ময়মনসিংহে আটক জঙ্গি আল-আমিন ছাত্রলীগের নেতা
ময়মনসিংহ নগরীর বড় কালিবাড়ি এলাকার অ্যাডভোকেট আসিফ আনোয়ার মুরাদের বাসা থেকে আটক ৭ জঙ্গির মধ্যে দিঘিরপাড় গ্রামের ইকবাল হোসেনের ছেলে আল-আমিন ধোবাউড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতা। সে গত এক বছর ধরে বাঘবেড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে। বাঘবেড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ হোসেন মিলন এ তথ্য জানিয়েছেন।খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
তিনি বলেন, ‘আল-আমিন গত এক বছর ধরে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছে। সে নব্য জঙ্গি হিসেবে গ্রেফতার হওয়ায় আমরা শুধু অবাক না, হতবাকও হয়েছি। তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও আওয়ামী লীগ করে বলে এলাকায় খ্যাতি আছে। তার চাচা মোফাখকারুল ইসলাম ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে তিনি যুবলীগকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার জেঠাতো ভাই জাকির হোসেন রিয়াদ বর্তমান ছাত্রলীগের একই কমিটির সভাপতি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আল-আমিন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সব ধরনের সভা সমাবেশে অংশ নেয়। সে জঙ্গি হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না।’ তবে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত হওয়ার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
ধোবাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক বলেন, ‘আল-আমিনের পরিবার শুধু না, তার আত্বীয়-স্বজন সবাই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। সে জঙ্গি হিসেবে গ্রেফতার হওয়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছি।’
আল-আমিনের বাবা ইকবাল হোসেন জানান, তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সবাই স্কুল ও কলেজে লেখাপড়া করেছে। আল-আমিন স্থানীয় মুন্সীরহাট হাইস্কুলে ৯ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করার পর সে সার বীজের ব্যবসায় তাকে সহযোগিতা করা শুরু করে।গত ৩ বছর আগে ধোবাউড়া উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ভর্তি হয়ে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ব্যবসায়ীক ব্যাস্ততায় আল-আমিন পরীক্ষা দিতে পারেনি।
তিনি আরও জানান, ২৭ মার্চ আল-আমিন বন্ধুর কাছ থেকে মোটরবাইক বিক্রির পাওনা টাকা আনার জন্য ময়মনসিংহে যায়। পরে আর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। ছেলে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার হয়েছে এটা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। তিনি এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত আলম বলেন, ‘আল-আমিন জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত কিনা এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে সে গ্রামের বাড়িতে বাবার সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত ছিল এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে।’
উল্লেখ্য, সোমবার (৩ এপ্রিল) ময়মনসিংহ নগরীর বড় কালিবাড়ি এলাকার অ্যাডভোকেট আসিফ আনোয়ার মুরাদের বাসায় অভিযান চালিয়ে জিহাদি বই ও ইলেকট্রোনিক সামগ্রীসহ ৭ জঙ্গিকে আটক করে পুলিশ।
আটককৃত জঙ্গিরা হলো- ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের মারফত আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (২৫), ইকবাল হোসেনের ছেলে আল-আমিন (২৫), ধোবাউড়ার দিঘিরপাড়ের আইনুদ্দিনের ছেলে আশিকুর রহমান (১৯), নেত্রকোনা জারিয়ার হাবিবুর রহমানের ছেলে মাসুম আহমেদ (৩০), একই এলাকার বোরহান উদ্দিনের ছেলে শাহ আল হোসেন শামীম (২৭), নেত্রকোনার টেংগাপাড়ার সবুজ মিয়ার ছেলে নাসির উদ্দিন (২৭) ও জারিয়ার শেখ লতিফের ছেলে রোমান মিয়া (২৬)।
মন্তব্য চালু নেই