রাজধানীতে ভয়াবহ আকারে বাড়ছে গর্ভপাত
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঢাকায় গর্ভপাতের সংখ্যা ভয়াবহ আকারে বাড়ছে। এসব গর্ভপাতের মধ্যে বেশিরভাগই অবৈধ। এগুলো সঠিক সংখ্যা কত হবে তা আসলে নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও বিভিন্ন নারী অধিকার সংগঠনের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের একটি ইংরেজি দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর শ্যামলী ও মিরপুর এলাকায় প্রতিদিন ১৫০টিরও বেশি গর্ভপাতের ঘটনা ঘটে। এ সংখ্যা গত দুই বছরে অর্ধেক ছিল। গর্ভপাতকারী নারীদের মধ্যে বেশিরভাগই যৌন ব্যবসায়ী।
আইসিডিডিআরবি’র তথ্য অনুযায়ী, এসব যৌনকর্মীদের ৬০ শতাংশ কমপক্ষে একবার গর্ভপাত করেছে। ঢাকা ও দৌলতদিয়ার যৌন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তারা গর্ভপাত করতে যেতে পারেন না। তাদের পেশাগত কারণে সব জায়গায় তাদের গর্ভপাত করা হয় না।
রাজিয়া (ছদ্মনাম) নামের এক যৌনকর্মী বলেছেন, তিনি মাদারীপুরের একটি পতিতালয়ের যৌনকর্মী ছিলেন। এক বছর আগে তাদের পতিতালয় উচ্ছেদ হওয়ায় তিনি ঢাকায় চলে আসেন। তিনি গত ১৮ বছরে মোট ৩ বার গর্ভপাত করেছেন। কিন্তু কোনও উন্নত জায়গায় তিনি গর্ভপাত করাতে পারেননি। তাকে যারা সেবা দিয়েছেন তারা ছিল কম অভিজ্ঞ। সর্বশেষবার গর্ভপাত করার পর তিনি জরায়ু সমস্যায় ভুগছেন।
ডা. ফিরোজা বেগম বলেছেন, বেশিরভাগ গর্ভপাত অনিরাপদ ও অস্বাস্থ্যকর স্থানে করা হয়। এগুলো রোগীদের স্বাস্থ্যের জন্যে মারাত্মক হুমকি।
রাজধানীতে গর্ভপাতের জন্যে অনেকগুলো ক্লিনিক রয়েছে। অনেক নারী আইনি ঝামেলায় জড়ানোর ভয়ে সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে ক্লিনিকে গিয়ে গর্ভপাত করে থাকেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম মনে করেন, ছেলেমেয়েদের মধ্যে যথাযথ যৌনশিক্ষা না থাকায় তারা এসব সমস্যার সম্মুখীন হয়। এজন্যে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে যৌনশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিৎ। একজন নারী যখন গর্ভপাত করতে যায় তখন পরিবারের পক্ষ থেকেও সাহায্যে এগিয়ে উচিৎ। সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে মানুষকে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
মন্তব্য চালু নেই