মোবারকের ফাঁসির আদেশ
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রাক্তন আওয়ামী লীগ নেতা মোবারক হোসেনেকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
রায় ঘোষণাকালে আসামিপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম,তারিকুল ইসলাম ও মোবারকের ছেলে আসাদুল্লাহ ও নজিবুল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর হায়দার আলী, জেয়াদ আল মালুম, তুরিন আফরোজ, শাহিদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল রোববার মোবারকের মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়।
গত ২ জুন উভয়পক্ষের চূড়ান্ত যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষামাণ রাখা হয়। ওই দিন আদালতে মোবারকের পক্ষে চূড়ান্ত যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর শাহিদুর রহমান।
এর আগে ১৯ মে প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান আসামি মোবারকের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগের বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করে শেষ করেন।
এ মামলায় আসামি মোবারক হোসেন নিজে ও তার বড় ছেলে মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ সাফাই সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেয়।
গত বছরের ২০ মে মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছে। তারা হলেন মামলার আইও শ্যামল চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা দারুল ইসলাম, শহীদ আব্দুল খালেকের মেয়ে খোদেজা বেগম ও ছেলে রফিকুল ইসলাম, মো. খাদেম হোসেন খান, আলী আকবর, মো. আব্দুল মালেক, মুক্তিযোদ্ধা ননী গোপাল মল্লিক, আব্দুস সামাদ, শহীদ জায়া ভানু বিবি, আব্দুল হামিদ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুলের সুপারিনটেনডেন্ট চমন সিকান্দার জুলকারনাইন। গত ২৫ নভেম্বর প্রসিকিউশন পক্ষে সাক্ষ্যগ্রহন ও সাক্ষিকে আসামিপক্ষের জেরা শেষ হয়।
গত বছরের ১২ মার্চ মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। গত বছরের ১৬ মে সূচনা বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।
মোবারকের বিরুদ্ধে ১০৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, অপহরণ, আটক ও নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী ৪ ধরনের অপরাধে ৫টি অভিযোগে গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।
মোবারক হোসেনের পরিচয় সম্পর্কে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার নয়াদিল গ্রামের সাদত আলীর ছেলে। তার রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, মোবারক হোসেন স্বাধীনতার পর জামায়াতের রুকন ছিলেন। পরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তবে মোবারক হোসেন তার সাক্ষ্যে দাবি করেন তিনি সব সময়ই আওয়ামী লীগ করতেন। এখনও আওয়ামী লীগেই আছেন। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রতিহিংসামূলক।
মন্তব্য চালু নেই