যেসব পণ্য কখনোই সেকেন্ড হ্যান্ড কেনা উচিৎ নয়

সেকেন্ডহ্যান্ড কেনাকাটার ব্যাপারে অনেকে নাক সিটকে ফেলেন। কিন্তু এটা সত্যি যে অনেক সময়েই আসলে সেকেন্ড হ্যান্ড জিনিসপত্র কিনলে দামটা কম পড়ে। যেমন সেকেন্ড হ্যান্ড বইয়ের জন্য তো নীলক্ষেত রীতিমতো প্রসিদ্ধ। এই আকাশছোঁয়া দামের বাজারে অনেকেই তাই সেকেন্ড হ্যান্ড জিনিস কিনতে দ্বিধা করেন না। তবে কিছু কিছু পণ্য কেনার ক্ষেত্রে সেকেন্ড হ্যান্ডের পরিবর্তে নতুন করে কেনাই ভালো। কেন বলছি এ কথা? চলুন এই ফিচারে দেখে নিই কী কী পণ্য কী কারণে সেকেন্ডহ্যান্ড কেনা উচিৎ নয়।

১) হেলমেট

হেলমেট পরার অর্থ হলো আপনি একটি দুর্ঘটনা থেকে বাঁচবেন। একটি দুর্ঘটনা, একাধিক নয়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে একটি দুর্ঘটনায় পড়ার পর সেই হেলমেট আর আপনাকে পূর্ণ সুরক্ষা দিতে পারে না। বাইরে থেকে দেখে বোঝা না গেলেও অনেক সময়ে হেলমেটের গড়নে দুর্বলতা থেকে যায় দুর্ঘটনায় পড়ার পর। এ কারণে হেলমেট নতুন কেনাই ভালো।

২) গাড়ির টায়ার

হেলমেটের মতোই, টায়ারও অ্যাক্সিডেন্টের পর কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে কিছুটা হলেও। এতে তাকে নিয়ন্ত্রণ করাটা কঠিন হয়ে পড়ে। এ কারণে টায়ার সেকেন্ডহ্যান্ড কিনলেও নিশ্চিত হয়ে নিন তা কোনো অ্যাক্সিডেন্টে পড়েছিল কিনা।

৩) অন্তর্বাস এবং সুইম স্যুট

এসব পণ্য তো সেকেন্ড হ্যান্ড কেনা মোটেই উচিৎ নয়। যদিও গরম পানিতে ফুটালে জীবাণু দূর হয়। কিন্তু আরেকজনের পরিহিত অন্তর্বাস বা সুইম স্যুট পরার অর্থ হলো এগুলো সহজেই ছিঁড়ে বা ফেটে যেতে পারে। তখন আপনাকে পড়তে হতে পারে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে।

৪) বিছানার ম্যাট্রেস বা তোশক

যে কোনো ব্যবহৃত তোশকে থাকতে পারে ছারপোকা। এছাড়া তোশকটাকে পুরোপুরি ধুয়ে পরিষ্কার করার সুযোগ নেই বলে আগে যে ব্যবহার করেছিলো তার শরীরের জীবাণুও আপনার শরীরে ছড়াতে পারে। এ কারণে তোশক নতুন কেনাই ভালো। একই কারণে স্থায়ীভাবে গদি লাগানো চেয়ার, সোফা এগুলোও নতুন কিনুন। বিছানার চাদর, বালিশের কভারের ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে।

৫) ল্যাপটপ এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস

ল্যাপটপ, ই-রিডার, ট্যাবলেট, এমপিথ্রি প্লেয়ার- এগুলো ব্যবহারের সময়ে হাত থেকে পড়ে যায়, বাড়ি লাগে, খাবার-পানিয় পড়ে এদের ওপরে। ফলে ব্যবহার করতে করতে এদের কার্যকারিতা কমে যাওয়াই স্বাভাবিক। এদের তুলনায় একটা ডেস্কটপ কম্পিউটার বাড়িতে বসে থাকে, ফলে তা দেখেশুনে সেকেন্ডহ্যান্ড কেনাটা অতটা খারাপ হবে না। টিভি, ডিভিডি প্লেয়ার, কিচেনের বিভিন্ন যন্ত্র যেমন ব্লেন্ডার এবং ওভেন- এগুলোও আপনি নতুনই কিনতে পারবেন। নতুন পণ্য কিনলে বরং আপনি একটা ওয়ারেন্টি পাবেন যেটা পুরনো জিনিসে থাকবে না।

৬) জুতো

যে কোনো জুতো কেনার পর তা ওই ব্যক্তির পায়ের আকৃতিতে মানিয়ে যায়। এ কারণে একজনের পরা জুতো আরেকজনের পায়ে ঠিকঠাকমত হবে- এই আশা করাটা ভুল। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আপনি পায়ে ব্যথা পাবেন। আর এসব ব্যবহৃত জুতো যে সহজে ছিঁড়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য।

৭) বাচ্চাদের ফিডার

ব্যবহৃত ফিডারে জীবাণু থাকতে পারে। এগুলো সহজে ফেটেও যেতে পারে। আর পুরনো ফিডারগুলো আসলে স্বাস্থ্যকর প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়েছিলো কিনা, সেটাও বলা যায় না। তাই বাচ্চার স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে নতুন ফিডার কেনাই শ্রেয়।

৮) পুরনো তৈজসপত্র

বিভিন্ন সসপ্যান, ফ্রাইপ্যান, কড়াই বা তাওয়া অনেকে সেকেন্ডহ্যান্ড কিনে থাকেন কারণ এগুলো বেশ শক্তপোক্ত জিনিস। কিন্তু নন-স্টিক কড়াইয়ের ওপরের আবরন উঠে যেতে থাকলে তা আপনার জন্য খারাপই বটে। এগুলো থেকে আসা কেমিক্যাল আপনার স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।

৯) মেকআপ এবং পারফিউম

এই দুই ধরণের জিনিসই একটা সময়ের পরে নষ্ট হয়ে যায়। আর অন্য কারও ব্যবহৃত মেকআপ ব্যবহারে যে তাদের শরীরের জীবাণু আপনাকে আক্রান্ত করতে পারে তা বলাই বাহুল্য।

এছাড়াও কাপড়-চোপড় এবং হ্যাট, হিজাব এসব সেকেন্ড হ্যান্ড না কেনাই ভালো। কারণ একজনের শরীরের পোশাক আরেকজনের শরীরে পুরোই বেমানান লাগবে। আর জীবাণুর ভয় যে থাকে তা বলাই বাহুল্য। আরও একটি জিনিস সেকেন্ডহ্যান্ড কিনবেন না তা হলো ডিজিটাল ক্যামেরা এবং ক্যামেরার লেন্স। কারণ ক্যামেরার লেন্সে স্ক্র্যাচ পড়লে ছবির মান নষ্ট হয়ে যাবে।



মন্তব্য চালু নেই