ফেসবুক আর এক মায়ের দ্বন্দ্ব

ব্রিটিশ মা ব্রান্ডি ম্যাকগ্লাথারি কয়েক সপ্তাহ আগে হাসপাতালে জন্ম দেন এক ফুটফুটে ছেলে সন্তান। আদর করে নাম রাখেন টিমোথি এলাই। এই শিশুর জন্ম হয়েছে অপরিপক্ক অবস্থায়। ওর নাক নেই। এমনকি নাসারন্ধ্রও নেই। এ সমস্যা নিয়ে জন্মানো দুনিয়ার ১৯ কোটি ৭০ লাখ শিশুর মধ্যে এলাইও একটি।

তবে আলোচনার বিষয় এটা নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় এসেছে অন্য বিষয়। ব্রান্ডি তার এই শিশুর কিছু পোস্ট করায় ফেসবুকের সঙ্গে শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব।

ফেসবুকের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার অনুরোধ করা হয়েছে, যেন ছবিটি সরিয়ে নেয় হয়। কারণ সেটি ‘অত্যন্ত আপত্তিকর’ এবং ‘স্নায়বিক চাপ সৃষ্টিকারী’।

শিশুটির এই বিরল সমস্যা বাদ দিলে সে পুরোপুরি সুস্থ। গত ৪ মার্চে তার জন্ম। তিন সপ্তাহ হাসপাতালে থাকার পর এখন বাড়িয়ে মা-বাবা আর দুই ভাইবোনের সঙ্গে থাকছে।

এলাইয়ের ছবিটি ফেসবুক পোস্ট করার পর একটা মানবিক আবেদন জানানো হয়। এতে অনেকে এগিয়েও আসেন। কিন্তু এই ছবি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আসতে পারে এ আশঙ্কায় এটি সরিয়ে ফেলা হয়। তবে ব্রান্ডির চরম আপত্তিতে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে ফেসবুক।

ফেসবুক ছবিটি সরিয়ে নিত বললে ব্রান্ডি প্রতিবাদ জানান। আর তখনই তার গল্পটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়।

তিনি বলেন, ‘আমার এই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা করবেন, কিন্তু ফেসবুক যদি আমার বাচ্চার গল্পটি শেয়ার করা থেকে আমাকে বিরত রাখে তাহলে আমি শেষ হয়ে যাবো!’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি খুব অস্বস্তি বোধ করি যখন দেখি অর্ধনগ্ন নারী, মাদক এবং নেতিবাচক বিষয়ের ছবি পোস্ট করা হয়। কিন্তু আমার বাচ্চার বিষয়টি বিতর্কিত। মানবিকতা কি উঠে গেল?’

ব্রান্ডি বলেন, আর দশটা মায়ের মতো তার আশা ছিল একটি সুস্থ সবল শিশু। কিন্তু এলাই তেমনটি হয়নি। সে নাক ছাড়া জন্ম নিয়েছে।

এই পরিবারের সামনে দুটি অপশন আছে। এলাইয়ের একটি বড় অপারেশনের জন্য তার বয়স ১০/১২ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে অথবা এক বছর বয়স থেকে ছোট কিছু ধারাবাহিক অপারেশনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

তবে এর জন্য দরকার প্রচুর টাকা। এলাইয়ের পরিবার GoFundMe নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলেছে। ইতিমধ্যে তারা ৪০ হাজার ডলার জোগার করতে পেরেছেন।

ফেসবুকের নীতি অনুযায়ী, নগ্ন, সহিংস, নিষিদ্ধ, আপত্তিকর, বিতর্কিত ছবি বা ভিডিও করা নিষিদ্ধ। কেউ পোস্ট করলেও তা সরিয়ে ফেলে কর্তৃপক্ষ।



মন্তব্য চালু নেই