যে কারণে বেগুন খাওয়া ভালো

বেগুন কম ক্যালরির একটি সবজি। সারা পৃথিবীতেই এটি উৎপাদিত হয়। চাষের উপর ভিত্তি করে বেগুন নানা আকার-আকৃতির ও বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। উদ্ভিদবিদ্যা অনুযায়ী বেগুণ একটি ফল, সবজি নয়। বেগুণ গাছ অনেকটা টমাটো গাছের মতোই হয়। নামে বেগুন হলেও এর আছে অতুলনীয় গুণাবলী। বেগুনের নানাবিধ গুনাগুণ সম্পর্কে জানবো আজ।

১। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় আয়রন, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য খনিজের যোগান দেয় বেগুন।

২। বেগুনে অত্যাবশ্যকীয় ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে যা রক্ত সংবহনকে উন্নত করতে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কের পুষ্টি সাধনে সাহায্য করে। মনে রাখবেন বেগুনের বেশিরভাগ পুষ্টি উপাদানই থাকে এর খোসাতে/ চামড়াতে। তাই বেগুনের চামড়া ফেলে দেবেন না।

৩। বেগুনে ফাইবার থাকে যা পরিপাক নালীকে সুরক্ষা দেয়। নিয়মিত বেগুন খেলে কোলন ক্যান্সার থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়।

৪। বেগুনের ক্যালরির মাত্রা খুবই কম থাকে, ১ কাপ বেগুনে মাত্র ৩৭ ক্যালরি থাকে। বেগুনে কোন ফ্যাট থাকেনা এবং এর উচ্চমাত্রার ফাইবার পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।

৫। বহুকাল থেকেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে আসছে বেগুন। আধুনিক গবেষণায় এই নিয়মটি যাচাই করে দেখা হয়েছে। কারণ বেগুনে উচ্চমাত্রার ফাইবার ও নিম্নমাত্রার দ্রবণীয় শর্করা থাকে।

৬। হৃদস্বাস্থ্যের জন্য ও উপকারী বেগুন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, বেগুন খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে পারে। কিন্তু এই উপকারিতা পাওয়ার জন্য বেগুনকে সঠিকভাবে রান্না করতে হবে। ভাঁজা বেগুনে ফ্যাট থাকে। তাই ভাজার পরিবর্তে ৪০০ ডিগ্রী তাপে বেক করুন বেগুন তাহলেই আপনি বেগুনের পুষ্টি উপাদান ও চমৎকার গন্ধ পাবেন।

৭। বেগুনে উচ্চমাত্রার বায়োফ্ল্যাভোনয়েড থাকে যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং স্ট্রেস কমাতে পারে।

৮। নিয়মিত বেগুন খেলে রক্ত জমাট বাধতে বাঁধা দেয়। কারণ বেগুনে ভিটামিন কে ও বায়োফ্ল্যাভোনয়েড থাকে এবং এরা কৈশিকনালীকে শক্তিশালী করে।

৯। আয়রন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি খনিজ উপাদান। কিন্তু আয়রনের পরিমাণ বেশি হয়ে যাওয়াও ভালো লক্ষণ নয়। বেগুনের ন্যাসুনিন নামক উপাদান শরীরের অতিরিক্ত আয়রন দূর করতে সাহায্য করে। এর ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।

১০। যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য বেগুন আদর্শ খাবার। এতে প্রচুর পানি থাকে এবং ক্যালরির পরিমাণ খুব কম থাকে।

১১। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হতে শুরু করে। যার ফলে মুখে বলিরেখা দেখা দেয়। বেগুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ত্বকের এ ধরণের পরিবর্তনে বাঁধা দেয়। ফলে ত্বক হয়ে উঠে উজ্জ্বল ও সুন্দর।

১২। বেগুনে সামান্য পরিমাণে নিকোটিন থাকে তাই ধূমপান মুক্ত হতে সাহায্য করে বেগুন।

টিপস :

– বেগুন কাটার জন্য ধাতব ছুরির পরিবর্তে স্টেইনলেস ষ্টীলের ছুরি ব্যবহার করুন। কারণ বেগুনের ফাইটোকেমিক্যালের সাথে ধাতুর কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন হয়।

– বেগুন কাঁটার পর লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন বা বেগুনের টুকরাগুলোর উপর লবণ ছিটিয়ে দিন। এতে করে বেগুনের তিক্ত স্বাদ দূর হবে।

– বেগুনের গায়ে দাগ থাকলে বুঝতে হবে যে এটি পুরনো এবং এর স্বাদ তিক্ত হবে।

– বেগুনের পুষ্প প্রান্তের দিকে লক্ষ করে যদি দেখেন এর মাঝে বড় কাটা দাগ আছে তাহলে এই বেগুনে কম বীজ থাকবে।

– বেগুনের চামড়া মসৃণ, উজ্জ্বল ও পাতলা হলে সেটি ভালো বেগুন।

– আস্ত বেগুন বেক করতে চাইলে এর চামড়ায় কিছু ছিদ্র করে নিন। এতে ভাপ বেরিয়ে যেতে পারবে।



মন্তব্য চালু নেই