রাণীনগরে জোড়াতালি দেওয়া পরিত্যাক্ত কক্ষে চলছে পাঠদান

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ) : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কালিগ্রাম ইউপি’র ৪৩ নং মাধাইমুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জোড়াতালি দেওয়া পরিত্যাক্ত কক্ষে চলছে পাঠদান। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের দুটি ভবনের বেহাল অবস্থা। বিদ্যুৎ ছাড়াই টিনের ছাউনির নিচে গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণ করতে হয়।

পরিত্যাক্ত ভবন যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অবিভাবক ও সচেতন মহল। এছাড়াও পরিত্যাক্ত মাটির ভবনের পশ্চিম দিকের দেয়াল ভেঙ্গে পড়ায় ভবনের দরজা-জানালা, ছাউনির টিন, শিক্ষার্থীদের ব্রেঞ্চসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বার বার অবগত করেও কোন কাজ হয়নি বলে জানান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে প্রায় ১ শত ৫০জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন পাঠ গ্রহন করছে।

জানা গেছে, উপজেলার ৪৩ নং মাধাইমুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জড়িত। কক্ষ সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে পরিত্যাক্ত মাটির ভবনের একটি কক্ষ সংস্কার করে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের পরিত্যাক্ত কক্ষে পাঠগ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে। বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের কোন ব্যবস্থা না থাকায় গ্রীষ্মের সময় টিনের ছাউনির নিচে প্রচন্ড তাপদাহের মধ্য ছেলে-মেয়েরা কষ্ট করে ক্লাস করে। কক্ষ সংকটের কারণে কয়েক দশক পূর্বে পরিত্যাক্ত মাটির ভবনের একটি কক্ষ কোন মতে সংস্কার করে জোড়াতালি দিলে চলছে পাঠদান। শিক্ষার্থীদের জন্য নেই আলাদা ওয়াশ রুমের ব্যবস্থা। শিক্ষক চার জন থাকার কথা থাকলেও মাত্র তিনজন শিক্ষক দিয়ে মুখ থুবরে চলছে এই বিদ্যালয়।

বিদ্যালয় চলাকালে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা সবার অজানতেই ওই কক্ষে খেলাধুলা করে। যার কারণে যে কোন সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। একাধিকবার ঝড়ে এই ভবনের টিনগুলো উড়ে যাওয়ায় অনেক টাকার জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ের প্রধান ভবনের টিনের ছাউনি দিয়ে বৃষ্টি পড়ে। যার কারণে বিদ্যালয়ের আসবাবপত্রসহ জরুরী কাগজপত্রাদি নষ্ট হয়ে যায় বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আজাহার আলী জানান।

তিনি আরও বলেন, যদি এই পরিত্যাক্ত ভবন ভেঙ্গে নতুন করে আধুনিক মানের ভবন ও শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়াশরুম তৈরি এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে একটি সুন্দর পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পাঠ গ্রহণ করতে পারবে এবং কক্ষ স্বল্পতার সমস্যা দূর হবে। ফলে এই প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকার মানুষের মাঝে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠানার প্রতি বাড়বে আগ্রহ।

এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: মজনুর রহমান জানান, এই বিদ্যালয়ের সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই