রহস্যে ঘেরা কালো টমেটো এতদিন কোথায় ছিল?
টমেটো লাল রংয়ের হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কালো টমেটোও যে থাকতে পারে তা শুনে প্রথমে অবাকই হতে হয়। ঘটনাটা ঘটেছে ব্রিটেনের ডেভন কাউন্টিতে নিউটন অ্যাবট নামের ছোট্ট শহরে। সেখানকার ৬৬ বছর বয়স্ক বীজ বিশেষজ্ঞ রে ব্রাউনের ‘প্লান্ট ওয়ার্ল্ড সিড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে। প্রতিষ্ঠানটি দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ বীজ সংগ্রহের পাশাপাশি বিক্রিও করে থাকে। এই প্রতিষ্ঠানেরই এক ক্রেতা পার্সেলে পাঠিয়েছিলেন কালো টমেটোর বীজ।
বীজ থেকে গাছ হলো, সেই গাছে যখন ফল ধরল দেখা গেল কাঁচা টমেটোগুলোর রঙ নীলচে বেগুনি। কিন্তু বিস্ময় মাত্রা ছাড়িয়ে গেল তখন যখন টমেটো পাকতে শুরু করলো। রে ব্রাউনের চোখ ছানাবড়া। খয়েরি আর কালোতে মিশে যে রঙ হল তার, তাকে কালো ছাড়া আর কিছু বলা চলে না। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি সত্যিই কালো টমেটোই ফলেছে।
রে ব্রাউন বলেন, ‘গত শীতে এক ক্রেতা প্যাকেটটা পাঠিয়েছিলেন। প্যাকেটে ‘কালো টমেটো’ লেখাটা দেখে প্রথমে মনে হয়েছিল আজগুবি। ভেবেছিলাম, এত রকমের আজব মানুষ আছে দুনিয়ায়! হয়তো তেমনি কেউ একজন ‘এপ্রিল ফুলের’ আগাম ধোঁকা দিতে চেয়েছে!
কিন্তু যখন সেই বীজের গাছগুলো থেকে সত্যি সত্যিই কালো কালো টমেটো ধরল, তখন থ’ হয়ে গিয়েছিলাম ।’
শুধু তাই নয়, টমেটো খেয়েও তিনি মুগ্ধ। বলেছেন, বাইরের দিকটা কালো, ভেতরটা লাল। সাধারণ টমেটোর চেয়ে এর স্বাদ এবং গন্ধ বেশি তীব্র। সাধারণ টমেটোর চেয়ে কালো টমেটোর কিছু বাড়তি গুণ রয়েছে।
এই টমেটোতে অ্যান্থোসায়ানিন নামে এক ধরনের এন্টিঅক্সিড্যান্ট আছে, যা কিনা ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর বলে প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এছাড়া মেদ কমাতে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও যথেষ্ট ভালো ফল দেবে এই টমেটো।
যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর এই টমেটো নিয়ে আগ্রহ বহুগুণ বেড়ে গেছে বিজ্ঞানীদের। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, এই কালো টমেটোর জাত কি আগে থেকেই ছিল নাকি এটা কৃত্রিম উপায়ে তৈরি। রে ব্রাউন সাহেব অবশ্য বলেছেন, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা হাইব্রিডের মত কোন কারিগরি ঘটানো হয়নি এতে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো, তাহলে কালো টমেটো এতদিন কোথায় ছিল?
মন্তব্য চালু নেই