যে কারণে খালেদার পাশে নেই প্রবীণ নেতারা

দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা আন্দোলনে রয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

আন্দোলন চললেও দৃশ্যত বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াই এককভাবেই কর্মসূচি ঠিক করছেন।

আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে জোটের শরিক জাগপা সভাপতি শফিউল আলম  বলেন, “জোটের বৈঠকে আমরা মতামত দেই ঠিকই। কিন্তু চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন খালেদা জিয়া নিজেই।”

তবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে লণ্ডনে বসবাসরত দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরামর্শকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে।

দীর্ঘ মেয়াদে চলা এই আন্দোলন বাংলাদেশে নতুন হলেও বিএনপির এতো সব রাঘব-বোয়াল রয়েছে তারা কেউই দৃশ্যপটে নেই।

বিশেষ করে দলের স্থায়ী কমিটির বেশিরভাগ নেতাদেরকে খালেদা জিয়ার আশপাশে দেখা যাচ্ছে না।এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা কথা চালু আছে। কানাঘুষাও রয়েছে।

আর বিএনপির এই শীর্ষ নেতাদের দূরে সরিয়ে রাখায় পেছনে নাকি কলকাঠি নাড়ছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের দু/একজন কর্মকর্তা।

অভিযোগ রয়েছে, ঐ কর্মকর্তারা খালেদা জিয়াকে দৃশ্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলছেন। তাদের কারণেই নাকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোকোর মৃত্যুর পর শোক জানাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফেরত যান।

সম্প্রতি খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য বিএনপির কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য আগ্রহ নিয়ে সেখানে গেলে গেট থেকেই তাদেরকে বিদায় করে দেয়া হয়।আর এ পেছনেও নাকি হাত রয়েছে ঐ বিশেষ কর্মকর্তাদের।

একটা লম্বা সময় ধরে চেয়ারপারসনের সঙ্গে স্থায়ী কমিটির নেতাদের দেখা সাক্ষাৎ ও বৈঠক হচ্ছে না।

অথচ যেকোনো আন্দোলনের সময় দলের নীতি নির্ধারকদের দফায় দফায় বৈঠকের সংস্কৃতি আমাদের দেশে দীর্ঘ দিনের।

ঐ বৈঠকেই দলের আন্দোলনের গতি প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা হয় এবং তার ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক হয়।

প্রশ্ন দেখা দিয়েছে চেয়ারপারসন নিজেই কি এসব নেতাদের এখন এড়িয়ে চলছেন?

এ নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিনিধির কাছে আক্ষেপ করে বলেন, “আমাদের আর কি দরকার আছে?”

আান্দোলন পরিকল্পনা আগে ভাগে ফাঁস হয়ে যাবে-এই আশঙ্কায় দলের প্রবীণ নেতারা দলের চেয়ারপারসনের নাগাল পাচ্ছে না। দলের এই দুঃসময়ে চেয়ারপারসনের কাছাকাছি থাকতে চাইলেও সে সুযোগ পাচ্ছে না প্রবীণ নেতারা।

দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতি এই অবহেলার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায় ভিন্ন কথা। বিএনপির শীর্ষ অনেক নেতার ওপর খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আস্থাহীনতাই এর জন্য দায়ী।

এর আগে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর পরই ভেতরের খবর ফাঁস হওয়ার সূত্র ধরে দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতি এই আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। এবং এটা এখন প্রকট হয়ে উঠেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা “দলের নির্দেশনা অনুযায়ি আমরা কাজ করি। ব্যক্তিগতভাবে কিছু চিন্তা করার সুযোগ নেই।”



মন্তব্য চালু নেই