রংপুরের মিঠাপুকুরে ২শ’ গাড়ি ভাঙচুর

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধের পাশাপাশি রংপুরের মিঠাপুকুরে জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। হরতালের সমর্থনে দুই শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করেছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। এ সময় আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় একটি পিকআপ ভ্যানে।

শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের মিঠাপুকুর পয়েন্টে এসব গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

হরতালের সমর্থনে রোববার সকালে মিঠাপুকুরের জায়গীরহাট এবং দুলাহপুরে বিক্ষোভ করেছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। হরতালের কারণে মিঠাপুকুর ছিল স্থবির। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে সতর্ক নজরদারীতে রয়েছে।

এছাড়া নগরীর দর্শনায় মহাসড়কে পেট্রোল ঢেলে আগুন এবং বালুর বস্তা ও গাছের গুড়ি ফেলে বিক্ষোভ করে মহানগর ইসলামী ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা।
এদিকে, হরতাল ঘোষণার পর শনিবার সন্ধ্যা থেকেই মিঠাপুকুর সদরসহ প্রতিটি বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রাত ৯টার পর থেকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে হরতাল সমর্থকরা। শুরু হয় ইটপাটেকল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের জায়গীরহাট টাওয়ারের কাছে একটি পিকআপ ভ্যান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় হরতাল সমর্থকরা। এ ঘটনার পর মিঠাপুকুর এবং মহাসড়ক এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ বিজিবি ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়। তাদের পাহারায় যানবাহন চলাচল অব্যাহত রাখার চেষ্টা করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাতে টিঅ্যান্ড এলাকায় ১০-১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে হরতাল সমর্থকদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে।
রাতভর থেমে থেমে মহাসড়কে যানবাহনে ভাঙচুর চালায় হরতাল সমর্থকরা। রোববার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ তা অব্যাহত থাকে। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দুই শতাধিক যানবাহন ভাঙচুর করা হয়।

সকালে মহাসড়কে গিয়ে দেখা গেছে, যানবাহনে কাচের টুকরার স্তুপ। পুলিশ এসব পরিস্কার করে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করছে।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হোসেন জানান, জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা চোরাগুপ্তাভাবে যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা করছে। কিন্তু পুলিশের সতর্ক নজরদারির কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করতে শনিবার রাতে ছয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, অবরোধের সমর্থনে রোববার সকাল থেকে রংপুর মহানগরীর হাসনাবাজার এলাকার রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে বিএনপি নেতাকর্মীরা।

রংপুর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের জেষ্ঠ্য উপ-পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নাশকতার অভিযোগে জামায়াত-শিবিরের চার এবং বিএনপির এক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

উল্লেখ্য, অবরোধের পঞ্চম দিন শনিবার মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক শাহ মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই সেখানে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে বিক্ষোভ করে রোববার হরতাল ঘোষণা দেয় স্থানীয় জামায়াত।



মন্তব্য চালু নেই