যে কারনে আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন

মানুষ খুবই আবেগপ্রবণ, অনেক সময় না চাইলেও মনে আবেগের সৃষ্টি হয় । কিন্তু বহু মানুষ সেই আবেগকে বাইরে প্রকাশ হওয়া থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারলেও বহু মানুষ আবেগ নিয়ন্ত্রন করতে পারেন না। পরিস্থিতির কারনেই মানুষের মনে এই ধরনের আবেগের সৃষ্টি হয় । আবেগ একদিকে যেমন মানুষের খুব বড় শক্তি বা আশা কিন্তু অন্যদিকে সময় পরিবর্তনে এই আবেগই হয়ে দাঁড়ায় তার কাছে বড় সমস্যার কারন ।

কিছু কাজ আবেগের বশে করে ফেলার পর পরিস্থিরির পরিবর্তনে তা মানুষের জীবনে বড় ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে । অতিরিক্ত আবেগ নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে মানসিক ভাবে তা মানুষকে দুর্বল করে ফেলে । কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সব চাইতে বাধা দেয় এই অতিরিক্ত আবেগ । তাই আবেগকে যত বেশি নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন তত বেশি সমস্যা এড়াতে পারবেন, তবে এই সবই নির্ভর করে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির উপর । তাই কিছু আবেগ চিনে নিন যা মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেলে আপনি পড়বেন সমস্যায় । সবথেকে বড় কথা হল এই অতিরিক্ত আবেগ থেকে প্রেসার, ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে মানসিক অসুখ হওয়ার খুব বেশি প্রবনতা দেখা যায় এবং প্রতিটি দেশে আক্রান্তের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে ।

মাত্রাতিরিক্ত ভালোবাসা

ভালোবাসা খুবই গুরুতেওপূর্ন এবং সুন্দর এক আবেগ যা মানুষের জীবনে না থাকলে সে ভালভাবে বাঁচতেই পারে না ।প্রত্যেক মানুষের জীবনেই এই আবেগের জন্ম হয় । জীবনকে পরিপূর্ণতা দেয় এই ভালোবাসা নামক আবেগ । কিন্তু এই ভালবাসাই যদি মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তাহলে তা ভয়ঙ্কর আকার নিতে থাকে এবং জীবনকে বাস্তবতা থেকে দূরে সরিয়ে দেয় । প্রতিনিয়ত সংবাদপত্রে মাত্রাতিরিক্ত ভালভাসার ফলে আরমহন থেকে খুন বিভিন্ন খবর দেখতে পান । এই আবেগটি অতিরিক্ত মাত্রায় হলে তা শুধুমাত্র আপনার না আপনার আশেপাশের মানুষদের জীবন শেষ করে দেয় । তাই সর্বদা চেষ্টা করবেন আপনার ভালবাসা যেন কখন নিয়ন্ত্রন বা স্বাভাবিকতার মাত্রা না ছাড়িয়ে যায় ।

হতাশা
হতাশা এই নামটির সঙ্গে ভাল বা শুভ কথাগুলি সম্পূর্ণ পরিপন্থী । হতাশা সব মানুষের জীবনে আসে কোন না কোন সময়ে, কিন্তু তাঁকে দ্রুত না সরিয়ে ফেলতে পারলে ঘন অন্ধকার নেমে আসে জীবনে । এই আবেগটি মনে জাঁকিয়ে বসে যখন মানুষ কোনো কাজে বিফল হন এবং জীবনের কোন ইচ্ছা অপূর্ণ থাকে । বিফলতার জন্য হতাশার জন্ম মনে হতেই পারে । কিন্তু একে বাড়তে দেয়া না দেয়া সম্পূর্ণভাবেই আপনার হাতে । হতাশাকে যতো আপন করে নেবেন ততোই আপনি মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বেন এবং এর ফলে আপনার ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে ।

রাগ
রাগ নামক আবেগটি কম বেশি সমস্ত মানুষের মধ্যে থাকে, এবং মাঝে মধ্যে এই আবেগের কারণও ভুল হয় না । কিন্তু সেই আবেগ যদি ভুল স্থানে এবং ভুল পরিস্থিতিতে বেরিয়ে আসে তার ফল মোটেই সুখদায়ক হয় না । সমীক্ষায় বলা হয়ে থাকে রাগী মানুষদের মন খুব সরল ও পরিষ্কার হয়ে থাকে। কিন্তু সেই রাগী মানুষ নিজের রাগ যখন প্রকাসজ করেন তখন আশেপাশের মানুষদের মন একেবারেই পরিশকার হয় না বরং বিতৃষ্ণায় ভরে ওঠে । হয়ত রাগ কমে গেলে তারা নিজেরাও বুঝতে পারেন যে তারা ভুল করেছেন কিন্তু তখন সমস্ত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয় না । এছাড়াও অতিরিক্ত ক্রোধের প্রদর্শন আপনার কর্মক্ষেত্রে বা যেকোন পরিস্থিতিতে উন্নতির ক্ষেত্রে অন্তরায় তৈরি করতে পারে ।

ঈর্ষা
ঈর্ষা অন্য মানুষের উন্নতি দেখে এবং নিজের সঙ্গে তার তুলনা করেই মনে জন্ম নিয়ে থাকে । এই হিংসা এবং ঈর্ষা মানুষকে অনৈতিক পথে পরিচালিত করতে বাধ্য করে । মানুষ যখন অন্যের উন্নতি দেখে এবং নিজের সাথে তুলনা করে মনে মনে ঈর্ষার জন্ম হয় তখন তারা নিজেরাও বোঝেন না তারা মানসিকভাবে কতোটা ভেঙে পরছেন প্রতিনিয়ত নিজেকে অন্য আরেকজনের সাথে তুলনা করে । এটি অত্যন্ত ক্ষতিকর আবেগ, এর থেকে বহু অপরাধ্মূলক কাজের জন্ম হয় ।



মন্তব্য চালু নেই