রাণীনগরে আখ বিক্রয়ের ধুম

নওগাঁর রাণীনগরে আখ বিক্রয়ের ধুম পড়েছে। উপজেলার রেলগেট নামক স্থানে প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে আখ চাষীরা তাদের উৎপাদিত রসালো উন্নত মানের আখ বিক্রয়ের জন্য নিয়ে আসে। মূহুর্তের মধ্যে বড় বড় পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা কিনে নিয়ে স্থানীয় হাট-বাজার ও রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশি লাভের আশাই চালান করছে এই এলাকার আখ। নওগাঁ জেলায় চিনি কল না থাকাই শুধুমাত্র আখের রস সেবনের জন্যই এর কদর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিশোর-কিশোরী মাঝ বয়সের মানুষের অতিব পছন্দনীয় এই রসালো মিষ্টি আখ।

জানা গেছে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের এলাকা ভেদে কম বেশি আখ চাষ হলেও সদর ইউনিয়ন ও কাশিমপুর ইউনিয়নে উর্বর উচু জমি বেশি থাকায় অন্য ফসলের চেয়ে আখ চাষ সুবিধা ও লাভজনক হওয়ায় আখ চাষের প্রতি দিনদিন এই এলাকার কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২/৩ বছর বন্যার কারণে রোপা-আমন ধান, অন্যান্য ফসল সহ শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় বছরের এই সময়ে সাধারণ মানুষ, শ্রমজীবিরা ও কৃষকদের কাজকর্ম না থাকায় তারা চরম অর্থ সংকটের কবলে পরে।

এখান থেকে কিছুটা উত্তোরনের জন্য স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শ ক্রমে বিকল্প অর্থকারি ফসল হিসেবে অনেক কৃষকই আচাফ্যারাম ও বাবুলাল আখ চাষে মনযোগী হয়ে উঠছে। বন্যার পানি যখন রাণীনগর উপজেলায় চারদিকে থৈ থৈ করছে এরকম মহা বিপদের সময় অন্য চাষিদের চেয়ে আখ চাষিদের উৎপাদিত ফসল বিক্রয়ের ধুম পড়ায় কিছু নতুন পয়সা হাতে আশায় চোখে-মুখে তাদের আনন্দের ছাপ দেখা যায়।

যদিও আখ চাষ ধানের চেয়ে বেশি সময় লাগে এবং তুলনামূলক ভাবে লাভ কম হয় কিন্তু প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবল থেকে একটু রেহাই পাওয়ার জন্য উপজেলার কৃষকরা আখ চাষে ঝোকে পড়ছেন। বছরের জুন হতে নভেস্বর মাস পর্যন্ত জমি হতে আখ কেটে বিক্রয় করার মৌসুম আর এই সময়ে প্রতিদিন ভোর হতে সকাল ১১টা পর্যন্ত উপজেলার রেলগেটের আখের বাজারে চলে বিক্রয়ের ধুম।

খুচরা আখ ব্যবসায়ীরা বছরের এই সময়ে প্রায় ছয় মাস জমজমাট ব্যবসা করলোও বছরের অন্য সময়ে শুষ্ক মৌসুমে কৃষি কাজে জরিয়ে জীবন-যাপন করে। খুচরা ভাবে আখ বিক্রয়ে দ্বিগুন লাভ হওয়াই বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ এই ব্যবসা করছেন।

বাজারে পাইকারি হিসেবে প্রতিটি ভালো আখ ৪-৫ টাকা করে বিক্রয় করা হয় আর খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতিটি আখ ৮-১০টাকায় বিক্রয় করে থাকে। প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে বড় বড় পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা আখ কিনে স্থানীয় হাট-বাজার ও রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশি লাভের আশাই চালান করছে এই এলাকার সুস্বাদু রসালো আখ।

উপজেলার চকমনু গ্রামের আখ চাষী আব্দুল আলীম (৩৩) জানান, তিনি আখ মৌসুমে প্রায় ৮ বিঘা জমিতে আখের চাষ করেছেন। প্রতি বছর আখ চাষের যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে প্রায় দ্বিগুন লাভ হয়।

উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম গোলাম সারওয়ার জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে আচাফ্যারাম ও বাবুলাল জাতের আখের চাষ হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই