যে গুনাহ থেকে বিরত থাকল তার রোজাই উত্তম

আজ থেকে শুরু হলো মহিমান্বিত মাস পবিত্র রমজানুল মুবারক। এ মাসের প্রথম দশক হলো রহমতের। ইতিমধ্যে আমরা অতিবাহিত করেছি রহমতের একটি রজনী। এ দেশের কোটি কোটি মুমিন মহান প্রভুর রহমতের আশায় প্রথম তারাবিহও পড়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন।
মুমিন মুসলমানদের ওপর এ মাসের কিছু হক রয়েছে। এই হকগুলো যথাযথ আদায় করতে পারলে একজন মুমিনের পক্ষে এ মাসের রহমত ও বরকত অর্জন করা সম্ভব। রমজানের প্রধান ও অন্যতম হক হলো দিনে রোজা রাখা এবং রাতে তারাবিহ পড়া। এ দুটি কাজ এমনভাবে করতে হবে, যেন এর সঙ্গে গুনাহের কোনো ময়লা যুক্ত না হয়। তাই রমজানের আরেকটি হক হলো নিজকে গুনাহমুক্ত রাখা। গুনাহ থেকে নিজের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে পরিপূর্ণভাবে হেফাজত করা। যেমন যাবতীয় অশ্লীলতা থেকে চোখকে হেফাজত করা। যথাসম্ভব দৃষ্টি অবনত করে চলা। সব রকম লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, অহংকার, ঈর্ষাপরায়ণতা, পরনিন্দা, অন্যের প্রতি কুধারণা করা ও অন্যের ক্ষতিসাধনের পরিকল্পনার মতো জঘন্যতম সব গুনাহ থেকে অন্তরকে পরিপূর্ণ বিরত রাখা। এছাড়া অহেতুক কথাবার্তা, গানবাজনা, গিবত, অযথা গল্প-গুজব শোনা থেকে কানকে সম্পূর্ণ বিরত রাখা। আজেবাজে কথাবার্তা, অন্যের দোষ চর্চা, গালাগাল, মিথ্যা ও কৌতুক পরিহাস ইত্যাদি থেকে জবানকে সম্পূর্ণরূপে বিরত রাখা। যেকোনো ধরনের অন্যায় কাজ, চুরি, নির্যাতন ইত্যাদি থেকে হাতকে বাঁচিয়ে রাখা এবং যাবতীয় খারাপ কাজ ও খারাপ স্থানে যাওয়া থেকে দূরে থাকা। মোদ্দাকথা, মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.) যেসব বিষয়কে গুনাহ বলেছেন, সেগুলো থেকে নিজেকে অনেক দূরে সরিয়ে রাখা।
কোরআন হাদিসের আলোকে এ কথা প্রতীয়মান হয়, কোন ব্যক্তি রমজানের দিনে রোজা রাখল ও রাতে তারাবিহ ও ফরজ নামাজগুলো জামাতের সঙ্গে আদায় করল এবং যাবতীয় গুনাহ থেকে নিজকে সম্পূর্ণ বিরত রাখল তার রোজা আল্লাহর কাছে অনেক উত্তম ওই ব্যক্তির রোজা থেকে, যে রমজানে খুব বেশি ইবাদত করল এবং সদকা খয়রাত করল কিন্তু গুনাহ থেকে বিরত রইল না। তাই একজন মুমিনকে পবিত্র রমজানে ফরজ-ওয়াজিব ইবাদতগুলো ও তারাবিহ আদায়ের পর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গুনাহ থেকে বিরত থাকা। এটি রমজানের অনেক বড় হক মুমিনের ওপর। পবিত্র এ মাসের যেমন রয়েছে ফজিলত সেই সঙ্গে কিছু আহকাম ও বিধিবিধানও রয়েছে। এ বিষয়গুলো একজন মুসলমানের জন্য জানা থাকা জরুরি। মহানবী (সা.) পবিত্র রমজান আগমনকালে সাহাবাগণকে এ মর্মে সুসংবাদ দিতেন, রমজান বরকতময় মাস, তোমাদের কাছে উপস্থিত হয়েছে। পুরো মাস রোজা রাখা আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্য ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দরজা খুলে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় জাহান্নামের সব দরজা। দুষ্ট শয়তানদের এ মাসে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। এ মাসে আল্লাহ এমন একটি রজনী দান করেছেন, যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সেই বঞ্চিত। (তিরমিজি)



মন্তব্য চালু নেই