রমজানে জুমা: কীসের বৃষ্টি, কীসের পানি
মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে থেমে থেমে চলা বৃষ্টিতে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সড়কে হাঁটুপানি জমে গেলেও মসজিদগুলো দেখে তা বোঝার উপায় ছিল না। শুক্রবার ছিল রমজানের চতুর্থ শুক্রবার। শুক্রবার থেকে রোজা শুরু হওয়ায় এবারের রমজান মাসে ৫টি শুক্রবার পাওয়া যাচ্ছে।
বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ঢাকার মসজিদগুলোতে নেমেছিল মানুষের ঢল। বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়েও অনেকে জামাতে নামাজ পড়েছেন। নামাজ শেষে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়েছে।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ পড়তে বেলা ১১টা থেকেই আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করেই তারা ছুটছিল মসজিদের দিকে। সাড়ে ১২টার মধ্যে জাতীয় মসজিদ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। তবে মানুষের ঢল তারপরও থামছিল না। পরে মসজিদের ভেতরে যারা জায়গা পাননি তারা মসজিদের সিঁড়ি ও রাস্তায় জায়নামাজ, পলিথিন ও কাগজ বিছিয়ে বৃষ্টির মধ্যে নামাজ পড়েন।
এছাড়া মিরপুরের রোকেয়া সরণির মসজিদ, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়ার মসজিদেও জুমার নামাজে মুসল্লিদের ভিড় ছিল। ভেতরে জায়গা না পাওয়ায় এসব মসজিদের সামনেরও মূল সড়কে নামাজ পড়তে দেখা গেছে মুসল্লিদের।
কাজীপাড়ার বাসিন্দা মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘এখানে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। বছরের পর বছর এ ধরনের অবস্থা থাকলেও কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই। এই যে, পানি জমে আছে এখানে আজ অনেক মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেনি। কেউ ফুটওভারব্রিজের উপরে নামাজ আদায় করেছেন।’
মোবারক আলী নামে আরেকজন বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগেই মসজিদের ভেতরে জায়গা না পেয়ে ফুটপাতে বৃষ্টিতে ভিজে নামাজ আদায় করেছি। রাস্তায় পানি জমে থাকায় আজ মানুষের নামাজ পড়তে অনেক কষ্ট হয়েছে। তারপরও জুমার নামাজ আদায় করতে পেয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।’
জুমার নামাজের আগে খুতবার বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, ‘বছরের যেকোন জুমাই সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। আর রমজানের জুমা আরও অধিক ফজিলতপূর্ণ। আগামী ২৭ রমজানের রাত পবিত্র শবে কদর। বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ রাত। এই রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম রাত।’
তিনি বলেন, ‘এই সে রাত, যে রাত সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের পূর্ণ একটি সূরা অবতীর্ণ হয়েছে। রমজানের আগমনের আগেই হজরত মুহাম্মদ (সা.) সবাইকে এ রাতের ফজিলতের ব্যাপারে সজাগ করে দিয়েছেন। বলেছেন, এ রাত থেকে যে বঞ্চিত হয়, সে যেন সব কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হল।’
তিনি আরো বলেন, ‘শবে কদরের রাতে জেগে নফল নামাজ কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, তাসবিহ-তাহলিল, তাওবা-ইস্তিগফার, দোয়া-দুরুদ সবই করা যাবে। নফল নামাজের বিশেষ কোনো নিয়ম নেই। স্বাভাবিক নিয়মেই পড়তে হবে। শবে কদরের যথাযথ মূল্যায়ন করা সবার কর্তব্য। এই রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আমরা অশেষ সওয়াব অর্জন করব। তাওবা-ইস্তিগফারের মাধ্যমে নিজেদের গোনাহ মাফ চাইবো।’
মন্তব্য চালু নেই