রাউজানে স্পিড ব্রেকার এখন মরণ ফাঁদে

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার অভ্যান্তরিন সড়কগুলোতে কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে স্থাপন করা হয়েছে গতিরোধক (স্পিড ব্রেকার)। উপজেলার সড়কগুলোতে গতিরোধের অজুহাতে স্থানীয়রা এসব স্পিড ব্রেকার তৈরি করলেও সংশ্লিষ্ট সরকারী বিভাগ থেকে যে অনুমতি নেয়ার বিধান রয়েছে তা মেনে তৈরি করা হচ্ছে না। কিন্তু কোন নিয়ম তোয়াক্কা না করে স্পিড ব্রেকার তৈরি করলেও কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে একেবারেই নিচ্ছুপ।

স্থানীয়রা সাংবাদিকদের বলেন নিরাপত্তার অজুহাতে যেখানে সেখানে একের পর এক তৈরি করা হচ্ছে ঝুকিপূর্ণ স্পিড ব্রেকার। ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে দূর্ঘটনা, ভাঙছে রিক্সা-ভ্যান, মোটর সাইকেল, সিএনজি অটোরিক্সা। উপজেলায় দূর্ঘটনা এড়াতে গতিরোধক বা স্পিড ব্রেকারগুলো তৈরি হলেও এখন তা রাউজানবাসীর মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। গতিরোধক বা স্পিড ব্রেকার গুলোর কারণে বিভিন্ন সময় চলাচলরত গাড়ি উল্টে গিয়ে দূর্ঘটনা ঘটছে। যাত্রীরা আহত-নিহত ও চলাচলরত যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।

সম্প্রতি জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় “রাউজানে মায়ের কোল ছিটকে পড়ে শিশুর মৃত্যু” হেডলাইনে প্রকাশিত একটি সংবাদে জানা যায়, স্পিড ব্রেকারের ঝাঁকুনিতে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে ইয়াছির হোসেন নামের তিন বছরের এক শিশু চলন্ত সিএনজি অটোরিক্সার চাপায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এই ঘটনাটি ঘটেছে রাউজান উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের উরকিরচর সড়কের মাইশকরম সরকারী প্রাথমিক স্কুলের কাছে। সরেজরিমনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, গহিরা হয়ে তকিরহাট পর্যন্ত অদুদ চৌধুরী সড়কে প্রতিমুর্হুতে প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে ২০টি স্পিড ব্রেকার রয়েছে। রাউজান নোয়াপাড়া সড়ক সেকসন ১ ও ২ এর দুটি সড়ক পথে কমপক্ষে ৩০টি স্পিড ব্রেকার বসানো হয়েছে। এসব স্পিড ব্রেকার গুলো সরকারী কোন অনুমতি নেই বলে জানা গেছে। এসব স্পিড ব্রেকার গুলো স্থানীয়দের উদ্যোগে সরকারী অনুমোদনবিহীন বলেও জানান স্থানীয়রা। চালকরা জানান, কোন নিয়ম তোয়াক্কা না করে তৈরি করা স্পিড ব্রেকারের উপর দিয়ে গাড়ি পার হতে গিয়ে গাড়ির তলা আটকে ক্ষতি হচ্ছে। এসব সড়ক পথে অপরিচিত গাড়ি প্রবেশ করলে অনেক চালকের অজ্ঞতার কারণে ব্রেকার পার করতে গাড়ি উল্টে দিচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে যানবাহন, আহত-নিহত হচ্ছে যাত্রী ও চালক।

নোয়াপাড়া রাউজান দুটি সড়ক পথের মত ব্যাপক হারে স্পিড ব্রেকার বসানো হয়েছে নোয়াজিষপুর ১নং সড়ক নতুনহাট হয়ে তেতুলতল, উরকিরচর সড়ক, দায়ারঘাটা কাজীপাড়া সড়ক, বড়ঠাকুর পাড়াসহ বিভিন্ন পাড়া গ্রামের রাস্তায়। এলাকার মানুষের দাবি অধিকাংশ চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালনো প্রবণতায় অনেক সময় দূর্ঘটনা ঘটায়। বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য তার স্পিড ব্রেকার তৈরি করতে বাধ্য। সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সড়কে স্পিড ব্রেকার তৈরিতে সড়ক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু রাউজানে স্পিড ব্রেকার তৈরিতে অনুমোদনের বিধান কেউ তোয়াক্কা করেনি। গাড়ি চালকদের অভিযোগ সড়ক পথে স্পিড ব্রেকার দেয়ার যে বিধান রয়েছে তা তোয়াক্কা না করে ইচ্ছে মত তৈরি করা হচ্ছে স্পিড ব্রেকার। ফলে ঘটছে একের পর এক দূর্ঘটনা অকালে জড়ছে তাজা প্রাণ। এ ব্যাপারে রাউজান পৌর প্যানেল মেয়র বশির উদ্দীন খাঁন বলেন, যে সমস্ত সড়কে অহেতুক স্পিড ব্রেকার বসানো হলে কর্তৃপক্ষ সরজমিনে তদন্ত পূর্বক দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এব্যাপারে এলাকার সচেতন ব্যক্তিরা বলেন, বিদ্যালয়ের সামনে তৈরি করা স্পিড ব্রেকারগুলো যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু এ অজুহাতে যেখানে সেখানে যেমন ইচ্ছে তেমন স্পিড ব্রেকার তৈরি করে গাড়ির গতিরোধ করা অহেতুকর। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচরে এনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দাবি স্থানীয়দের।



মন্তব্য চালু নেই