যুদ্ধাপরাধীর ছেলের দম্ভোক্তি দুঃখজনক : অ্যাটর্নি জেনারেল
মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ছেলের দেওয়া বক্তব্যকে দম্ভোক্তি ও অশালীন বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে কামারুজ্জামানের ছেলের সংবাদ সম্মেলনের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ কথা বলেন।
মাহবুবে আলম বলেন, ‘কামারুজ্জামানের ছেলে যে কথাগুলো সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, এসব বক্তব্য তার আইনজীবীরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আদালতে উপস্থাপন করেছেন। এসব বক্তব্য বিবেচনা করেই আদালত তার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। সর্বোচ্চ আদালত সম্পর্কে একজন যুদ্ধাপরাধীর ছেলের দম্ভোক্তি এবং শালীনতাবোধ বর্জিত বক্তব্য দুঃখজনক।’ এ ধরনের বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে সংবাদ সম্মেলনে কামারুজ্জামানের ছেলে বলেন, ‘আমার বাবা কামারুজ্জামানকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি কখনো সোহাগপুর যাননি। এমনকি রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা ফরমাল চার্জেও সোহাগপুর গণহত্যার সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন, এমন অভিযোগ করা হয়নি।’ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের রায়কে তিনি ন্যায়ভ্রষ্ট রায় বলে উল্লেখ করেন।
কামারুজ্জামানের ছেলের বক্তব্য আদালতের নজরে আনবেন কি না, এ প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, ‘অনেক সময় মানুষ পাগলের প্রলাপ বকে। সব পাগলকে তো আর আদালতের সামনে নিয়ে যাওয়া যায় না। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের ব্যাপারে ক্ষোভ থাকলে তার প্রকাশ এভাবে হওয়া উচিত না। বিশেষ করে ন্যায়ভ্রষ্ট কথাটা তাকে কে শিখিয়ে দিয়েছে, আমি জানি না। এটার সম্পূর্ণ অর্থ জেনেই বলা উচিত।’
এ ধরনের বক্তব্য আদালত অবমাননাকর বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রায় কার্যকরের বিধান সম্পর্কে মাহবুবে আলম বলেন, ‘আমি আগাগোড়া যে কথা বলেছি, কাদের মোল্লার ব্যাপারেও সে কথা বলেছি। আমার বক্তব্য থেকে কোনো বিচ্যুতি হয়নি। আমার বক্তব্যগুলোকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি সব সময় বলেছি, রিভিউ চলবে না। সংবিধান পড়ে আমি যা বুঝেছি, এটা আমার বক্তব্য।’
‘আমি বলেছি, সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েও এটা কার্যকর করা যায়। এর আগেও আমার মতে আদালত থেকে সংক্ষিপ্ত আদেশ গেছে। যদিও সেটা সাঈদীর ব্যাপারে,’ বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
মাহবুবে আলম বলেন, ‘সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড থেকে যখন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়ে গেল, সেটা ট্রাইব্যুনালকে সংক্ষিপ্ত আদেশের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। কাজেই সংক্ষিপ্ত আদেশে করা যাবে। ট্রাইব্যুনালকে জানালে ট্রাইব্যুনাল ডেথ ওয়ারেন্ট আদেশ করতে পারে, আমার এই বক্তব্য আপিল বিভাগ এখন পর্যন্ত কোনো সংক্ষিপ্ত আদেশ দেননি। এতে আমি বুঝে নিচ্ছি, তারা পুরো রায়ই হয়তো দেবেন।’
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দণ্ড কার্যাকর হবে ২০(৩) ধারা মতে। সরকারের নির্দেশ অনুসারে। কাজেই সরকার যেভাবে সময় প্রদান করবে সেইভাবেই কার্যকর হবে।’
মন্তব্য চালু নেই