‘দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে তামাশা করা হচ্ছে’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমের দেশের সাধারণ মানুষকে সর্বস্বান্ত করা হচ্ছে। জনগণের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা করা হচ্ছে। সেবাদানকারিরা মানুষকে ঠকাচ্ছে। এর মাধ্যমে বিদেশিরা লাভবান হচ্ছেন। কিভাবে এটিকে ব্যাংকিং সিস্টেমের আওতায় আনা যায়, তা নিয়ে ভেবে দেখা জরুরি।

বৃহস্পতিবার(৯ ফেব্রুয়ারি) এনবিআর আয়োজিত সারা দেশের উপ-কর কমিশনার সম্মলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ফরাসউদ্দিন বলেন, দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে তামাশা করা হচ্ছে। এখানে ১০০টাকা স্থানান্তর করতে গ্রাহককে প্রায় দুই টাকা বা ১ টাকা ৮৬ পয়সা খরচ করতে হচ্ছে। যেখানে ব্যাংকিং সিস্টেমে খরচ হয় মাত্র ৪০ পয়সা। বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে ভাবতে হবে।

অনেকে কৃষিকে বাণিজ্যিক রূপ দিয়েছে। এছাড়া ভূমিকর, মিষ্টি ও ওষুধের দোকানের ব্যবসার ওপর কর আরোপের চিন্তার সময় এসেছে। কৃষি খাতে কর আরোপ করার সময় এসেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এনবিআরকে আধুনিক ও সম্পূর্ণ করবান্ধব পরিস্থিতি সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়ে ফরাসউদ্দিন বলেন, এখানে কেউ ছোট-বড় নয়। যিনি কর দিচ্ছেন, তিনি দেশ গড়ার জন্য কর দিচ্ছেন। এটা বোঝাতে হবে। ব্যাংক হিসাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রয়োজন না হলে কোনও গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব এনবিআরের দেখা উচিত নয়। শুধু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেই গ্রাহকের হিসাব খতিয়ে দেখা যেতে পারে। কারণ এটা মানুষের আমানত, তা রক্ষা করতে হবে।

এডিআরকে গতিশীল করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, মামলায় এনবিআরের প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা জড়িত রয়েছে। এডিআর গতিশীল হলে এখান থেকে অর্ধেক টাকা আদায় হবে, বাজেটের কিছু অংশ হলেও পূরণ হবে।’ তিনি কর্মকর্তাদের সম্মানীর ওপর কর আদায়, ব্যাংক একাউন্টধারীদের ই-টিআইএন বাধ্যতামূলক করা, মেইল অর্ডার ব্যবস্থাপনায় করারোপ, তামাকে উচ্চহারে করারোপ, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর নজরদারি, এনবিআরের অটোমেশন ব্যবস্থা জোরদার, আন্ডার ইনভয়েস ও ওভার ইনভয়েস বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, ওষুধ বিক্রিতে ভ্যাট আদায়ের আহ্বান জানান ।

রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকার কর কমিশনার আলমগীর হোসেন।

সম্মেলনে অর্থমন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কমিশনার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই