রাজধানীর কালশীতে সংঘর্ষ-অগ্নিসংযোগ, নিহত ১০

পবিত্র শবে বরাতের রাতে বাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসী ও বিহারীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে রাজধানীর মিরপুরের কালশী এলাকা। আগুনে পুড়ে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।

শনিবার ভোরে কালশীতে এ ঘটনা ঘটে।

বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দা ইয়াসিনের দাবি করেন, আগুনে তার পরিবারের সাতজন সদস্য নিহত হয়েছে। একজন নিখোঁজ ও আরেকজন আহত হয়েছে। ইয়াসিনের দেওয়া তথ্যমতে, নিহত ব্যক্তিরা হলেন-ইয়াসিনের স্ত্রী বেবী (৪০), তিন মেয়ে শাহানা (২৬), আফসানা (১৯) ও রোকসানা (১৬), যমজ দুই ছেলে লালু (১৪) ও ভুলু (১৪) এবং শাহানার ছেলে মারুফ (২)।

সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ মো. আজাদ (৩৫) নামের একজন বিহারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। নিহত বাকি দুজনের নাম বাবুল ও আশিক বলে জানা গেছে।

তবে নিহত ব্যক্তিদের পাওয়া নাম-পরিচয়ের তথ্যের সত্যতা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। পরিবারের সদস্যদের দাবি অনুযায়ী নামগুলো এসেছে।

এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত তিন জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- পুলিশের সোর্স আসলাম (৪৫), স্থানীয় পানের দোকানদার বদরুদ্দিন (৪৫) ও স্কুল ছাত্র আরজু। এদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত

কালশীর এই ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ, এলাকাবাসী ও বিহারিরা একেক রকম দাবি করছে।

মিরপুর জোনের পুলিশের ডেপুটি কমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, বিহারিদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে সংঘর্ষ হয়েছে। শবে বরাত উপলক্ষে এক পক্ষ অন্য পক্ষের বাসার সামনে গিয়ে আতশবাজি ফোটায়। একে কেন্দ্র করেই দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকার লোকজনের ভাষ্য অনুযায়ী, শবে বরাত উপলক্ষে আতশবাজি পোড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ ফজরের নামাজের পর বিহারিদের সঙ্গে স্থানীয় বাঙালিদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে কুর্মিটোলা বিহারি ক্যাম্পের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

আজাদ ও নূর ইসলাম নামের দুজন বিহারির দাবি, স্থানীয় বাঙালিদের বস্তিতে বিদ্যুতের লাইন নেওয়া নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের উপস্থিতিতে আজ ভোরে স্থানীয় বাঙালিরা প্রথমে এসে বিহারি ক্যাম্পে হামলা চালায়।
এ ঘটনায় ১৫ জন আটক

কালশীতে সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১০ জন মারা যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মিরপুর ডিওএইচএস এর পাশের রাস্তা থেকে প্রায় ১৫ জন বিহারি যুবককে একসঙ্গে ধরে প্রিজন ভ্যানে উঠিয়ে নেয়।

পুরো কালশী এলাকা ও বিহারি ক্যাম্পগুলোতে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।



মন্তব্য চালু নেই