যশোরের খবর (৭/৭/১৪)
## যশোরে গৃহবধূকে পাচারেরঅভিযোগে মামলা
যশোর অফিস: যশোরে তরিকুল ইসলাম নামের এক পাষান্ডু স্বামী তার স্ত্রী নাজমা বেগমকে পাচার করার অভিযোগে সে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। সে যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়া হাটবিলা গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে। আসামিরা হচ্ছে স্বামী তরিকুল ইসলাম ও দেবর জসিম উদ্দিন। আদালতের নির্দেশে রবিবার কোতোয়ালি মডেল থানায় নিয়মিত এজাহার হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছে।
জানা যায় নাজমা বেগমের সাথে কয়েক বছর আগে তরিকুল ইসলামের সাথে তার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে তরিকুল এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করতো। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেয়ার হুমকিও দিতো। ২/৩ মাস আগে ছেলেসহ নাজমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। গত ১৬ জুন তরিকুল ও তার ভাই জসিম তাদের বাড়িতে যায়। তাকে বাড়ি (নড়াইল) নিয়ে যাওয়ার নাম করে একটি প্রাইভেটকারে উঠায়। পরে তাকে নড়াইলে নিয়ে না গিয়ে বেনাপোল সীমান্তের দিকে নিয়ে যায়। সীমান্তের কাছাকাছি পৌছালে তিনি বুঝতে পারেন তাকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিপদ বুঝতে পেরে তিনি চিৎকার দিলে তরিকুল ও জসিম পালিয়ে যায়। পরে তিনি অন্য লোকজনের সহযোগিতায় বাড়িতে ফিরে আসেন।
## যশোরে কলেজ ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগে থানা মামলা
যশোর অফিস: যশোরে এক কলেজ ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে দু’সহদর ও এক দম্পতিকে। আসামিরা হচ্ছে শহরের নীলগঞ্জ সাহাপাড়া ধলাই সিকদারের দু’ছেলে রাসেল ও সোহেল এবং নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চরকালনা গ্রামের ইয়াছিনের ছেলে পিকুল এবং তার স্ত্রী লুনা বেগম। আর মামলাটি করেছেন নীলগ্ঞ্জ সাহাপাড়ার মাহবুবুর রহমান।
যশোর সরকারি সিটি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী তাসমিন রহমান তামিম। সে কলেজে যাতায়াতের পথে রাসেল প্রায় তাকে উত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিতো । এক পর্যায় রাসেল গত ১ জুলাই সন্ধ্যার দিকে তামিমের চাচা আনিসুরের বাড়ি সামনে থেকে তামিমকে জোর করে একটি সাদা রংএর মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেয়।
## যশোরে নিহত যুবলীগ নেতা আলমগীরের বাড়িতে বোমা হামলার ঘটনায় মামলা
যশোর অফিস: যশোর শহরতলীর রামনগর খাঁ পাড়ায় নিহত যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেনের বাড়িতে বোমা হামলা ও পাগলা শাহীনের ভাই রফিকুল ইসলামের উপর হামলার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেয়া হয়েছে কোতোয়ালি মডেল থানায়। এর মধ্যে আলমগীর হোসেনের বাড়িতে বোমা হামলার ঘটনায় মামলা হলেও রফিকুলকে মারপিট করে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়ার ঘটনায় দেয়া অভিযোগটি মামলা হিসাবে রেকর্ড করা হয়নি।
নিহত যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেনের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন রাজু ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। আসামিরা হলো রামনগর পুকুরকুল এলাকার শুকুর মোল্লার ছেলে পাগলা শাহীন, রফিকুল ইসলাম, রামনগর খাঁপাড়া মোহর আলীর ছেলে ইমরান হেসেন, ছমেদ আলীর ছেলে আল-আমিন, কালুর ছেলে অন্তর, শাহাদৎ হোসেন ওরফে বেড়ের ছেলে রবিউল ইসলাম, মৃত মোহাম্মদ আলী গাজীর ছেলে রফিকুল ইসলাম, ফারুকের ছেলে মারুফ, আমজাদ হোসেনের ছেলে জাফর, গহের আলীর দু’ছেলে রানা ও পাখি এবং মুড়লী স্কুল পাড়ার মাহফুজ হোসেন।
দায়েরকৃত এজাহারে বলা হয়েছে, তার ভাইয়ের মামলা তদন্তের জন্য পুলিশকে সহযোগিতা করে আসছেন। এই সংবাদ আসামিদের কাছে পৌছানোর পর তারা তাকে হত্যা কারার পরিকল্পনা করে। গত ৪ জুলাই রাত আনু মানিক ১২ টার দিকে আসামিরা অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে তার বাড়ির সামনে আসে এবং নাম ধরে ডাকতে থাকে। তিনি বাড়ি থেকে না বেরুলে আসামিরা তার বাড়ির মধ্যে ৮/১০টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। যাওয়ার সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ফের হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এদিকে সন্ত্রাসী হামলায় আহত রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া বেগম ৭ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়াল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আসামিরা হলো রামনগর খাঁ পাড়া এলাকার শাহজাহান মাস্টারের ছেলে আলাউদ্দিন মুকুল, নিজাম উদ্দিনের ছেলে নাছির উদ্দিন, গোলাম মোস্তফার ছেলে জাহিদ হোসেন, মোসলেম উদ্দিনের ছেলে লাইফ, হেকমত সরদারের ছেলে আব্দুর রহিম, জাহিদের ছেলে নিরু এবং আব্দুল ওহাবের ছেলে কবির হোসেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা চলে আসছিল। গত ৪ জুলাই দিবাগত রাত ১ টার দিকে আসামিরা অস্ত্র, বোমা, লাঠি সোটা নিয়ে বাড়িতে ঢোকে। এরপর তারা পুলিশ পরিচয় দিলে রফিকুল ইসলাম ঘর থেকে বের হয়। ঘর থকে বের হওয়ার সাথে সাথে আসামিরা তাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। এতে তার দু’ পা ও হাত ভেঙ্গে যায়। পরে তারা ঘরে ঢুকে লুটপাট চালায়। আসামিরা ঘরের মধ্যে থেকে ব্যবসার কাজে রাখা ৭০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে তারা অন্যান্য মালামাল ভাংচুর করে। এ সময় রফিকের বোন ঠেকাতে গেলে তাকেও শ্লীলতাহানী করে সন্ত্রাসীরা। যাওয়ার সময় উঠানে রাখা বিচালী গাদায় আগুন লাগিয়ে দেয়।
## যশোরে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ : ২০১৫ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নের মডেল হবে
যশোর অফিস: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেছেন, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নের মডেল হবে। ২০২১ সালে বাংলাদেশের জনগণের আয় হবে ১৫০০ ডলার। আর এতে করে দেশ মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এজন্য বর্তমান সরকার কর্মসংস্থানের জন্য কর্মক্ষেত্রগুলো উন্মুক্ত করে দিয়েছে। বর্তমান সরকার গত ৫ বছরে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। তিনি বলেন, দেশের বৃহৎ মৎস্য পল্লী যশোরের চাঁচড়ায় একটি উপকেন্দ্র করা হবে। এখানকার রেনুপোনা উৎপাদনকারীদের জন্য একটি আধুনিক সেলস সেন্টার নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের পুরাতন মাছগুলো অরজিনালভাবে টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে বর্তমান সরকার কাজ করছে।
মন্ত্রী রবিবার দুপুরে যশোরের চাঁচড়া বাজার মোড়ে মৎস্য চাষিদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। যশোরের জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য, যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রমজান আলী প্রমুখ।
মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার। এ সরকার কৃষিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়েছে। যশোরের মৎস্যচাষিদের জন্য সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
## যশোরে জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকদের মানববন্ধন
যশোর অফিস: যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলসের শ্রমিক কর্মচারীসহ স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আজ রবিবার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। মিল দুটিকে রাষ্ট্রায়ত্ত খাত থেকে ব্যক্তি মালিকানায় দেবার ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে তারা এ মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে।
জেজেআই শ্রমিক ইউনিয়ন (সিবিএ)-এর সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ মল্লিক জানান, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত শ্রমিক-কর্মচারীসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন। মানববন্ধন অভয়নগরের শেষ থেকে কার্পেটিং মিলের সামনে দিয়ে ঘোড়াবটতলা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
তিনি বলেন, কর্মসূচিতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ অংশ নেন। মানববন্ধন চলাকালে সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তৃতা করেন সিবিএ সভাপতি হাসান উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ মল্লিক, সহ-সম্পাদক আইয়ুব আলী, ইসরাইল সরদার প্রমুখ। বক্তারা অবিলম্বে সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারসহ শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবিসমূহ মেনে নেবার আহ্বান জানান।
## যশোরে বীজধান কালোবাজারে বিক্রির চেষ্টা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ॥ ভবিষ্যত নিয়ে নানা প্রশ্ন
যশোর অফিস: যশোরে বীজধান কালোবাজারে বিক্রির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের আটকের ব্যাপারে একপ্রকার মুখে কুলুপ এটে রয়েছে। হাইকোর্ট ওইসব আসামিদের জামিন বাতিল করলেও পুলিশ কেন তাদেরকে আটক করছে না সে ব্যাপারে স্থানীয় লোকজনে নানা প্রশ্ন তুলেছে। সেই সাথে ওই মামলার ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর সদর ফাঁড়ির টিএসাই রফিকুল ইসলাম গত ১ জুন রাতে যশোর শহরের ঝুমঝুমপুর বিএডিএসির গোডাউন এলাকা থেকে যশোর ট ১১-২৮৬৬ নম্বর ধারী একটি ট্রাক আটক করে। এসময় ট্রাক থেকে বিএডিসির গোডাউন থেকে উত্তোলিত ২ হাজার বস্তা বীজ ধান উদ্ধার করে। বীজ ধানগুলো সিলেটে কালোবাজারে অতি উচ্চ মূল্যে বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছিল। এ ঘটনায় টিএসআই রফিকুল ইসলাম ৬জনকে আসামি করে যশোর কোতয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৪। তারিখ: ৩.০৬.২০১৪। মামলার আসামিরা হলো, সিলেটের গোয়ালা বাজারের চাষী বীজঘরের মালিক রেনু মিয়া, যশোর শহরের নড়াইল রোডের মৃত. শুকুর আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান ওরফে দুলু, নড়াইলের নড়াগাতি থানার বড়দিয়া গ্রামের শান্তিময় লস্কারের ছেলে নিরঞ্জন লস্কার, যশোর সদরের হামিদপুর গ্রামের শেখ জহুর আলীর ছেলে কামরুল ইসলাম, নিরঞ্জনের স্ত্রী অঞ্জলী, ও হাফিজুর রহমান দুলুর স্ত্রী রেহানা। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় যশোর কোতয়ালি মডেল থানার ওসি তদন্ত রফিকুল ইসলামকে। তিনি মামলায় জব্দ তালিকায় উল্লেখিত বীজধান গুলো আদালতের নির্দেশকে অমান্য করে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে পাচারকারীদের দিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া ওই মামলার আসামিরা মহামান্য হাইকোর্ট থেকে প্রথমে জামিন নেয়। পরবর্তীতে হাইকোর্টের ১৬নং আদালত তাদের জামিল বাতিল করে বলে আদালতের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু কোতয়ালি থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি তদন্ত রফিকুল ইসলাম তাদেরকে আটকের কোন চেষ্টা করছে না। অথচ,স্থানীয় লোকজন বলছেন, আসামিরা সবাই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে না। আসামিদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে তাদেরকে আটক করছে না এমন দাবি স্থানীয়দের।
এদিকে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বীজ কালোবাজারের বিক্রির অভিযোগে দায়েরকৃত মামলাটি চার্জশীট থেকে সকল আসামিদের বাদ দেয়ার সকল প্রকার চেষ্টা সম্পন্ন করেছেন। মামলাটি ভবিষ্যৎ নিয়ে স্থানীয়রা নানা প্রশ্ন তুলেছেন। বিষয়টি যশোর পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। কোতয়ালি থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্যও ওই মামলার ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে, অথচ তাদেরকে আটকের কোন চেষ্টা করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে ওসি তদন্ত রফিকুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ ছিল। তবে, তার সহকর্মীরা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
মন্তব্য চালু নেই