মেয়েদের জোরপূর্বক বিয়েতে শীর্ষে পাকিস্তান; আছে বাংলাদেশও

পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বরাবরই নারী অধিকারের কোনো বালাই নেই। প্রতিদিন ঘটে অসংখ্য নির্মম নির্যাতন এবং অনার কিলিংয়ের ঘটনা। এবার মেয়েদের জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় শীর্ষস্থানে উঠল দেশটি। ব্রিটেনের একটি সংস্থার জরীপে উঠে এসেছে এই তথ্য। অনলাইন এবং হেল্পলাইন নাম্বারে প্রাপ্ত কলের ভিত্তিতে এই জরীপ পরিচালনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। জরীপে দেখা গেছে, গত বছর মোট ৬১২টি সাহায্যের আবেদন এসেছে শুধু পাকিস্তান থেকে।

ব্রিটেন ফোর্সড ম্যারেজ ইউনিট (এফএমইউ) নামের ওই সংস্থাটি হেল্পলাইন এবং ইমেইল সার্ভিসের মাধ্যমে গত বছর ১৪২৮টি ঘটনা রেকর্ড করেছে। যা হয়তো মূল সংখ্যার একটি ক্ষুদ্রতম অংশ। কিন্তু এই সংখ্যাটি থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেয়েদের ওপর বল প্রয়োগ করার বিষয়টি সম্পর্কে অনুমান করা যায়। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২২০। অর্থাৎ জোরপূর্বক বিয়ের ঘটনা বেড়েই চলছে।

মোট ৯০টি দেশের ওপর এই জরীপ পরিচালিত হলেও ঘটনাগুলোর বেশিরভাগই দক্ষিণ এশীয় দেশসমূহের। এই তালিকায় বাংলাদেশের নামও আছে। বাংলাদেশে গত বছর ১২১টি জোরপূর্বক বিয়ের তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া ভারতে ৭৯, সোমালিয়া ৪৭, আফগানিস্তান ৩৯ এবং সৌদি আরব থেকে এমন ১৬টি ঘটনার কথা জানা গেছে। ব্রিটেনে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে এমন ঘটনার সংখ্যা ১৫৭টি। আরও ভয়াবহ তথ্য হলো, ঘটনার শিকার ২৫ শতাংশ মেয়ের বয়স ১৬ বছরের নীচে। বাকী ভিকটিমদের বয়স ১৮ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে।

সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা অনিতা প্রেম বলেছেন, “জোরপূর্বক বিয়ের সংখ্যার বৃদ্ধি দেখে আমরা বিস্মিত হয়েছি। আমরা এখন বিশ্ববাসীকে আরও বেশি বেশি তথ্য দিতে উদ্বুগ্ধ করছি। যাতে নারীদের ওপর এই অন্যায় বন্ধ করা সম্ভব হয়। আশার বিষয় হলো, মানুষ আস্তে আস্তে বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পারছে। ”

সংস্থাটির প্রচারকর্মী জসবিন্দর সাংহিরা বলেছেন, কম বয়সী মেয়েদের ওপর যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধেও কাজ করে থাকে এফএমইউ। ভয়াবহ তথ্য হলো, কম বয়সে অধিকাংশ মেয়েই তাদের নিকটাত্বীয়দের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। মুখ খুললে উল্টো নির্যাতিত মেয়েটির ওপর দোষ চাপানো হয়। জসবিন্দর নিজেও টিনএজ বয়সে এই ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। পরে তিনি পালিয়ে রক্ষা পান।



মন্তব্য চালু নেই