ম্যাগি নুডলসের বিক্রি কমেছে

ছোট বাচ্চাদের প্রিয় খাবার ম্যাগি। বিভিন্ন টেলিভিশনে ম্যাগির চোখ ধাধানো অ্যাডে বাচ্চাদের নগর কেড়েছে। শুধু তাই নয় টেলিভিশানে বিভিন্ন স্কুলের টিফিনের সময় নিয়ে ম্যাগির অ্যাড তৈরী করা হয়েছে। নুডলসে উচ্চমাত্রার সীসা বিতর্কে রাজশাহী নগরীর বাজারে ম্যাগি নুডলসের বিক্রিতে ধস নেমেছে। ক্রেতাদের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক থাকায় বিক্রেতারা ক্রেতাদের কাছে তা বিক্রি করতে পারছেন না।

এদিকে, অনেক দোকানদার ম্যাগি নুডলস-ই দোকানে রাখছেন না। তার পরিবর্তে রাখছেন অন্য কোম্পানির নুডলস। ম্যাগি নুডলস এর বড় প্যাকেটগুলো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। দাম কমিয়েও ক্রেতা ধরে রাখতে পারছে না ম্যাগি নুডলসের কোম্পানি নেসলে বাংলাদেশ।

নগরীর প্রধান প্রধান বেকারি ও কনফেকশনারি দোকানে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে। অনেক ক্রেতাও ম্যাগি নুডলস নিয়ে তাদের ভীতি ও আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন। গত ১০ দিন থেকে বিশ্বব্যাপী ম্যাগি নুডলসে উচ্চ মাত্রার সীসা রয়েছে বলে বিতর্কের ঝড় ওঠে। ইতিমধ্যে ভারতে এ পণ্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকাসহ অনেক দেশে এ পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে।

যদিও বাংলাদেশে বিএসটিআই ম্যাগি নুডলসে উচ্চ মাত্রার সীসা আছে কি না এখনো জানাতে পারে নি, কিন্তু পত্রপত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন পড়ে নগরীর সচেতন অভিভাবক, ক্রেতারা তাদের সন্তান কিংবা নিজেরা এ খাবার খেতে চাচ্ছেন না। এর পরিবর্তে তারা অন্য কোম্পানির নুডলস কিনছেন।

বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীসা বিতর্কের পর নেসলে বাংলাদেশ ম্যাগি নুডলসের দাম কমিয়ে দিয়েছে। চারটি প্যাকেটে ২৪৮ গ্রাম ম্যাগি নুডলসের পূর্বের দাম ছিলো ৬৬ টাকা। সীসা বিতর্কের পর বর্তমান দাম ৫০ টাকা করা হয়েছে। আটটি প্যাকটের (ওজন ৪৯৬ গ্রাম) ১৩৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১০০ টাকা করা হয়েছে। বড়ো প্যাকেট (১২টা) মিলে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না।

নগরীর নিউমার্কেট এলাকার শুভ কনফেকশনারির মালিক মজনু মিয়া জানান, আগে যে পরিমাণ ম্যাগি ন্যুডলস বিক্রি হতো তার অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনেক ক্রেতা যারা ম্যাগি ন্যুডলস নিয়মিত কিনতেন এখন তারা তা কিনছেন না। দোকানে এসে অন্য পণ্যের খোঁজ করছেন।

তবে বাংলাদেশের বিএসটিআই হচ্ছে দুর্নীতির আখড়া। মাঝে মাঝে দোকানে এসে অভিযান চালায়। খারাপ ভালো যা-ই থাকুক না কেন সব মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে চালিয়ে দেয়। টাকা দিলে আবার ঠিক।

এ ছাড়া সাহেববাজার এলাকার বড় বড় দোকানদারও জানান, সীসা বির্তকের পর বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিশাল বেকারি অ্যান্ড কনফেকশনারির এক বিক্রয়কর্মী জানালেন, বিক্রি অনেক কমে গেছে। আগে যদি দিনে ১০০ প্যাকেট বিক্রি হতো, এখন হয় ৫০টি।

রুচিতা কনফেকশনারির বিক্রয়কর্মী বাবলুও জানালেন একই কথা। তিনি বললেন, বিক্রি অনেক কমে গেছে। আগের মতো নেই।

কাদিরগঞ্জ এলাকায় কয়েকজনের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হচ্ছিলো। তাদের মধ্যে হাসনাইন জুবাইর বললেন, আগেকার মতো খাওয়া হয় না। তবে মাঝে মাঝে খাওয়া হয়। কৌশিক মাহমুদ বললেন, আগে থেকেই আমাদের বাড়িতে ম্যাগি নুডলস খাওয়া হয় না।

উপশহর এলাকার রোকেয়া বানু নামের এক অভিভাবক বললেন, যখন থেকে শুনেছি ম্যাগি নুডলসের মধ্যে সীসা দেওয়া হয়, তখন থেকেই ওটা কেনা বাদ দিয়ে দিয়েছি। বাচ্চাদের অন্য কোম্পানির যে নুডলস পাওয়া যায় তা খেতে দিচ্ছি। বাজারে বিক্রি কমে গেছে একথা মানতে নারাজ ম্যাগি নুডলসের ডিলার মেসার্স এক নম্বর গদির মালিক বারিক। তিনি বলেন, বিক্রি আগের মতোই হচ্ছে।

ম্যাগি নুডলসের জেলা বিপণন ব্যবস্থাপক জুয়েল বলেন, বিক্রি ক্ষেত্রে বাজারে কিছুটা তো প্রভাব পড়েছেই। এই প্রভাব পড়েছে ভারতীয় টিভি চ্যানেল দেখার কারণে। সমস্যা তো ভারতে, বাংলাদেশে নই। আমাদের দেশে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই।



মন্তব্য চালু নেই