যে ১১টি ভুলের কারণে আপনি মিলিয়নিয়র হতে পারছেন না

আগে থেকেই নিশ্চিত কোনো উপায় নির্ধারণ করে মিলিয়নিয়র হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু কিছু পদক্ষেপ রয়েছে যেগুলো গ্রহণ করলে আপনি নিজেকে কয়েক মিলিয়ন ডলার সম্পদ অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। এর মাধ্যমে আপনি মিলিয়নিয়র হওয়ার পথের বাধাগুলোও দুর করতে পারবেন।
আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন ভুলগুলোর কারণে আপনি ধনী হতে পারছেন না এবং সেগুলো মোকাবেলার উপায় কী:
১. স্থির সংকল্পের অভাব
কঠিন সময়ে সামনে এগিয়ে চলার স্থির সংকল্পের অভাবে আপনি আপনার নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে অক্ষম হয়ে পড়বেন। এটি আসলে মনের আভ্যন্তরীণ লড়াই-সংগ্রামে জয়ী হওয়ারও একটি বিষয়।
শুধু কোথাও থেকে মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা বা কঠোর পরিশ্রম করার মধ্যমেই ধনী হওয়া যায়না। ধনী হওয়ার মানে হলো নিজেকে এমন একজন হিসেবে গড়ে তোলা যিনি মিলিয়ন ডলার উপার্জনের পর তার সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে পারবেন।
২. নিজের ধারণাগুলোর বাস্তবায়ন না করা
মিলিয়ন ডলারের মালিক হওয়ার চিন্তা করা এক কথা আর সে চিন্তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করা আরেক কথা। মিলিয়নিয়ররা কখনো শুধু বসে বসে অন্যদের জীবনের অগ্রগতি দেখেন না। মিলিয়নিয়ররা নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে নিজেদেরকে সহযোগিতা করতে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
কারো কোনো ধারণা ভালো কি খারাপ তা নির্ণয় করা যায় তিনি তার ধারণাটিকে ঘিরে কোনো কম্পানি শুরু করছেন কিনা তা দেখে। কোনো ধারণা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে তা মূল্যহীন হয়ে পড়ে।
৩. সৃজনশীলতার অভাব
আপনার নিজের যদি কোনো ধারণা না থাকে তাহলে আপনি গড়পড়তা মানুষদের মতোই। আর গড়পড়তা মানুষেরা মিলিয়নিয়র হতে পারেন না।
ভালো ও মূল্যবান ধারণার উদ্ভাবন অনেকটা শরীরচর্চার মতো। আপনি যদি দু্ই সপ্তাহ ধরে ব্যায়ামাগারে না যান তাহলে শরীরের আকার ঠিক রাখাটা কঠিন হয়ে পড়বে। মূল্যবান ধারণার উদ্ভাবন প্রক্রিয়াও একই রকম।
একটি ভালো ও মূল্যবান ধারণা আবিষ্কারের জন্য আপনাকে অন্তত ১০০ থেকে ১০০০টি বাজে ধারণা করতে হবে। আর ওই একটি ভালো ধারণাই হতে পারে মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের একটি ধারণা।
৪. নিজের শিল্পে যোগাযোগ না গড়া
মিলিয়নিয়রদের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো তারা পারস্পরিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। আপনি যদি অলস লোকদের সঙ্গে সময় কাটান যারা বিচক্ষণতার সঙ্গে তাদের অর্থের ব্যবস্থাপনা করতে অনিচ্ছুক, তাহলে আপনিও জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারবেন না।
সুতরাং নিজের খাতের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলার বিষয়টিকে সবসময়ই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখবেন। এবং বিনিয়োগ ও সম্পদ বাড়িয়ে তোলার জন্য দিক নির্দেশণা পেতে একজন পৃষ্ঠপোষকও খুঁজে বের করুন।
৫. সকলেকেই খুশি করার চেষ্টা
সকলকে সন্তুষ্ট করার প্রচেষ্টায় অযথা নিজের সময় নষ্ট করবেন না। তারচেয়ে বরং নিজের ব্যক্তিগত লক্ষ্য অর্জনে সময় ব্যায় করুন। চলার পথে এমন অনেক লোককেই পাবেন যারা আপনাকে পছন্ত করবেনা, আপনার স্বপ্নে বিশ্বাস করবেনা বা আপনি যাতে বিশ্বাস করেন সে দিকে আপনাকে অনুসরণ করবেন। এরা হয়তো অনেক বড় মানুষ হতে পারে। কিন্তু আপনার জন্য সঠিক লোকটি এরা নয়। সুতরাং তাদের নিয়ে আপনার মাথা ঘামানোরও কোনো দরকার নেই।
৬. নিজের অগ্রগতির অনুসরণ না করা
আপনি যদি নিজের অগ্রগতির ওপর ঘনিষ্ঠ নজর না রাখেন তাহলে আপনি কীভাবে বুঝবেন যে আপনি আপনার লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছেছেন কিনা? নিজেদের সম্পর্কে আমরা যা পরিমাপ করি আমরা আসলে তাই হয়ে উঠি। সুতরাং প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার আপনার পরিমাপগুলোর বিপরীতে নিজের অগ্রগতির মূল্যায়ন করুন।
৭. রুটিন এড়িয়ে চলা
নির্দিষ্ট রুটিন মেনে কাজ করলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্লান্তি এড়িয়ে চলা যায়। সুতরাং নিজের জন্য মানানসই একটি রুটিন তৈরি করে সে অনুযায়ী জীবন-যাপন করুন। তাহলেই কাঙ্খিত সাফল্য হাতে এসে ধরা দেবে।
৮. অতিবেশি আরামদায়ক জীবন যাপন করা
রুটিন তৈরি করে কাজ করলে আপনার দিনগুলো অনেক সহজ হয়ে আসবে এবং ছোট ছোট সিদ্ধান্ত গ্রহণে মস্তিষ্কের শক্তির অপচয় এড়ানো যাবে। এছাড়া আরামদায়ক জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে আপনি মিলিয়নিয়র হওয়ার দৌঁড়েও পিছিয়ে পড়বেন।
আপনি যদি মিলিয়নিয়র হতে চান তাহলে আপনাকে চারিত্রক দৃঢ়তা অর্জন করতে হবে। এবং আপনাকে আরো বড় কিছু করার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। আপনাকে বুঝতে হবে যে, আপনি হয়তো প্রয়োজনীয় কাজ করতে গিয়ে আরাম থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
৯. বিষাক্ত লোকদের সঙ্গে সময় ব্যয় করা
আপনি যে বিষাক্ত লোকদের সঙ্গে সময় কাটান তারা আপনার ধারণার চেয়েও বেশি পরিমাণে আপনার উৎপাদনশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন।
বিষাক্ত লোকেরা আপনাকে টেনে নিচে নামাবে। ভালো লোকেরা আপনাকে ভালোবাসবে এবং আপনাকে উৎসাহিত করবে। এটি একটি ধাক্কা-টানা প্রক্রিয়ার মতো। সুতরাং ভালো লোকদেরকেই জয়ী হতে দিন। বিষাক্ত লোকদের সঙ্গে থাকলে আপনি সফল হতে পারবেন না। কারণ সবসময়ই আপনাকে টেনে নিচে নামাতে চাইবে।
১০. শুধু টাকার কথাই ভাবা
দু্ই ধরনের লোক আছেন। ১. যারা শুধু টাকা উপার্জনের বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেন। ২. যারা এমন পণ্য ও কম্পানি গড়ে তুলতে চান যা পৃথিবীকে বদলে দেবে। দ্বিতীয় ধরনের লোকেরা তারা যা তৈরি করেন তা ভালোবাসেন। এরা অর্থ উপার্জনের বিষয়টিকে তারা যা করতে ভালোবাসেন তা আরো বেশি করে করার জন্য একটি সহায়ক উপাদান হিসেবে বিবেচনা করেন।
অর্থই যদি আপনার ব্যবসার একমাত্র লক্ষ্য হয় তাহলে আপনি আপনার কম্পানির জন্য পরিষ্কার কোনো দিক নির্দেশণা তৈরি করতে পারবেন না।
এমন একটি পণ্য উদ্ভাবন সম্ভব যা সকলেই চায়। সেই পণ্য বিক্রি করে ধনী হওয়ার মাধ্যমে বেশিরভাগ ব্যবসা বিকশিত হয়ে এবং বেড়ে চলে। আর উপার্জিত অর্থ পুনরায় বিনিয়োগ করে অনবরত নতুন নতুন উদ্ভাবন করতে থাকে।
১১. অন্যদের ওপর দোষ চাপানো
আপনি নিজেই শুধু নিজেকে মিলিয়নিয়র বানাতে পারেন। ধনী লোকেরা নিজেদের কাজ নিজেরাই করেন এবং নিজেরাই এর দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে অনেকে সবকিছুর জন্য শুধু অন্যদের ওপর দোষ চাপাতে চান। এর ফলে তারা আসলে কিছুই অর্জন করতে পারেন না।
সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার



মন্তব্য চালু নেই