মে মাসে ভোটার তালিকা হালনাগাদ

দেশব্যাপী ৫১৩ উপজেলায় তিন ধাপে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম ধাপে ১৪৯ উপজেলায়, দ্বিতীয় ধাপে ১৭১ এবং তৃতীয় ধাপে ১৯৩ উপজেলায় চলবে এই কাজ।

বৃহস্পতিবার জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব ইসি সচিবালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রস্তাবে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরুর কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবে পরীক্ষামূলক (পাইলট) প্রকল্প ছাড়াই হালনাগাদ কাজ শুরুর সুপারিশ করা হয়েছে।

সুপারিশে বলা হয়, নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের মধ্য দিয়ে। এ জন্য সমতল এলাকার তথ্য সংগ্রহকারীরা পাবেন ভোটার প্রতি ১০ টাকা। পাশাপাশি, পাহাড়ি ও দুর্গম এলাকার তথ্য সংগ্রহকারীরা ওই কাজের জন্য পাবেন ১২ টাকা। এছাড়াও ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা ভোটার প্রতি ১৫ টাকা এবং দুর্গম ও পাহাড়ি এলাকার সংশ্লিষ্টরা এই কাজের জন্য ২০ টাকা করে পাবেন। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

আইন অনুযায়ী প্রতি বছর ২ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ১৮ বছরে পদার্পণকারীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ রয়েছে। তবে কোনো বছরই সঠিক সময়ে কাজটি হয়নি। এবারও নির্ধারিত সময়ের ৪ মাস পরে কাজটি করার পরিকল্পনা হয়েছে।

২০১২ সালের ১০ মার্চ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়। ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। সে সময়ে ৭০ লাখ ভোটার তালিকাভুক্ত হয়। তাদের নিয়ে মোট ভোটার সংখ্যা ৯ কোটি ২১ লাখ ২৯ হাজার ৮৫২জন। এবারও তালিকায় অনুরূপ সংখ্যক ভোটার অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে মনে করছেন ইসি কর্মকর্তারা।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় হালনাগাদ সম্পর্কে মুখ খুলতে নারাজ কমিশন সংশ্লিষ্টরা।

ভোটার প্রকল্পের একজন সিনিয়র পরামর্শক নাম প্রকাশ না করার শর্তে শুক্রবার বলেন, মধ্য মে থেকে ভোটার হালনাগাদের কাজ শুরুর লক্ষ্যে একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। সেখানে তিন ধাপে কাজটি করার প্রস্তাব করা হয়। এটা বৃহস্পতিবার কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভোটার দেখভালের দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ উপ-সচিব মিহির সরোয়ার মোর্শেদ বলেন, ভোটার হালনাগাদ করার কাজটি কবে থেকে শুরু হবে সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।

এদিকে ভোটার প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, প্রতি বছরের শুরুতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে এবার দশম জাতীয় সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনের কারণে কাজটি করতে বিলম্ব হয়েছে।

ভোটার হালনাগাদ করার জন্য পুরো প্রকল্পটি প্রথমে কমিশনে অনুমোদন হতে হবে। সিইসি ও প্রকল্পের মহাপরিচালক দেশে ফিরে এলে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদিত হবে। এর পর শুরু হবে এর আনুষ্ঠানিকতা। শুরুতেই ভোটারদের মধ্যে জনসচেতনতা বাড়াতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন, মাইকে প্রচার, উদ্বুদ্ধকরণ লিফলেট, পোস্টার ও ফেস্টুন প্রদর্শন করা হবে। তথ্য সংগ্রহ করতে স্থানীয় শিক্ষকদের নিযোগ দেয়া হবে। সংগৃহীত তথ্য কম্পিউটারে এন্ট্রি করতে নিয়োগ দেয়া হবে দক্ষ অপারেটরদের। সব ঠিক থাকলে জুনের শুরুতেই মূল কাজে হাত দিতে পারবে কমিশন।

প্রকল্পের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, হালনাগাদের কাজটি দুটি ভাগে হয়। প্রথম ভাগে, নিযুক্ত লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা সেগুলো একটি ডাটাবেজে লিপিবদ্ধ করেন। পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে এসে নতুন ভোটাররা ছবি তুলবেন যা তাদের তথ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ ডাটারূপে ভোটার তালিকা আকারে প্রকাশ করা হবে।



মন্তব্য করুন