রাজেশ খান্না: ভারতীয় ছবির প্রথম সুপারস্টার

রাজেশ খান্না। ভারতীয় ছবির প্রথম সুপারস্টার বলা হয়ে থাকে এই গুণী অভিনেতাকে। তার অভিনয়ে নিজস্বতা, এবং পুরুষ অভিনেতা হয়ে যে মানুষের মনে জায়গা করে নেয়া যায়, ভারতীয় একশো বছরের সিনেমার ইতিহাসে তারও প্রথম দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন রাজেশ খান্না।

অভিনয় দিয়ে তিনি যখন ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত, ঠিক সেসময় কিভাবে কিভাবে যেনো ভারতীয় সিনেমার প্রথম সুপার স্টার খ্যাতিটি লেগে যায় তার নামের সাথে। তার আগে এমনটি ভারতীয় সিনেমায় কোনো তারকা অভিনেতা বা অভিনেত্রীর নামে হয়নি। রাজেশ নামটি সেসময় এতোটাই প্রভাব বিস্তার করেছিল যে, সে সময়ে ভারতে জন্মগ্রহণ করা অনেক শিশুর নামও নির্বিচারে তার বাবা-মায়েরা রাজেশ রাখা শুরু করে দিয়েছিলেন। এমনটাই কিংবদন্তি আছে এই শক্তিশালী অভিনেতাকে নিয়ে।

শুধু বাচ্চাদের নামই নয়, বরং ভারতীয় নারীদেরও হৃদয়েও নাকি একটি বিশেষ জায়গা দখল করে বসে ছিলেন রাজেশ খান্না। তাকে দেখে তার নারী ভক্তেরা মুহূর্তেই অজ্ঞান হয়ে যেতো। হাত কেটে রক্তে লেখা চিঠিও পাঠিয়েছেন অসংখ্য নারী। এমনও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিও তার খ্যাতির কাছে সদা ঘটেই চলতো। এইসব মধুর ও ভয়ঙ্কর খ্যাতি নিয়ে বলিউডে রাজেশ খান্না কাটিয়েছে কয়েক যুগ।

১৯৪২ সালের ২৯ ডিসেম্বর ভারতের অমৃতসারে জন্মগ্রহণ করা এই অভিনেতা ১৯৬৬ সালে ‘আখরি খত (দ্য লাস্ট লেটার)’ ছবির মাধ্যমে অভিনয়জীবন শুরু করেন। অভিনয় জীবনে প্রবেশের সাথে সাথেই মাত্র অল্প ক’দিনে রপ্ত করে ফেলেন সবকিছু। খুব দ্রুতই ছড়িয়ে যেতে থাকে তার খ্যাতি। যতিন খান্না নাম পালটে হয়ে উঠেন রাজেশ খান্না। যদিও তার আইডল ছিল স্কুল এবং কলেজে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু রবি কাপুর। যিনি পরবর্তী সময়ে বলিউডে প্রতিষ্ঠা পান জিতেন্দ্র নামে। তাকে দেখেই নাকি শখের বশে থিয়েটারে কাজ করেন রাজেশ খান্না। আর এরপরের কথাতো ইতিহাস। একের পরেএক ছবিতে অভিনয় করে সুপারস্টার তকমাকেও ছাড়িয়ে যান রাজেশ।

তৎকালীন জনপ্রিয় অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরের সাথে ‘আরাধনা’ ছবিটিকে বলা হয় রাজেশ খান্নার অন্যতম টার্নিং ছবি। কারণ এই ছবিটিই তাকে বলিউডের প্রথম ‘সুপারস্টার’ তকমা পাইয়ে দেয়। এরপর সব মিলিয়ে অন্তত একশো আশিটি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। ইত্তেফাক, খামোশি,রাজ, দো রাস্তে,আন্দাজ, ছোটি বহু, গুড্ডি, দ্য ট্রেন, হাতি মেরে সাথি, সাচ্চা ঝুটা, দুশমন, অমর প্রেম, মেরে জীবন সাথি, নিমক হারাম তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি।

রোমান্টিক ছবিতে তাকে অভিনয় করতে দেখা গেলেও ‘ভার্সেটাইল’ চরিত্রাভিনেতা হিসেবেও খ্যাতি ছিল তার। ২০১২ সালে এই কিংবদন্তি অভিনেতা ক্যান্সারে ভোগে মৃত্যু বরণ করেন। এসময় তার পাশে সারাক্ষণ মেতে থাকতেন স্ত্রী ডিম্পল কাপাডিয়া, মেয়ে টুইঙ্কেল খান্না এবং জামাতা অক্ষয় কুমার।



মন্তব্য চালু নেই