যত বড় ফণা তত বেশি পয়েন্ট
বর্ষবরণ উপলক্ষে ঝিনাইদহে ঐতিহ্যবাহী ‘ঝাপান খেলা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বরে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। ঝাপান খেলা দেখতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো দর্শক হাজির হন। ঢাক-ঢোলের বাদন আর নাচ গানে সাপুড়েরা দর্শকদের মন ভরিয়ে তোলেন।
কয়েকজন সাপুড়ে জানান, তারা বিভিন্ন স্থানে ঝাপান খেলায় অংশ নেন। মনসা ও নাগের জন্ম, দেবতার তুষ্টি, স্বামী ভক্তি কাহিনী সম্বলিত আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী গানের নাম ঝাপান গান। বেহুলা লখিন্দারের জীবন বাঁচাতে দেবপুরীতে পৌঁছে সাপের সঙ্গে নেচে গেয়ে স্বর্গের দেবতাদের খুশি করে।
দেবতাদের অনুরোধে মনসা লখিন্দরসহ চাঁদের অন্য সন্তানদের জীবন ফিরিয়ে দেয়। বেহুলা সবকিছু নিয়ে বাড়ি ফেরে। হাজারো দর্শকের ভিড়ে শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বর যেন কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সাপুড়েকে নিজে নাচতে হয় আর সাপও তার সঙ্গে হেলে দুলে নাচে। কোন তন্ত্র মন্ত্র নেই এ খেলাতে। নানা অঙ্গ ভঙ্গি করে সাপকে ফনা তুলে দীর্ঘক্ষণ রাখতে হয় মঞ্চে। যার সাপ যত বেশি উচুঁ হয়ে বেশি সময় মঞ্চে থাকতে পারে সেই সাপুড়ে বেশি পয়েন্ট পাবেন।
শৈলকুপা থেকে আসা সাপুড়ে সবুজ এবং ঝিনাইদহের ওস্তাদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটা আমাদের বাপ দাদার পৈত্রিক পেশা। আমার আগে আমার বাবা তার আগে তার বাবা সকলেই সাপ খেলা দেখিয়ে জীবন ধারন করতেন। আমরা বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত সাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াই।
ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার জানান, কালের বিবর্তনে লোকাচারের অনেক কিছুই এখন হারিয়ে গেছে। কিন্তু ঝাপান গানের কোনো হেরফের হয়নি। সেই মধ্যযুগ হয়ে একবিংশ শতাব্দীর মানুষের কাছে এখনো সমান জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে এটি।
মন্তব্য চালু নেই