষতির তালিকা ঝড়ের পর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরে যথা সময়ে সঠিক তালিকা জমা দিতে গরিমসি করার কারণে গত ২০ দিনে পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। চেয়ারম্যানদের গরিমসি’র কারণে উপজেলা প্রশাসন সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের চাহিদাপত্র দিতে পারছেন না। ফলে এলাকার ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারের দিকে চেয়ে না থেকে ধার-দেনা করে পরিবার-পরিজনের নিরাপত্তার কারণে নিজেরাই তাদের ঘড়বাড়ি মেরামতের কাজ শুরু করেছে।

ইতিমধ্যে কয়েকটি ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরে জমা দিলেও কর্তৃপক্ষ অসংগতি ও তথ্য গরমিলের কারণে কয়েকটি ইউনিয়নের তালিকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এরিপোর্ট লেখা পর্য়ন্ত ওই দপ্তরে ৮টি ইউপি’র মধ্যে ৫টি’র ঝড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে বলে প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রামের মামুনুর রশিদ, করজগ্রাম’র ফজলুর রহমান, কাজী আনিছুর রহমান, সিম্বা গ্রামের সাইদুজ্জামান সাগর জানান, ঝড়ে আমাদের ঘড়ের টিনের চালা উড়ে যায়। ২০ দিন অতিবাহিত হলেও সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা আমরা পাইনি।

এব্যাপারে সদর ইউপি চেয়ারম্যান রোকুনুজ্জামান খান জানান, প্রাথমিক তালিকা দেওয়া হয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গ তালিকা আমি নিজেই আমার সদস্যদের সাথে সম্বনয় করে তৈরি করছি। বেশি ক্ষতির কারণে সঠিক তালিকা করতে সময় লাগছে। তবে আগামী রবিবারের মধ্যেই আমার পরিষদবাসির ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তরে জমা দিব।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদি হাসান জানান, ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাড়ী-ঘর, গাছ পালা ও ধানের ক্ষতি হয়েছে। আমি নিজে সকল ইউপি’র বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করি। তবে কি পরিমানে ক্ষতি হয়েছে তা ইউপি চেয়ারম্যানদের ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা আমার দপ্তরে জরুরি ভাবে দেওয়ার জন্য ৫এপ্রিল সকল চেয়ারম্যানদেরকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের যথাযথ সহযোগিতার অভাবে আজ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণাঙ্গ চাহিদাপত্র সরকারের কাছে জমা দিতে পারিনি।

উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল ঝড়ের পর ৮ এপ্রিল ত্রান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয়ের যুগ্ন সচিব আতিকুর রহমান রাণীনগর উপজেলার বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন শেষে জরুরি ভিত্তিতে তালিকা প্রনয়নের নির্দেশ দেন। অদ্যবধি এর বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।



মন্তব্য চালু নেই