যে কারণে প্রতিদিন বই পড়া উচিত

একটা সময়ে অবসরটুকু বই পড়ে কাটানো হতো। প্রযুক্তির উন্নতি এবং সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বই পড়ার জায়গাটা টেলিভিশন, কম্পিউটার দখল করে নিয়েছে। সত্যিই কী বইয়ের চাহিদা কম্পিউটার কিংবা টেলিভিশন দ্বারা পূরণ করা সম্ভব? হাফিংটন পোষ্টের এক জরিপে দেখা যায়, ১০০০ প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকানের মধ্যে ২৮% মানুষ বিগত এক বছরে একটিও বই পড়েন নি! অথচ গবেষণা বলে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে অন্যান্য বিনোদনের চেয়ে বই পড়া অধিক কার্যকর। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন কিছু কারণ, যার কারণে নিয়মিত বই পড়া উচিত।

১। স্ট্রেস কমাতে

ইউনিভার্সিটি অফ সাসেক্স (University of Sussex) ২০০৯ সালে এক রিপোর্টে প্রকাশ করে যে, চা পান অথবা প্রিয় গান শোনার চেয়ে স্ট্রেস দূর করতে বই পড়া অধিক কার্যকর। পড়া শুরুর ছয় মিনিটের মাথায় আপনার পেশি রিল্যাক্স হতে শুরু করবে এবং একসময় স্ট্রেস দূর হয়ে যাবে।

২। মস্তিষ্কের দক্ষতা বৃদ্ধি

নিউরোলজি জার্নাল এক গবেষণায় দেখছে যে, নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস মস্তিষ্কের দক্ষতা বৃদ্ধি করে। এমনকি বয়সকালে স্মৃতিশক্তি হ্রাস সংক্রান্ত সমস্যা কমিয়ে দেয়। নিউরোলজি জার্নাল ২৯৪ মানুষ যাদের বয়স ৮৯, তাদের উপর জরিপ করে দেখেন, যারা মস্তিষ্কের ব্যায়াম হিসেবে বই পড়তেন তাদের স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ ছিল যারা বই পড়তেন না তাদের চেয়ে। “আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে যে, একজন মানুষের জীবনদ্দশায় অন্যান্য কার্যক্রমের সাথে মস্তিষ্ক চর্চা করাও প্রয়োজন। আর মস্তিষ্কের চর্চার জন্য বই পড়ার থেকে ভালো কোনো উপায় নেই”- লেখক রবার্ট এস.উইলসন এমনটি মনে করেন।

৩। ভালো ঘুমের সহায়ক

ভালো ঘুমের জন্য প্রয়োজন চিন্তামুক্ত মস্তিষ্ক। আর চিন্তা দূর করার জন্য বইয়ের চেয়ে ভালো কোনো উপায় নেই। ঘুমাতে যাওয়ার আগে সাথে একটি বই রাখুন। কোমল আলোতে বইটি পড়া শুরু করুন। এটি আপনার মস্তিষ্ক থেকে চিন্তা দূর করে ভালো ঘুমাতে সাহায্য করবে।

৪। সহানুভূতিশীল হওয়া

বর্তমান গবেষণায় দেখা গেছে যে, গল্প উপন্যাস পাঠককে সহানুভূতিশীল করে তোলে। ট্রান্সপোর্টেশন থিউরি অনুযায়ী, যখন মানুষ একটি উপন্যাস পড়েন তার প্রভাব ব্যাক্তিত্বের উপর পড়ে।

৫। আলঝেইমার্স প্রতিরোধ করে

ন্যাশনাল একাডেমি অফ সাইন্স ২০০১ সালের এক গবেষণায় প্রকাশ করে, যারা মস্তিষ্কের ব্যায়াম যেমন পড়া, ধাঁধার সমাধানের মতো কাজগুলো করে থাকেন তাদের আলঝেইমার্স (যা মস্তিষ্কের কোষগুলোর মৃত্যু ঘটিয়ে স্মৃতিশক্তি হ্রাস করে) হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।



মন্তব্য চালু নেই