রাউজানে উঁকি দিচ্ছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য হাতছানি দিয়ে ডাকছে ভ্রমণপিপাসুদের রাউজানে। রাউজানকে সরকারি বা বেসরকারিভাবে পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলা হলে পর্যটকদের আকর্ষণের পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্যেরও ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। রাউজান উপজেলা অবস্থানগত কারণে অপরূপ সাজে-সজ্জিত।

উপজেলার উত্তরে ফটিকছড়ি, দক্ষিণে বোয়ালখালী ও কর্ণফৃলী নদী, পূর্বে রাঙ্গুনীয়া ও কাউখালী (রাঙ্গামাটি) পশ্চিমে হাটহাজারী উপজেলা দ্বারা বেষ্টিত। সবুজের বিস্তীর্ণ সমারোহে প্রকৃতি যেন পাকনা মেলে দাড়িঁয়ে আছে। অপরূপ রূপে সজ্জিত উপজেলাটিতে পর্যটকদের বিশেষ আকর্ষণ হলদিয়া রাবার বাগান, রাউজান রাবার বাগান, ডাবুয়া রাবার বাগান, মর্ডান ফার্ম, বিন্দারবন, চিকদাইর ন্যাচার‌্যাল পার্ক, পাহাড়তলী জগৎপুর আশ্রম, মহামুনি বৌদ্ধ বিহার, চট্টগ্রাম প্রকৌশল-প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), হালদা, সর্ত্তা ও কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী স্থির। এছাড়াও খাল-বিল ও পুরনো স্থাপনাতো আছেই।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রাউজান উপজেলার পাহাড়ী অঞ্চলের আয়তন প্রায় ৬২৬৬ হেক্টর। যা উপজেলার মোট আয়তনের শতকরা প্রায় ২৫.২৮ ভাগ। প্রতিটি পাহাড়-টিলা নরম পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। এখানে চোখে পড়ে মাঝারি, উঁচু-নিচু পাহাড়। এখানকার নিচু পাহাড়গুলো অধিক খাড়া ও মৃদু খাড়া ঢাল, প্রশস্থ প্রায় সমতল চূড়া বিশিষ্ট। নিচু পাহাড়গুলো প্রশস্থ সরু উপত্যাক দ্বারা বিভক্ত। নিচু পাহাড়েরর মৃদু ঢালে মৃত্তিকা ক্ষয় অপেক্ষায় কম বিধায় এখানে সাধারণত গভীর মাটি দেখায়।

এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, এ উপজেলায় পুকুরের সংখ্যা প্রায় চার হাজারের কাছা-কাছি। এগুলো মাঝে প্রায় ৩০৮১টি হচ্ছে আবাদি পুকুর। আর বাকী প্রায় ৮৯৮টি হলো মজা বা অনাবাদি। এখানে রয়েছে ঐতিহাসিক লস্কর উজীরের দিঘী। যিনি একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব। এছাড়াও নোয়াজিশপুরের ইউসুফের দিঘীও এতদাঞ্চলে একটা প্রচীন দিঘী হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। হালদা নদীতে নৌকা চালানোর অপরূপ দৃশ্য নজরকারা বাংলা ও সহজ যাতায়াত ব্যবস্থা সব কিছুই মিলিয়ে রাউজানের বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোকে পর্যটন শিল্পের আওতায় আনা যায়। এখানে রাবার বাগানও রয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। বাগানগুলোতে সাড়ি সাড়ি গাছ, রাবারকষ পড়ার দৃশ্য সহজে মন ভাবিয়ে দেয়।

রাউজানে রয়েছে সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে গড়ে তোলা বৃক্ষবনায়ন। বৃক্ষবনায়নগুলো উপজেলাকে গড়ে তোলেছে এক সৌন্দর্যভূমি। দুই প্রধান নদী রাউজান উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যাওয়া চির যৌবনা কর্ণফুলি ও হালদা নদীসহ অসংখ্য নদী খাল-বিল, ছড়ার চরে ফুলে ফলা ভরা লাউ-কুমড়োর ক্ষেত ভ্রমণপিপাসুদের পিপাসা মিটাবে। এ উপজেলায় রয়েছে বিভিন্ন ভাষাভাষির মানুষ। এছাড়াও রয়েছে প্রাচীন স্থাপত্য, যেগুলোর সাথে জড়িয়ে রয়েছে জানা অজানা কাহিনী, ইতিহাস। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি যেন হাতছানি দিয়ে ভ্রমণ পিপাসুদের। সচেতন মহল মনে করেন, রাউজানকে সরকারি বেসরকারি পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলা হলে পর্যটকদের আকর্ষণের পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্যেরও ব্যাপক প্রসার ঘটবে।

Raozan Park Pic-2

এখানে পর্যটন স্পট হিসেবে ব্যক্তিগত ভাবে গড়ে তুলেছে গিরি ছায়া নামক রেস্টুরেন্ট। উপজেলার থেকে তিনতিন বার নির্বাচিত রাউজানের রূপকার, মডেল রাউজানের কান্ডারী, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি বলেন, আমরা সরকারি বা বেসরকারি ভাবে যে সব প্রকল্প হাতে নিয়েছি আশা করি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আমাদের রাউজান পর্যটন এলাকা হিসেবে জনপ্রিয় স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। তিনি আরো বলেন, রাউজান উপজেলা পর্যটন শিল্পের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই