যে দুই ঘটনা জয়ললিতার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়!

সেলভি জয়ারমন জয়ললিতা থেকে আম্মা হয়ে ওঠার ঘটনা আজ উইকিপিডিয়া, গুগল সার্চ ইঞ্জিনের দৌলতে গোটা ভারতবাসীর জানা৷ শুধু দেশ কেন, মৃত্যুর একদিন আগে থেকেই গোটা বিশ্বে টপ ট্রেন্ডিং খবর হয়ে গিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর সাবেক মুখ্যমন্ত্রী৷

তাহলেই বোঝা যায়, কত মানুষ তার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছিলেন৷ কিন্তু জয়ারমন জয়ললিতা থেকে পুরাতচি তালাইভি (বিপ্লবী নেত্রী) হয়ে ওঠার নেপথ্যে দু’টি ঘটনা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল৷ তাজ্জব হচ্ছেন? এমন কোন দুই ঘটনা যা জয়ললিতাকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিল, তা নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে?

সেই দুই ঘটনা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়ার ফেসবুক পোস্ট নিয়ে তোলপাড় নেটদুনিয়া৷ জয়ললিতার জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনার কথা লিখে ইতিমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছেন চারণ্য কন্নন নামে ওই পড়ুয়া৷ তাঁর পোস্ট তিরিশ হাজারের বেশি শেয়ার হয়েছে৷

এখন প্রশ্ন, এমন কী রয়েছে সেই পোস্টে?

কন্ননের মতে, জয়ললিতার ঔদ্ধত্যই তাকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিল৷ গতকাল, মঙ্গলবার যখন চেন্নাইয়ে মেরিনা বিচে গুরু এম জি রামচন্দ্রণের সমাধির পাশেই আম্মার মরদেহকে সমাধিস্থ করা হল তখন হয়তো সবাই ভাবছিলেন, গুরুর পাশেই শিষ্যার স্থান তাই এমজিআরের পাশেই মৃত্যুর পর শায়িত থাকতে চান জয়ললিতা৷ অথচ মাত্র ১৬ বছর বয়সে গুরু তথা তামিল চলচ্চিত্র জগতের সুপারস্টার এমজিআরকে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছিলেন জয়ললিতা৷ এমজিআরের বিপরীতে কেরিয়ারের প্রথম ছবি৷ ছবির নাম ছিল আয়রাতিল ওরুভান (হাজারে এক)৷

কোথায় একরত্তি মেয়ে ভয়ে গুটিসুটি মেরে থাকবে তা না এমজিআর ফিল্মের সেটে প্রবেশ করতেই পরিচালক থেকে শুরু করে স্পটবয়, সবাই যখন চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান দেখাল, জয়ললিতা ঠাঁয় বসেই থাকল৷ বইয়ে মুখ গুঁজে৷ সুপারস্টারকে দেখতেই পেল না যেন সে৷ আর সেই ঔদ্ধত্যই নজর কেড়েছিল এমজিআরের৷ জয়ললিতার পথচলার সেই শুরু৷ তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে৷ এমজিআরের মনের মণিকোঠায় পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন জয়ললিতা৷ সৌন্দর্য, বুদ্ধিমত্তা এবং ধৈর্যের মিশেলে সাধারণ কিশোরী থেকে এক অসামান্য নারী হয়ে উঠেছিলেন জয়ললিতা৷

আরও একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন কন্নন তার পোস্টে৷ সেই ঘটনা অবশ্য জয়ললিতার রাজনৈতিক জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল বলাই যায়৷ ১৯৮৯ সাল, তামিলনাড়ুর ক্ষমতায় ডিএমকে৷ বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধির বাজেট বক্তৃতার মধ্যেই শুরু হয়ে যায় শাসক-বিরোধী পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল৷ তখন ডিএমকে বিধায়কদের হাতে নিগৃহীত, লাঞ্ছিত হয়ে বিধানসভা ছাড়েন জয়ললিতা৷ শ্লীলতাহানিও করা হয় তার৷

সেইদিন তিনি প্রতিজ্ঞা নেন, মুখ্যমন্ত্রী হয়েই ফের বিধানসভায় পা রাখবেন৷ এই শারীরিক নিগ্রহ তাকে আরও দৃঢ় এবং রাজনীতির খেলায় আরও খুরধার করে তোলে৷ সেইদিন থেকে বেশভুষায় আমুল পরিবর্তন এনে নিজের কোমলতা, চটুলতাকে ত্যাগ করে সকলের চোখে আম্মা হয়ে উঠতে শুরু করেন তিনি৷ কন্ননের মতে, পুরুষশাসিত সমাজে সম্মান আদায়ের এর চেয়ে ভাল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যেত না, তা বিলক্ষণ জানতেন জয়ললিতা৷ সংবাদ প্রতিদিন



মন্তব্য চালু নেই