যেভাবে করবেন হৃদরোগ প্রতিরোধ
আমাদের দেশের অধিকাংশ পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব বয়সের মানুষই হৃদরোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। এর জন্য মূলত দায়ী করা হয় শারীরিক অনিয়ম এবং খাবার-দাবারে সচেতনার অভাবকে। অথচ আপনিও পারেন হৃদরোগের ঝুঁকিমুক্ত থাকতে। দরকার কিছু নিয়ম কানুন পালন এবং খাদ্য তালিকায় হৃদরোগ প্রতিরোধক কিছু খাবার। যেমন-
রসুন: রসুনে সালফারসমৃদ্ধ অ্যালিসিন উপাদান রয়েছে, যা রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (এলডিএল কোলেস্টেরল) কমাতে সাহায্য করে। দেহের অতিরিক্ত চর্বি ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে দেহের রক্তনালিগুলোতে স্বাভাবিক করে। রসুন রক্তের অণুচক্রিকা জমাট বাঁধার গতি প্রশমিত করার ক্ষমতা রয়েছে। কাঁচা রসুনের দু-এক কোয়া, সেদ্ধ রসুন কিংবা ড্রাগ স্টোর থেকে রসুনের ক্যাপসুল প্রতিদিন নিয়মিত খেতে পারেন। তবে যারা কোনো অসুখে ভুগছেন তারা অবশ্যই রেজিস্টার্ড ডাক্তারের নির্দেশিত ওষুধ গ্রহণসহ চিকিত্সকের পরামর্শে রসুন খেয়ে উপকার পেতে পারেন।
কাজুবাদাম: রক্তে শকর্রার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া মধ্যবয়স্কদের একটি চিরাচরিত সমস্যা। প্রতিদিন ৫ থেকে ৭টি কাজুবাদাম খেলে এ সমস্যা থেকে সহজেই পরিত্রাণ পাওয়া যায়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায় অনেকখানি।
সামুদ্রিক মাছ: ওমেগা ৩ এবং ৬ সমৃদ্ধ সামুদ্রিক মাছ নিয়মিত খেলে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক করে। উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি কমে যায় অনেকাংশে। তাই সপ্তাহে অন্তত তিনদিন খেতে পারেন টুনা, সারডিন, হেরিং, স্যালমন ইত্যাদি সামুদ্রিক মাছ।
সয়াবিন: ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ গ্রাম সয়াবিন খাওয়া উচিত। কেননা এই বয়সী মহিলাদের হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে সয়াবিন খুবই উপকারী।
টমেটো: টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লাইকোপিন। এক গবেষণায় জানা যায়, ২০ মিনিট ব্যায়ামের পর ১৫০ মিলি টমেটোর জুস ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেবে।
দুধ: শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ আর রক্ত জমাট বাঁধাতে দুধের বিকল্প নাই। তাই সব বয়সীর জন্যই দুধ উপকারী।
ফলমূল বিশেষ করে আমড়া, পেয়ারা, জাম্বুরা, লেবু, কামরাঙ্গা, আমলকি বেশি করে খেতে পারেন। এসব ফলের আঁশ শরীরে রক্তের চর্বিকে জমতে দেয় না। পাশাপাশি শাক-সবজি ও ফলমূলে যে এন্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন থাকে তা রক্তের এলডিএল-এর অক্সিডেশনে বাধা দেয়। যা হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।
হৃদরোগ প্রতিরোধে যেসব নিয়ম-কানুন আপনাকে সাহায্য করবে তা হল:
– পরিমিত আহার গ্রহণ করুন। রিচ ফুড, ভাজা খাবার, কোমল পানীয় এড়িয়ে চলার অভ্যাস গড়তে হবে।
– প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শাক-সবজি আর ফলমূল রাখুন।
– খাবারের পর পরই শুয়ে পড়বেন না।
– ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন।
– প্রচুর পানি পান করুন।
– খাবারের সঙ্গে কাঁচা লবণ খাবেন না।
– ধূমপান, জর্দা, খয়ের, সাদাপাতা ইত্যাদি খাওয়া থেকে বিরত খাকুন।
– ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখুন।
– প্রচুর হাঁটুন। মনে রাখবেন- হাঁটাই হচ্ছে সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম।
– হালকা শরীরচর্চায় রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হবে। মাংসপেশি শিথিল করার অভ্যাস করতে পারেন। প্রথমে মুখ, তারপর ঘাড়, কাঁধ—এভাবে মাথা থেকে পা পর্যন্ত।
– পছন্দের গান শুনুন। যা টেনশন কমাতে সাহায্য করবে। যোগব্যায়ামও এক্ষেত্রে দারুন উপকারী।
মন্তব্য চালু নেই